পর্নোতারকাকে ঘুষের মামলায় দণ্ড হিসেবে ‘শর্তহীন মুক্তি’ পেলেন ট্রাম্প
Published: 10th, January 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রে পর্নোতারকাকে ঘুষ দেওয়ার তথ্য গোপনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ব্যতিক্রমী দণ্ড দিয়েছেন আদালত। তাঁকে কারাদণ্ড বা জরিমানা নয়; বরং ‘শর্তহীন মুক্তি’ দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার নিউইয়র্কের বিচারক হুয়ান মারচান এ দণ্ড ঘোষণা করেন।
২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় বসতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। পর্নোতারকাকে ঘুষের মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের আইনে সর্বোচ্চ চার বছর কারাদণ্ডের সাজা হতে পারত তাঁর। শর্তহীন মুক্তি হলো এমন একটি পদক্ষেপ, যেখানে আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে বিচারকের রায় বহাল থাকবে, তবে তাঁর ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা বা বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে না।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে করা ওই মামলায় বলা হয়েছিল, সাবেক পর্নোতারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক হয়েছিল ট্রাম্পের। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ওই সম্পর্কের কথা গোপন রাখতে স্টর্মিকে ঘুষ দিয়েছিলেন তিনি। ঘুষের তথ্য আবার নিজের ব্যবসায়িক নথিপত্রে উল্লেখ করেননি ট্রাম্প। এ মামলায় গত বছরের মে মাসে দোষী সাব্যস্ত হন তিনি।
ট্রাম্পকে আজ বিচারক হুয়ান মারচান যে দণ্ড দিয়েছেন, তা যুক্তরাষ্ট্রের বিচারিক ইতিহাসে বিরল বলা চলে। দণ্ড ঘোষণার সময় মারচান বলেন, আগে কখনো এই আদালতকে এতটা অনন্য ও উল্লেখযোগ্য পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়নি। দেশের সর্বোচ্চ পদধারী ব্যক্তির ওপর হস্তক্ষেপ না করে আইনগতভাবে একমাত্র যে দণ্ড দেওয়া যায়, তা হলো শর্তহীন মুক্তি।
আজকের দণ্ড ঘোষণার সময় নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের আদালতে ভার্চুয়্যালি উপস্থিত ছিলেন ট্রাম্প। শর্তহীন মুক্তি পাওয়ার আগে তিনি বলেন, ‘এটি একটি ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। আমি মনে করি, এটা নিউইয়র্ক ও নিউইয়র্ক আদালত ব্যবস্থার জন্য বিরাট একটি ধাক্কা। আমি যেন নির্বাচনে পরাজিত হই, সে জন্য আমার সুনাম ক্ষুণ্ন করতে এটি (মামলা) করা হয়েছিল।’
ঘুষের মামলায় ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করে দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেছিল তাঁর দল রিপাবলিকান পার্টি। তাঁর আইনজীবীও সাজা ঘোষণা স্থগিত করার আবেদন জানিয়েছিলেন। তবে গত মঙ্গলবার তা খারিজ করে দেন নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সহযোগী বিচারপতি এলেন জেসমার। ট্রাম্প বারবার দাবি করে এসেছেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে তাঁর বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে।
এদিকে আজ সাজা ঘোষণার সময় ম্যানহাটান আদালতের বাইরে ট্রাম্পের নাম লেখা বিশাল এক ব্যানার নিয়ে জড়ো হয়েছিলেন তাঁর সমর্থকেরা। সেখানে ছোটখাটো জমায়েত করেছিলেন ট্রাম্পবিরোধী ব্যক্তিরাও। তাঁদের হাতে ‘ট্রাম্প দোষী’ লেখা ব্যানার ছিল।
এর আগে ৬ জানুয়ারি ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ঠিক চার বছর আগে একই দিনে একটি কেলেঙ্কারি ঘটিয়েছিলেন তিনি। ২০২০ সালের নির্বাচনের পর বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরুদ্ধে পরাজয় মেনে নেননি তিনি। সে বছরের ৬ জানুয়ারি বাইডেনকে স্বীকৃতি দেওয়ার দিন তাঁর আহ্বানে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে হামলা চালিয়েছিলেন তাঁর সমর্থকেরা। ওই ঘটনায় করা মামলা থেকে ট্রাম্পকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো বিশেষ ফিউশন খাবার উপস্থাপনা
মানজু রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এক ব্যতিক্রমধর্মী খাবার আয়োজন, যেখানে দেশি স্বাদের সাথে ছিল আন্তর্জাতিক রান্নার কৌশল ও উপকরণ। আয়োজনে ঐতিহ্য ও আধুনিকতা একসূত্রে গাঁথা হয়েছে।
সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, এ আয়োজনের মূল আকর্ষণ ছিলেন আন্তর্জাতিকভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রন্ধনশিল্পী ইনারা জামাল, যিনি ফুড স্টাডিজে নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর এবং ইনস্টিটিউট অব কালিনারি এডুকেশন, নিউইয়র্ক থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।
ইনারা জামাল বলেন, ‘খাবার শুধু স্বাদের বিষয় নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক অনুষঙ্গ। আমি চাই বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারকে ভিন্ন দেশের উপকরণ ও কৌশলের সঙ্গে মিশিয়ে বিশ্বদরবারে নতুন রূপে উপস্থাপন করতে। সৃজনশীল উদ্ভাবনের মাধ্যমে বাংলাদেশি খাবারকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরা। একইসঙ্গে, তার লক্ষ্য বাংলাদেশের খাদ্যসংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে গবেষণার আলোয় তুলে ধরা, যেন এই সমৃদ্ধ উত্তরাধিকার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষিত থাকে। খাবারে তিনি সবসময় প্রাধান্য দেন প্রাকৃতিক ভেষজ উপাদান এবং টেকসই উপস্থাপনাকে।
এই আয়োজনকে আরও রঙিন করে তোলে রন্ধনশিল্পী মালিহার বাহারি পরিবেশনা, যেখানে দেশি উপাদান ব্যবহার করে তৈরি করা হয় নানান স্বাদের সুস্বাদু খাবার।
আয়োজকরা জানান, এই আয়োজনের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশি খাদ্যসংস্কৃতিকে আধুনিক উপস্থাপনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরা এবং ভোজনরসিকদের সামনে এক নতুন স্বাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে আসা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা খাবারের স্বাদ, গন্ধ ও পরিবেশনায় মুগ্ধতা প্রকাশ করেন। এমন আয়োজনের ধারাবাহিকতা রক্ষার ওপর জোর দেন।