জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রদলের তিন নেতাকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সংগঠনের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাফিউর রহমান নাফি এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন।
জবি শাখা ছাত্রদলের ওই নেতারা হলেন- যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন সরদার, রাশেদ বিন হাকিম ও ওমর ফারুক।
আরো পড়ুন:
ঢাবিতে ছিন্নমূল মানুষের মাঝে ছাত্রদল নেতার ইফতার বিতরণ
ছাত্রদলের অভিযোগ
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানকে একক সম্পত্তি বানানোর চেষ্টা চলছে
নোটিশে বলা হয়েছে, দায়িত্বশীল পদে থাকার পরও তারা সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার ব্যাখ্যা আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দিতে হবে।
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এই তিন নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় দপ্তরে লিখিত জবাব দিতে হবে। সংগঠনের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কেন্দ্রীয় কমিটি কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
ঢাকা/হাসান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ছ ত রদল র
এছাড়াও পড়ুন:
রেকর্ড এলোমেলো করে বুক চিতিয়ে লড়াই আয়ারল্যান্ডের, সিরিজ বাংলাদেশ
সাধ্যের সবকুটু দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে গেল আয়ারল্যান্ড। টপ ও মিডল অর্ডারে যা কমতি ছিল, লোয়ার অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা তা পুষিয়ে দিল চোখের পলকে, চমকে দিয়ে। জয়ের জন্য ৪ উইকেটের অপেক্ষায় ছিল বাংলাদেশ। ৫৯.৩ ওভার ব্যাটিং করে স্বাগতিক শিবিরে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল আয়ারল্যান্ড।
চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞা, দৃঢ়চেতা মনোবল, বুক চিতিয়ে লড়াই ও হার না মানা মাসকিতায় বাংলাদেশকে কঠিন সময় দিল তারা। মিরপুরের রেকর্ড বুক এলোমেলো করলো মাটি কামড়ে পড়ে থাকা ব্যাটিংয়ে। ২২ গজে তাদের রক্ষণাত্মক ও আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে তরতাজা হয়ে উঠল ম্যাচের প্রাণ। তাতে শের-ই-বাংলায় চতুর্থ দিনে দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিংয়ে ম্যাচ একঘেয়ে হলো না। সমানে সমান লড়াইয়ে শেষ হাসিটা বাংলাদেশ হারলেও আয়ারল্যান্ড নিশ্চিতভাবেই মন জয় করে নিয়েছে ক্রিকেটপ্রেমিদের।
আরো পড়ুন:
২১৭ রানের জয়ে আয়ারল্যান্ড হোয়াইটওয়াশ
জয়ের সুবাতাস পাচ্ছে বাংলাদেশ, তিন বছর পর মিরপুর টেস্ট পঞ্চম দিনে
২১৭ রানের বিশাল জয়ে বাংলাদেশ সিলেটের পর ঢাকা টেস্টও জিতে নিল। ৫০৯ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে চতুর্থ ইনিংসে আয়ারল্যান্ড অলআউট ২৯১ রানে। ৭১ রানের অপরাজিত থেকে কার্টিস ক্যাম্পার যখন সাজঘরে ফেরেন দাঁড়িয়ে তাকে সম্মান জানান সমর্থকরা। মাঠেই এগিয়ে গিয়ে তাকে স্বান্তনা দেন শততম টেস্ট খেলা মুশফিকুর রহিম। কথা বলতে দেখা যায় বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকেও।
জয় এমনিতেই বাংলাদেশের নাগালে ছিল। কিন্তু সেই জয়কে বিলম্বিত করলো আয়ারল্যান্ডের লেজের ব্যাটসম্যানরা। ২০২২ সালের পর মিরপুর টেস্ট পঞ্চম দিনে গড়ানোয় উইকেটের আচরণ কেমন হবে তা ছিল দেখার। স্পিনাররা সাহায্য পাবে বোঝা যাচ্ছিল। তবে বল বাড়তি কোনো টার্ণ বা উচুঁ-নিচু হয়নি। মিরপুরের উইকেট নিয়ে আগে যে ‘অভিযোগ’ ছিল তা ছিল না। স্বাগতিক দল বাড়তি সুবিধা তো পায়নি বরং স্পোর্টিং উইকেটে দুই দল লড়াই করেছে ভালোভাবেই। খানিকটা ঘাস এবং উইকেট না ভাঙায় লড়াইটা জমেছে বেশ। ক্রিকইনফোর ভাষ্যমতে, বল ৪.১ ডিগ্রি টার্ন করেছে যা এই পাঁচ দিনে ছিল সর্বোচ্চ।
তাইজুলের হাত ধরে বাংলাদেশ প্রথম সাফল্য পায় দিনের ১৪তম ওভারে। দ্বিতীয় বলে তাইজুলের আর্ম বল সোজা আঘাত করে ম্যাকব্রাইনের প্যাডে। ফিল্ডারদের জোরালো আবেদনে আম্পায়ার আঙুল তোলেন মুহূর্তেই। ৫৩ বলে ২১ রান করা ম্যাকব্রাইন রিভিউ নিয়ে টিকে থাকার চেষ্টায় ব্যর্থ হলে ফিরতে হয় ড্রেসিংরুমে।
উইকেটে এসে জর্ডান নেইল প্রতি আক্রমণে গিয়ে রান তোলা শুরু করেন। তার খেলা দ্বিতীয় বলেই পেয়ে যান বাউন্ডারি। পরের পাঁচ ওভারে তার ব্যাট থেকে আসে তিন চার ও এক ছক্কা। নেইল আক্রমণ ধরে রাখেন পরবর্তীতেও। তার সঙ্গে যোগ দেন ক্যাম্পারও। দুজন ৮৫ বলে ৪৮ রান যোগ করে বাংলাদেশ শিবিরে ভয় দেখান।
নতুন বল নেওয়ার পর বাংলাদেশের ভাগ্য ফেরে। প্রথম ওভারে তাইজুল এক বাউন্ডারি হজম করে ৫ রান দেন। দ্বিতীয় ওভারে মিরাজ উইকেট উপচে ফেলেন নেইলের। মিরাজের জোরের ওপরের বল ডিফেন্স করতে গিয়ে মিস করে বোল্ড হন ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৩০ রান করা নেইল।
শেষ ২ উইকেট হাতে রেখেও আয়ারল্যান্ড চমক দেখায়। দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে ক্যাম্পার ও হোয়ে দ্বিতীয় সেশনে ম্যাচ টেনে নেন। সকালের সেশনের সময় আরো ২০ মিনিট বাড়িয়ে দিয়েছিলেন আম্পায়াররা। তাতেও কাজ হয়নি। মধ্যাহ্ন বিরতির পরও দুই আইরিশ ব্যাটসম্যান লড়াই চালিয়ে যান। ৯০ মিনিটের ব্যাটিংয়ে প্রবল চাপে পড়ে যান বোলাররা।
সেখানে হাসান মুরাদ দলকে উদ্ধার করেন। পরপর দুই বলে তিনি ফেরান হোয়ে ও হামফ্রিজকে। তাতে ম্যাচটা শেষ হয়ে যায় মুহূর্তেই। ২৫৯ বলে ৭১ রান করে ক্যাম্পার অপরাজিত থাকেন উইকেটের আরেক প্রান্তে। ৪টি চার ও ২ ছক্কা তার দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে।
ম্যাচ বাঁচাতে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া আয়ারল্যান্ড বেশ কিছু রেকর্ডও গড়েছে। মিরপুরে চতুর্থ ইনিংসে অতিথি দল হিসেবে সবচেয়ে বেশি রান করেছে আয়ারল্যান্ড। এর আগে অস্ট্রেলিয়া ২০১৭ সালে ২৪৪ রান করেছিল। আয়ারল্যান্ডের আজকের রান ২৯১। সবচেয়ে বেশি ওভার খেলাতেও আয়ারল্যান্ড এগিয়ে। আয়ারল্যান্ড চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং করেছে ১১৩.৩ ওভার। এর আগে জিম্বাবুয়ে ব্যাটিং করেছিল ৮৩.১ ওভার।
ব্যক্তিগত রেকর্ডে উজ্জ্বল ক্যাম্পার। ৭১ রানের ইনিংসটি খেলতে ক্যাম্পার সবচেয়ে বেশি ২৫৯ বল খেলেছেন। এর আগে সাকিব আল হাসান ২০০৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২১২ বল খেলেছিলেন। উইকেটে টিকে থাকার রেকর্ডও ভেঙেছেন এই আইরিশ ব্যাটসম্যান। ৩৬১ মিনিট ক্রিজে ছিলেন তিনি। সাকিব আল হাসান ২৮৭ মিনিট ক্রিজে কাটিয়ে এতো দিন রেকর্ডটি নিজের কাছে রেখেছিলেন।
মুশফিকুর রহিমের শততম টেস্টে জয় উপহার দিয়েছেন সতীর্থরা। মুশফিকুর সেঞ্চুরি (১০৬ ও ৫৩*) করে পেয়েছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। যা মুশফিকের অষ্টম ম্যান অব দ্য ম্যাচ। ১৩ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা তাইজুল ইসলাম। যা তার তৃতীয় সিরিজ সেরার পুরস্কার।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল