‘শয়তানের নিঃশ্বাসে’ খোয়া গেলো ব্যবসায়ীর লাখ টাকা
Published: 21st, April 2025 GMT
বরগুনায় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশ্যে ১ লাখ টাকা নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ক্রেতা সেজে দোকানে প্রবেশ করে ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ (স্কোপোলামিন) দিয়ে কৌশলে এই টাকা নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মামুন মিয়া।
রবিবার (২০ এপ্রিল) বিকেল ৩ টার দিকে বরগুনা পৌরসভার মনোহারী পট্টি এলাকার মেসার্স হাওলাদার স্টোর নামে একটি জাল ও দড়ি বিক্রির দোকানে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর শহরে ব্যবসায়ীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
ভুক্তভোগীদের থেকে জানা যায়, চক্রের দুই সদস্য ক্রেতা সেজে হাওলাদার স্টোর নামের দোকানটিতে প্রবেশ করে। এ সময় তারা দোকানের মালিক মামুনের সঙ্গে দড়ি কেনার কথা বলে বিভিন্ন ধরনের আলাপচারিতা শুরু করেন। পরে দোকান থেকে ৪০ টাকার দড়িও কিনেন তারা। এরপর চক্রের সদস্যরা পকেট থেকে একটি বিদেশি টাকা বের করে কোন ব্যাংকের মধ্যমে ভাঙানো যাবে তা জানতে চায় মামুন মিয়ার কাছে। এসময়ে পকেট থেকে আরেকটি ১ হাজার টাকার নোট বের করে খুচরো দেওয়ার কথাও বলেন তারা। পরে চক্রের সদস্যদের কথা অনুযায়ী ক্যাশ বাক্সের ড্রয়ার খুলে খুচরা টাকা দেওয়া শুরু করলে মামুন মিয়ার চোখের সামনেই হাত দিয়ে ১ লাখ টাকার একটি বান্ডিল উঠিয়ে নিয়ে দোকান থেকে দ্রুত চলে যায়।
হাওলাদার স্টোরের কর্মচারী মেহেদী হাসান এ বিষয়ে বলেন, “দড়ি কেনার কথা বলে দুই ব্যক্তি দোকানে আসে। আমি অন্য আরেকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলছিলাম এসময়ে। প্রতারক চক্রের ঐ দুজন মালিকের সঙ্গে স্বাভাবিক কথাবার্তার এক ফাঁকে ১ লাখ টাকা নিয়ে চলে যায়। এ ঘটনার দুই এক মিনিট পর টাকা নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে দোকান থেকে বের হয়ে তাদেরকে আর পাওয়া যায়নি।”
মামুন মিয়া বলেন, “দড়ি কেনার উদ্দেশ্য করে দুজন ব্যক্তি আমার দোকানে আসে। এ সময় একটি বিদেশি টাকা দেখিয়ে কোন ব্যাংক থেকে ভাঙাবে এবং কাছাকাছি কোনো ব্যাংক আছে কিনা তা জানতে চায়। পরে তারা পকেট থেকে ১ হাজার টাকার একটি নোট বের করে আমার কাছে খুচরো চায়। তবে খুচরো টাকা দেওয়ার সময় আমার চোখের সামনেই ক্যাশ বাক্স থেকে ১ লাখ টাকার একটি বান্ডিল বের করে নিয়ে চলে যায় তারা। এসময় আমি স্বাভাবিক অবস্থায় ছিলাম না। পরবর্তীতে দুই এক মিনিট পর বুঝতে পেরে ওই দুজনকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করলেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি।”
এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, “ব্যবসায়ীর থেকে টাকা নেওয়ার ঘটনাটি আমরা শুনেছি। তবে ওই ব্যবসায়ী এখন পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ জানাননি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “শয়তানের নিঃশ্বাসের মাধ্যমে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সময় প্রকাশ্যে আসেনা। যখন প্রকাশ হয় তখন অপরাধীরা পালিয়ে যায়। বিশেষ করে অন্য জেলা থেকে এ সব চক্রের সদস্যরা এসে অপরাধ সংঘটিত করে দ্রুত চলে যায়। তবে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে দ্রুত সময়ের মধ্যে পুলিশকে জানালে অপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে সহজ হয়।”
ঢাকা/ইমরান/টিপু
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস য় ব র কর সদস য অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
আড়াইহাজার থানায় বিএনপির নেতার বিরুদ্ধে আ’ লীগ নেতার অভিযোগ, সংঘর্ষের আশঙ্কা
আড়াইহাজারে স্থানীয় এক বিএনপির নেতার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতা ও মাদক ব্যবসায়ী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ কথিত আওয়ামী লীগের নেতা স্থানীয় মাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমান উল্যাহ আমানের ছোট ভাই ছানাউল্যাহ ওরফে ছানা।
তিনি ৫ আগস্টের পর এলাকা থেকে ‘গা’ দেন। পরে সুযোগ বুঝে তিনি মাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাছুম শিকারীর হাত ধরে বিএনপির একাংশের সঙ্গে শখতা গড়ে তোলেন।
বর্তমানে তিনি স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করাসহ এলাকায় ফের মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছেন। স্থানীয় বিএনপির বড় একটি অংশের অভিযোগ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি অর্থের বিনিময়ে আওয়ামী লীগের দোসরকে এলাকায় পুর্নভাসন করেছেন। এতে বিএনপির কর্মী-সমর্থকসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র পতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
এনিয়ে যেকোন সময় এলাকায় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। স্থানীয়রা আরো জানান, আওয়ামী লীগের আমলে ২০১৮ সালে বিএনপির ক্লিনইমেজের নেতা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আমির হোসেনের বাড়িতে হামলার ভাংচুর করে কোটি টাকার সম্পদ লুট করে নিয়ে যায় ছানার নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী।
এসময় বাধা দিতে গেছে সন্ত্রাসীরা আমির হোসেনের ৩ মাসের শিশু সাইফকে জবাই করার চেষ্টা করে। এসময় পুরো এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। এঘটনায় ওইদিন পুলিশ থানায় মামলা পর্যন্ত নেই। সম্প্রতি, মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়াসহ ছানাকে এলাকা থেকে স্থানীয়রা ধাওয়া দিলে সে পড়ে গিয়ে আঘাতপ্রাপ্ত হন।
এ ঘটনার পর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাছুম শিকারীর ইন্ধনে ছানা আড়াইহাজার থানায় আমির হোসেনকে সহ স্থানীয় বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা ও সাজানো মামলা করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন।
এনিয়ে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। আমির হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের ১৭টি বছর আমিসহ আমার পরিবারের সদস্যদের নির্যাতন করা সহ কয়েকবার বাড়িঘর লুটপাট কররে ছানা নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা। এখন দলের লোকজনের ছত্রছায়ায় আওয়ামী লীগের দোসর ছানা এলাকায় দাপড়ে বেড়াচ্ছেন।
এটা খুবই দুঃখজনক। আমি একজন বিএনপির কর্মী হিসাবে দাবী করছি ছানাকে দ্রুত আাইনের আওতায় আনা হোক। এদিকে আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার নাসিরউদ্দিন বলেন, ছানা আওয়ামী লীগের নেতা, সেটা আমার জানা ছিলনা। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।