রাজশাহী শহরের শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান চত্বরে (রেলগেট) গত চার বছরে শব্দের মাত্রা বেড়েছে ৭ ডেসিবেলের বেশি। ২০২২ সালে এই চত্বরে শব্দের মাত্রা ছিল ৯০ ডেসিবেল। আর আজ শনিবার একই স্থানে শব্দের মাত্রা মেপে পাওয়া গেছে ৯৭ দশমিক ২ ডেসিবেল।

আজ স্থানীয় বরেন্দ্র পরিবেশ উন্নয়ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই পরীক্ষা পরিচালনা করেছে। পরিবেশবাদী এ সংগঠনটি চার বছর ধরে রাজশাহী শহরের কয়েকটি জায়গায় শব্দদূষণের মাত্রা পরীক্ষা করে আসছে। তবে এবার শুধু পরীক্ষা করা হয়েছে এই চত্বরে। শব্দের মাত্রা পরীক্ষার সময় তারা শব্দদূষণ সম্পর্কে জনসচেতনতামূলক প্রচারও চালিয়েছে।

আজ দুপুরে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহর পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গত চার বছরে এই চত্বরে শব্দ মাপার পরিসংখ্যানও পাঠানো হয়েছে। এতে দেখা গেছে, ২০২২ ও ২০২৩ সালে রেলগেট এলাকায় শব্দের মাত্রা পরীক্ষায় ৯০ ডেসিবেল পর্যন্ত পাওয়া যায়। এরপরের বছর ২০২৪ সালে এখানে পাওয়া যায় ৯৬ দশমিক ৩ ডেসিবেল। এবার একই স্থানে পাওয়া গেল ৯৭ দশমিক ২ ডেসিবেল।

পরীক্ষায় নেতৃত্ব দেন প্রকৌশলী জাকির হোসেন খান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অলি আহমেদ, রকি খান চৌধুরী, শামসুর রাহমান, কলি আহমেদ, ইশিতা, রুমানা আহমেদ, মতিউর রহমান, বাপ্পি দাস, আবু বক্কর সিদ্দিকি প্রমুখ।

বাংলাদেশ শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০০৬ অনুযায়ী, শব্দের সর্বোচ্চ ঘনমাত্রার ওপর নির্ভর করে বিভিন্ন এলাকাকে পাঁচটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। নীরব এলাকা, আবাসিক এলাকা, মিশ্র এলাকা, বাণিজ্যিক এলাকা ও শিল্প এলাকা। এই বিধিমালায় বলা হয়েছে, আবাসিক এলাকায় রাত ৯টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত শব্দের মাত্রা ৪৫ ডেসিবেল এবং দিনের অন্য সময়ে ৫৫ ডেসিবেল অতিক্রম করতে পারবে না। বাণিজ্যিক এলাকায় রাতে ৬০ ও দিনে ৭০ ডেসিবেল থাকতে হবে। এতে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস–আদালতের আশপাশে ১০০ মিটার পর্যন্ত নীরব এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এসব এলাকায় রাতে ৪০ ও দিনে ৫০ ডেসিবেল শব্দমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। শিল্প এলাকায় এ মাত্রা রাতে ৭০ ও দিনে ৭৫ ডেসিবেল এবং মিশ্র এলাকায় রাতে ৫০ ও দিনে ৬০ ডেসিবেল থাকার কথা বলা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শব্দের তীব্রতা নিয়ে জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি ইউএনইপির (২০২২) প্রকাশ করা ‘ফ্রন্টিয়ারস ২০২২: নয়েজ, ব্লেজেস অ্যান্ড মিসম্যাচেস’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে ঢাকাকে বিশ্বের প্রথম ও রাজশাহীকে বিশ্বের চতুর্থ শব্দদূষণকারী শহর হিসেবে দেখানো হয়। যেখানে রাজশাহীতে শব্দের পরিমাণ দেখানো হয় ১০৩ ডেসিবেল। এই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তখন থেকে প্রতিবছর শব্দের মাত্রা পরিমাপ করে আসছে।

সংগঠনটি আরও বলছে, শহরের রেলগেটের মতো জনবহুল স্থানে দিনের বেলা সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত একই স্থানে শব্দের মান নির্ণয় করা হয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় আজ সেখানে শব্দের মাত্রা পরীক্ষা করা হয়।

সংগঠনটির সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, শহরের ব্যস্ততম মিশ্র এলাকা রেলগেট। এখানে আবাসিক হোটেলও আছে। আজ তাঁরা গড় শব্দের মাত্রা পেয়েছেন ৯৭ দশমিক ২ ডেসিবেল। মানুষের শ্রবণসীমা অনুযায়ী এটা দিনের বেলায় সর্বোচ্চ থাকার কথা ছিল ৬০ ডেসিবেল। এটি খুবই আশঙ্কাজনক। তিনি আরও বলেন, শব্দের মাত্রা মাপার সময় ওই এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ছিল। দেখা গেছে, এই যানবাহনসহ অন্য যানবাহন অযথা হর্ন বাজাচ্ছে। অটোরিকশাগুলোয় ভেঁপু হর্ন বাধ্যতামূলক করা উচিত।

জাকির হোসেন খান পরামর্শ দিয়ে বলেন, শব্দদূষণের প্রভাব শুধু মানুষের ওপর নয়, প্রতিটি পশুপাখির ওপর পড়ে। গাছ শব্দের প্রতিবন্ধকতা হিসেবে যথেষ্ট কার্যকর। আমের শহর রাজশাহীতে আম ও জামজাতীয় ফলের গাছ, নিম ও শজনে–জাতীয় উপকারী গাছ লাগানো যেতে পারে, যেগুলো বড় হলে শব্দ ও বায়ুদূষণ রোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। শজনেগাছ বায়ু থেকে কার্বন ডাই–অক্সাইড গ্রহণ করে অক্সিজেন নির্গমনে কার্যকর গাছগুলোর মধ্যে অন্যতম।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এল ক য় র ত চ র বছর স গঠনট পর ক ষ ক এল ক দশম ক শহর র

এছাড়াও পড়ুন:

তেজগাঁও কলেজে শিক্ষার্থী হত্যার প্রতিবাদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল

রাজধানীর তেজগাঁও কলেজের শিক্ষার্থী সাকিবুল হাসান রানার হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে এ বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি বাহাদুর শাহ পার্ক, শাঁখারীবাজার, জজকোর্ট পার হয়ে রায়সাহেব মোড় প্রদক্ষিণ করে বিশ্বজিৎ চত্বরে এসে শেষ হয়। সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

সমাবেশে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘ছাত্রদলের খুনিরা আমার ভাইকে খুন করেছে। আশা করেছিলাম, ৫ আগস্টের পর এ বাংলাদেশে আর খুনের রাজনীতি চলবে না। কিন্তু আবার সেই খুন চাঁদাবাজির রাজনীতি চালু করেছে।’

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইয়ামিন সাদাত বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দ্রুত সময়ের মধ্যে এ খুনের সুষ্ঠু বিচার করার আহ্বান জানাই।’

একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রিফাত বলেন, ‘আমরা এই হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই। আজ তেজগাঁও কলেজে হয়েছে, কাল অন্য ক্যাম্পাসে হবে কিংবা আমাদের ক্যাম্পাসে হবে। আমরা চাই না ৫ আগস্ট–পরবর্তী বাংলাদেশে এ রকমের হত্যার রাজনীতি আর ফিরে আসুক।’

তেজগাঁও কলেজ ছাত্রাবাসে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত হয়ে উচ্চমাধ্যমিক ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাকিবুল হাসান রানা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

৬ ডিসেম্বর রাতে তেজগাঁও কলেজের ছাত্রাবাসে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত হওয়ার চার দিন পর বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাকিবুল হাসান রানা (১৮)। তিনি কলেজের উচ্চমাধ্যমিক বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ওসমান হাদির ওপর হামলা নির্বাচন বানচালের হীন চেষ্টা: অধিকার
  • ওসমান হাদির ওপর হামলায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি নাগরিক কোয়ালিশনের
  • হৃদ্‌রোগীদের জন্য সুখবর, চমেক হাসপাতালে নতুন ক্যাথল্যাব
  • রাশিয়া ৫ বছরের মধ্যে হামলা চালাতে পারে, ন্যাটোপ্রধানের সতর্কবার্তা
  • বাড়ল স্বর্ণের দাম, শুক্রবার থেকে কার্যকর
  • সাকিবুল হত্যার বিচার দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
  • টানা ১২ বছর ধরে সভাপতি, বিধি ভেঙে আবারও প্রার্থী
  • তেজগাঁও কলেজে শিক্ষার্থী হত্যার প্রতিবাদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল