দেশের মানুষ রাজনীতিতে কোনোভাবেই গুম, খুন, দুর্নীতি-লুটপাট, টাকা পাচার ও বর্বর বন্দিশালা আয়নাঘরের প্রতিষ্ঠাতা পতিত পলাতক পরাজিত অপশক্তির পুনর্বাসন চায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শনিবার বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। 

তারেক রহমান বলেন, বিএনপিসহ বাংলাদেশের পক্ষের প্রতিটি রাজনৈতিক দল জনগণের এই দাবির সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত। যারা সংবিধান বার বার লঙ্ঘন করেছে, দেশে অবৈধ সংসদ এবং সরকার গঠন করেছে, যারা সংবিধান লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। 

কেউ যেন ভোটের অধিকার কুক্ষিগত করার ষড়যন্ত্র করতে না পারে সেজন্য জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান । 

তিনি বলেন, সেজন্য জনগণের দায়বদ্ধ একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে বিএনপি দেশে এমন একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে চায় যে সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে।

তারেক রহমান বলেন, নিরাপদ ও মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্বের এখন পর্যন্ত গণতন্ত্রই একমাত্র উত্তম বিকল্প। গণতান্ত্রিক বিশ্বে যারা গণতন্ত্রবিরোধী তারা গণতন্ত্রের অপশক্তি হিসেবে চিহ্নিত। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়ে বাংলাদেশে বিগত দশক ধরে যারা অথবা যে দলটি ফ্যাসিবাদী শাসন-শোষণ চালিয়েছিল দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণের কাছে তারা অপশক্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

তিনি বলেন, আমরা যদি ’৭১ সাল, ৭৫ সালের ৭ নভেম্বর, ’৯০ সাল এবং সর্বশেষ ’২৪ সালে বীর জনতার রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের যে ধারাবাহিকতা দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ বর্তমান দুইটা বিষয়ে সম্পূর্ণভাবে একমত। তা হলো বাংলাদেশকে যাতে আর কেউ ভবিষ্যতে তবরদার রাষ্ট্রে পরিণত করতে না পারে এবং গণতন্ত্রবিরোধী পলাতক অপশক্তি যাতে আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। এই দুইটা বিষয়ে জনগণ আর কোনো কোনো আপস করতে রাজি নয়।

ফ্যাসিবাদী শাসনের পতনের দুঃশাসন ও দুষ্কর্মসমূহের চিত্র এবং জুলাই-আগস্টের ঘটনাবলী বেশি করে প্রকাশের জন্য বাংলাদেশের গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

ফ্যাসিবাদী দেড় দশকে কক্সবাজারের রামু, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর, রংপুর, গাইবান্ধা, সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর বাড়ি-ঘর-উপাসনালয় ঘটনাবলী নিয়েও গণমাধ্যমের কাছে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের অনুরোধ করে তিনি বলেন, কারা এসব ঘটনার নেপথ্যে ছিল, এসব নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে আগামী দিনে আর কেউ দেশের ধর্মী জনগোষ্ঠীকে নিয়ে দলীয় রাজনীতিতে ব্যবহারের সাহস করবে না।

তিনি বলেন, আগামী দিনে বিএনপি জনগণের রায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে ফ্যাসিবাদী দেড় দশকে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সঙ্গে যে অপ্রীতিকর, অনাহত ঘটনা ঘটেছে তার নেপথ্য কারণ খুঁজে বের করতে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ের একটি সর্বদলীয়, সর্বধর্মীয় ‘নাগরিক তদন্ত কমিশন' গঠন করার পরিকল্পনা রয়েছে।

তারেক রহমান বলেন, দলমত ধর্ম নির্বিশেষে দেশে প্রতিটি নাগরিকের প্রথম এবং প্রধান গর্বিত পরিচয় হচ্ছে, আমরা বাংলাদেশি। নিজ নিজ ধর্মীয় বিশ্বাস বা সাংস্কৃতিক স্বকীয়তা বজায় রেখেই বাংলাদেশি হিসেবে প্রতিটি নাগরিক রাষ্ট্র  ও সমাজের সমান এবং ন্যায্য অধিকার ভোগ করবে এটি বিএনপির নীতি।

বিএনপির ধর্মবিষয়ক সহসম্পাদক দীপেন দেওয়ানের সভাপতিত্বে ও সুভাষ চন্দ্রা চাকমার সঞ্চালনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.

খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, সালাহউদ্দিন আহমদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, বিজন কান্তি সরকার, লন্ডন বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক, কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক দিলীপ কুমার বড়ুয়া এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মধ্যে মৈত্রী দেওয়ান, সমীর দেওয়ান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন ব এনপ গণত ন ত র ক ত র ক রহম ন ন ব এনপ র গণতন ত র জনগণ র অপশক ত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ইকুয়েডরে গণভোটে ‘না’ এগিয়ে, বিদেশি সামরিক ঘাঁটিতে সায় নেই মানুষের

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরের জনগণ গণভোটে ‘না’ ভোট বেশি দিয়েছেন। দেশটির মাটিতে বিদেশি সামরিক ঘাঁটি পুনঃস্থাপনে জনগণের সম্মতি আছে কি না, সেটি যাচাই করতে এ গণভোটের আয়োজন করা হয়।

রোববার (১৬ নভেম্বর) ইকুয়েডরে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। ভোট গণনা পুরোপুরি শেষ হয়নি। তবে এক–তৃতীয়াংশের বেশি গণনা শেষে দেখা গেছে, বিদেশি সামরিক ঘাঁটি পুনঃস্থাপনের প্রশ্নে ৬০ শতাংশ ভোটার ‘না’ ভোট দিয়েছেন।

গতকালের গণভোটে ভোটারদের সামনে আরেকটি প্রস্তাব ছিল। সেটি হলো বিদ্যমান সংবিধানের পুনর্লিখন। এতেও ‘না’ ভোট এগিয়ে আছে। ৬১ শতাংশ ভোটার প্রস্তাবটি খারিজ করে দিতে ‘না’ ভোট দিয়েছেন। যদিও এ বিষয়ে এখনো ৩৬ শতাংশ ভোট গণনা হয়েছে।

২০০৮ সালে ইকুয়েডর নিজেদের সীমানায় বিদেশি সামরিক ঘাঁটি নিষিদ্ধ করেছিল।

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলের ‘মান্তা’ বিমানঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর উপস্থিতি ফেরানোর পথ খুলে যেত। একসময় ওয়াশিংটনের মাদকবিরোধী অভিযানের মূলকেন্দ্র ছিল এ ঘাঁটি।

সম্ভাব্য এ পরাজয় ইকুয়েডরের তরুণ প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল নোবোয়ার জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে ধরা হচ্ছে। তিনি দুটি প্রস্তাবের পক্ষেই শক্ত অবস্থান নিয়েছিলেন।

প্রেসিডেন্ট নোবোয়া বলেছিলেন, বিদেশি সহযোগিতা এবং দেশের মাটিতে বিদেশি সামরিক ঘাঁটির উপস্থিতি ‘সংগঠিত অপরাধের’ বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কেন্দ্রস্থল হিসেবে ভূমিকা রাখবে।

সাবেক বামপন্থী প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরেয়ার অধীন প্রণয়ন করা বর্তমান সংবিধানে দেশের নতুন বাস্তবতার কোনো প্রতিফলন নেই। তাই এটা সংশোধন ও পুনর্লিখন করা দরকার—বলেছিলেন প্রেসিডেন্ট নোবোয়া।

কিন্তু ইকুয়েডরের জনগণ গণভোটে প্রেসিডেন্ট নোবোয়ার এমন অবস্থান খারিজ করার পক্ষে মত দিয়েছেন। অন্তত এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলাফল সেটিই বলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন অ্যাপ উদ্বোধন, ‘নতুন অধ্যায়’ বললেন সিইসি
  • যশোরে জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু সম্মেলন অনুষ্ঠিত
  • দিনের ভোট রাতে করতে রাষ্ট্রের ৮ হাজার কোটি টাকা লুট করেছিলেন শেখ হাসিনা: রিজভী
  • শেখ হাসিনার রায় দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে: গণসংহতি আন্দোলন
  • দেশবাসীকে ধৈর্য, সতর্কতা ও ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান জামায়াত আমিরের
  • রায় প্রত্যাখ্যান আওয়ামী লীগের
  • পদ্মা সেতু ও এক্সপ্রেসওয়েতে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা
  • ইকুয়েডরে গণভোটে ‘না’ এগিয়ে, বিদেশি সামরিক ঘাঁটিতে সায় নেই মানুষের
  • বিভ্রান্তি-হতাশা-অনিশ্চয়তার মধ্যেও নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে: ফখরুল
  • নানা দাবির নামে নির্বাচন ব্যাহত করার চেষ্টা চলছে: মির্জা ফখরুল