বিকেএমইএ নির্বাচনে পূর্ণ প্যানেলে বিজয়ী প্রোগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্স
Published: 10th, May 2025 GMT
দেশের নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) ২০২৫-২৭ সাল মেয়াদি পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে প্রোগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্স পূর্ণ প্যানেলে বিজয়ী হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ নগরের চাষাঢ়ায় অবস্থিত সংগঠনটির কার্যালয়ে আজ শনিবার রাত আটটায় নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান শফিউল্লাহ চৌধুরী। প্রোগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্স প্যানেলের নেতৃত্বে আছেন সংগঠনটির বর্তমান সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।
আজ সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিকেএমইএর রাজধানী ঢাকার বাংলামোটর ও নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ার নিজস্ব কার্যালয়ের দুটি কেন্দ্রে একযোগে বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ৫৭২ জন। এর মধ্যে দুই কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন ৪৩১ জন। ভোট প্রদানের হার ৭৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ। নারায়ণগঞ্জ জোনের ভোটার সংখ্যা ছিল ২৭২। এর মধ্যে ভোট দিয়েছেন ২৩৪ জন। এই জোনে ভোট প্রদানের হার ৮৬ শতাংশ। ঢাকা জোনে ২২৪ ভোটারের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন ১৪০ ভোটার। এই জোনে ভোট পড়েছে ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ। এ ছাড়া চট্টগ্রাম জোনে ভোটার ছিলেন ৭৬ জন। তাঁদের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৫৭ জন বা ৭৫ শতাংশ।
দীর্ঘ এক যুগ পর অনুষ্ঠিত হলো বিকেএমইএর নির্বাচন। এতে ৩৫টি পরিচালক পদের বিপরীতে ৩৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাঁদের মধ্যে ৩৫ জন প্রোগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্স প্যানেলের। এই প্যানেলের নেতৃত্বে আছেন সংগঠনের বর্তমান সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। প্যানেলের বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনজন। তাঁরা হলেন বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক ও ইয়াং ফর এভার টেক্সটাইল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজিব চৌধুরী, জাহিন নিটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.
ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত ব্যক্তিদের মধ্য থেকে পরবর্তী সময়ে বিকেএমইএর সভাপতি, নির্বাহী সভাপতি এবং সাতজন সহসভাপতিসহ নয়জন পরিচালক নির্বাচিত হবেন।
নিরঙ্কুশ জয়লাভের পর প্রোগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্সের দলনেতা মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘উৎসবমুখর পরিবেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটাররা ভোট প্রদান করেছেন। ভোটার উপস্থিতি ছিল সন্তোষজনক। আমরা মনে করি, বিগত দিনে আমাদের কর্মকাণ্ডের কারণে সদস্যরা আমাদের প্রতি অকুণ্ঠ আস্থা প্রদর্শন করেছেন। এই ফলাফল তাঁদের ভালোবাসার প্রতিফলন। আগামী দিনে শুধু নিট সেক্টরের উন্নয়ন নয়, দেশের রপ্তানি বাণিজ্য ও অর্থনেতিক উন্নয়নে সব সংগঠনের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে চাই।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম হ ম মদ
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষার্থীদের উপর অটো চালকদের হামলা, আহত ২০
নারায়ণগঞ্জ শহরে যানজট নিরসনে সড়কে কাজ করা শিক্ষার্থীদের ওপর ব্যাটারিচালিত রিকশা (ইজিবাইক) চালকরা হামলা চালিয়েছে। এ নিয়ে ইজিবাইক চালকদের সাথে সংঘাতে জড়ালে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় ইজিবাইকচালকরা প্রায় দুই ঘণ্টা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড অবরোধ করে রাখেন। তাদের অবরোধে পুরো শহরজুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের চাষাঢ়া ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রবেশ গেটে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, শিক্ষার্থী ও ইজিবাইক চালকদের প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে বিষয়টি সমাধান হয়।
এদিকে আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৯ জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলো- মোঃ আবু সাঈদ (১৯), মারুফ (১৯), আসিফ (৩০), মাহিম (২২), ফয়সাল আহমেদ (২৮), হুমায়ন কবির (২৬), এনামুল হক শান্ত (২৩), শাহীন খন্দকার (২২) ও নুহেল মুন্সী আপন (২২)। তবে আহত ইজিবাইক চালকদের নাম পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সড়কে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করা শিক্ষার্থীরা চাষাড়ায় ঢুকতে বাঁধা দেয় ইজিবাইক চালকদের। এ নিয়ে কথাকাটাকিাটি হয় উভয়ের মধ্যে এক পর্যায়ে ইজিবাইকরা চালকরা সংঘবদ্ধ হয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধ করতে গেলে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ও সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অনেকেই আহত হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ইজিবাইক চলকরা সড়ক অবরোধ করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। ফলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়ে হাজার হাজার যাত্রী সাধারণ। পরে আইনশৃংখলাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এদিকে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, সংঘর্ষের সময় ইজিবাইক চালকদের অনেকেই তাদের গাড়ির সিটের নিচ থেকে লাঠি ও লোহার রড বের করে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়।
ধারণা করা হয়, আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল ইজিবাইক চালকরা যে শিক্ষার্থীদের উপর সুযোগ পেলেই হামলা করবে। কারণ গত এক দেড় মাস ধরেই চাষাড়ায় ইজিবাইক ঢুকতে বাধা দিয়ে আসছিল শিক্ষার্থীরা। এতে ক্ষোভ জমতে থাকে ইজিবাইক চালকদের মধ্যে। আজকে তারা সুযোগটি কাজে লাগিয়েছে।
ওদিকে যানজট নিরসনে কাজ করা শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত বলেন, ‘আমরা এক মাস ধরে শহরের যানজট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছি। চেম্বার অব কমার্স এবং বিকেএমই থেকে আমাদেরকে ট্রাফিক মনিটরিং সেলে দেওয়া হয়। আমাদের দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকেই বড় অটোরিকশাগুলো চাষাঢ়ায় প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।
কিন্তু তারা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চাষাঢ়ায় প্রবেশ করেন। পরে বাধা দিলে তারা আমাদের ওপর ক্ষেপে যান। এবং পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
তবে উজ্জল নামে এক অটোরিকশাচালক জানায়, ‘আমাদের চাষাঢ়া যাওয়া নিষেধ। আমরা নিষেধ উপেক্ষা করে চাষাঢ়া গেছি, এটা আমাদের অপরাধ। কিন্তু তারা আমাদের অটোরিকশার গ্লাস ভেঙে দিয়েছে। গ্লাস ভাঙার কারণ জানতে চাইলে তারা আমাদের ওপর হামলা করেছে। আমাদের অনেককে তারা মারধর করেছে। কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি আছে।’
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে ভালো একটি সমাধানে আসা সম্ভব হয়েছে। আলোচনা সভায় দুই পক্ষই ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় জেলা প্রশাসনের সব সিদ্ধান্ত মানতে একমত হয়েছেন। এ ঘটনায় একটি কমিটি গঠন করা হবে।