বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে স্থায়ী কমিশন গঠনের উদ্যোগ
Published: 11th, May 2025 GMT
নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি ফেরাতে সিন্ডেকটমুক্ত করার দাবি দীর্ঘদিনের। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি চাল, ডাল, ডিম, ভোজ্যতেল, চিনি ইত্যাদি নিত্যপণ্যে সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য নতুন একটি স্থায়ী কমিশন গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রস্তাবের ভিত্তিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ কমিশনের উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারের এ ধরনের উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে ভোক্তাদের সংগঠন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন ‘জাতীয় বাজার স্থিতিশীলতা কমিশন (এনবিএসসি)’ নামের এ কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে। শুধু প্রস্তাব দেয়নি, কমিশন গঠনের একটি রূপরেখাও তৈরি করে দিয়েছে ফাউন্ডেশন। কমিশনটি স্থায়ী করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ রূপরেখার ওপর একটি বৈঠক করেছে গত ২৩ জানুয়ারি। ওই বৈঠকের পর কিছু দিন থেমে ছিল উদ্যোগটি। তবে তাগিদ ছিল জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের দিক থেকে।
এর পরই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত ১৬ মার্চ সম্ভাব্য কমিশনের রূপরেখার ওপর মতামত দিতে চারটি প্রতিষ্ঠানের কাছে চিঠি পাঠায়। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি), বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠানই এ ব্যাপারে তখন মতামত দেয়নি। পরে গত ১০ এপ্রিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আবার প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ বিষয়ে মতামত দেওয়ার বিষয়ে তাগাদা দিয়েছে।
উভয় চিঠিতেই প্রস্তাবিত কমিশনের রূপরেখাটি পর্যালোচনা করে পরিপূর্ণ মতামত দেওয়ার অনুরোধ করা হয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে। চিঠিতে আরও বলা হয়, প্রস্তাবিত জাতীয় বাজার স্থিতিশীলতা কমিশনের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, ক্ষমতা, দায়িত্ব বা কার্যাবলির সঙ্গে তাদের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, ক্ষমতা, দায়িত্ব বা কার্যাবলির দ্বৈততা আছে কিনা, তা পর্যালোচনা করতে হবে।
এ বিষয়ে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান সমকালকে বলেন, ‘আমরা নতুন কমিশন গঠনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মতামত পাওয়ার পর সব পক্ষকে নিয়ে একটি বৈঠক ডাকা হবে। এরপর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
জানতে চাইলে কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসেন সমকালকে বলেন, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের এ ধরনের প্রস্তাবে সরকার যদি সম্মতি দিয়ে থাকে তাহলে এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানায় ক্যাব। তিনি আরও বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়ে অবশ্যই সংস্কার হতে হবে। তবে শুধু একটি কমিশন করে দিলেই হবে না, এ সম্পর্কিত আরও যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেগুলোকে কার্যকরী করতে হবে।
প্রস্তাবিত কমিশনকে ‘জাতীয় উদ্যোগ’ হিসেবে বিবেচনা করেছে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন। তারা বলেছে, দেশের বাজার ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘদিন ধরেই অসংগতিপূর্ণ, অবৈধ সিন্ডিকেট ও মূল্য কারচুপি বিরাজ করছে, যা জনস্বার্থের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। ভোক্তা সুরক্ষায় অবহেলা, বাজারে অস্থিতিশীলতা ও নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। রূপরেখায় বলা হয়েছে, বাজারে স্থিতিশীলতা আনার জন্যই কমিশনটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বাজার ব্যবস্থাপনাকে সুষ্ঠু, কার্যকর ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা। বাজারে মূল্য, সরবরাহ ও চাহিদা সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কিনা, তা নিশ্চিত করবে এ কমিশন। সিন্ডিকেট ও অবৈধ ব্যবসায়িক কার্যক্রম রোধও এ কমিশন করবে।
এতে বলা হয়, কমিশনের একজন চেয়ারম্যান, নির্বাহী পরিচালক ও সদস্য থাকবেন। আর থাকবে পরামর্শক প্যানেল, বাজার বিশ্লেষক দল, আইনি ও আইনানুগ বিষয়ক কমিটি। ভোক্তা সুরক্ষা বিভাগ নামের একটি বিভাগও রাখতে হবে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, আইন বিশেষজ্ঞ, অর্থনীতিবিদ, কৃষিবিদ, ব্যবসায়ী নেতা ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা থাকবেন পরামর্শক কমিটিতে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র প রস ত ব মত মত দ র পর খ ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
‘বউ পেটানো’ অভিনেতার দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন
সৈয়দা আলিজা সুলতানের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেতা ফিরোজ খান। তাদের এই সংসার ভেঙে গেছে। আলিজা অভিযোগ করেছিলেন, তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন ফিরোজ। কেবল তাই নয়, শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ছবিও প্রকাশ করেছিলেন। এরপর তোপের মুখে পড়েন ফিরোজ খান। নেটিজেনদের অনেকে তাকে ‘বউ পেটানো’ অভিনেতার তকমাও দেন।
প্রথম সংসার ভাঙার প্রায় দুই বছর পর ডা. জয়নবের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ফিরোজ খান। এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন ছড়িয়েছে। মূলত, বিনোদনভিত্তিক একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ডা. জয়নবের ইনস্টাগ্রাম পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়। তারপরই শুরু হয় ফিরোজ খানের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে জয়নবের অভিযোগের স্ক্রিনশট।
ডা. জয়নব কথিত এই নোটে বলেন, “আমি আমার সহনসীমার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। অবিরাম মানসিক চাপ ও উদ্বেগে ক্লান্ত। এমন একজন মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে আছি, যে আমাকে বিশ্বাস করে না। আমি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমি এখন ক্লান্ত। প্রতিটি কথোপকথন একটা লড়াইয়ের মতো লাগে, প্রতিটি মতবিরোধ যেন যুদ্ধ। এমন আচরণের শিকার হয়ে আমি ক্লান্ত। আমি যখন তাকে কিছু বলি, সে আমার উপর রাগ ঝাড়ে।”
স্ত্রী জয়নবের সঙ্গে ফিরোজ খান
সুখ স্মৃতিগুলো কষ্টে ঢাকা পড়ে গিয়েছে। এমন মন্তব্য করে জয়নব বলেন, “সত্যি বলতে, আমরা একসঙ্গে যে স্মৃতিগুলো তৈরি করেছিলাম, তা এখন কষ্ট ও আঘাতে ঢাকা পড়ে গেছে। আমি অসংখ্যবার তাকে ক্ষমা করেছি। কিন্তু সেই ক্ষতগুলো কখনো পুরোপুরি সারেনি। বুঝতে পারছি, আমি এক ধরণের মানসিক অস্থিরতার মধ্যে বাস করছি, একটা সম্পর্কে আটকে আছি, যা আমার জীবনের শক্তি শুষে নিচ্ছে। আমি জানি, আমি এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। আমি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কোমলতার যোগ্য। সবকিছু ঠিক আছে—আমি আর এই ভান করতে চাই না।”
ডিভোর্সের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে জয়নব বলেন “এমন বিষাক্ত একটা সম্পর্কের জন্য আমি আমার সুখ ত্যাগ করেছি। আমি এখন নিজের জন্য, নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য দাঁড়াচ্ছি। বেদনা ও কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে, আমি আমার জীবনের এই অধ্যায় (বিবাহিত জীবন) শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ডিভোর্স নিচ্ছি। কারণ আমি জানি, এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। জীবনের নতুন অধ্যায় শুরুর জন্য আমি প্রস্তুত, যেখানে আমাকে মূল্য দেওয়া হবে, সম্মান করা হবে, ভালোবাসা হবে।”
জয়নবের এই ‘ডিভোর্স নোট’ নিয়ে যখন জোর চর্চা চলছে, তখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন ফিরোজ খান। তবে এর আগে ফিরোজ খানের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি পোস্টে দেখা যায়। তাতে জয়নবের বিরুদ্ধে ‘ব্ল্যাকমেইল’ ও ‘মানসিক চাপের’ অভিযোগ তোলেন। যদিও পরবর্তীতে পোস্টটি মুছে ফেলা হয়। পাশাপাশি এই অভিনেতা জানান, তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল।
ডা. জয়নব
তবে সংসার ভাঙার গুঞ্জনে সরাসরি কোনো বক্তব্য দেননি ফিরোজ খান কিংবা তার স্ত্রী ডা. জয়নব। তবে বিনোদনভিত্তিক যে পেজ থেকে জয়নবের ‘ডিভোস নোট’ ছড়ানো হয়েছে, সেই পোস্টে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাতে জয়নব লেখেন, “এই ধরনের পেজগুলো আনফলো করুন অথবা রিপোর্ট করুন। এই ধরনের পেজ থেকে ভুয়া খবর ছড়িয়ে মানুষকে বিরক্ত করা হচ্ছে। সত্যি বলছি, আমি জানি না কীভাবে তারা আমার স্টোরিতে পোস্টটি করার অ্যাকসেস পেয়েছে। এই পোস্ট আমি কখনো করিনি।”
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম স্ত্রী সৈয়দ আলিজা সুলতানের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় ফিরোজ খানের। এ সংসারে সুলতান খান ও ফাতিমা খান নামে দুই সন্তান রয়েছে। বর্তমানে দুই সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে আদালতে মামলা লড়ছেন এই প্রাক্তন দম্পতি। ২০২৪ সালে ডা. জয়নবকে বিয়ে করেন ফিরোজ খান।
ঢাকা/শান্ত