ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা, ভুগছেন সেবাপ্রার্থীরা
Published: 17th, May 2025 GMT
রংপুরের এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করেছেন নিজেকে ভুক্তভোগী দাবি করা ওই ইউপির এক নারী সদস্য। মামলার পর থেকে অন্তত দেড় মাস ধরে ইউনিয়ন পরিষদে যাচ্ছেন না চেয়ারম্যান। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা ভোগান্তিতে পড়েছেন।
যাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে, তিনি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার একটি ইউপির চেয়ারম্যান। তিনি জামায়াতে ইসলামীর ইউনিয়ন কমিটির সহসভাপতি ছিলেন। এ ঘটনার পর তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ইউনিয়ন জামায়াতের আমির ও সেক্রেটারি।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২৮ মার্চ সরকারি বরাদ্দের বিষয়ে আলোচনার কথা বলে রংপুর নগরের একটি ভাড়া বাসায় ওই নারী সদস্যকে ডেকে নেন চেয়ারম্যান। পরে ওই নারীকে ধর্ষণ করা হয়।
ওই নারী অভিযোগ করেন, ঘটনার পর চেয়ারম্যান তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু বিয়ে নিবন্ধনের তাগাদা দিলে তিনি এড়িয়ে চলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা সালিস হয়েছে, কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান বিয়ে করেননি। এরপর ২ মে তিনি রংপুর নগরের কোতোয়ালি থানায় ইউপি চেয়ারম্যান ও তাঁর ব্যক্তিগত সহকারীর নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
মামলার পর আসামিরা প্রকাশ্যে থাকলেও তাঁদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ ওই নারীর। এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমানের ভাষ্য, আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করেও পাওয়া যাচ্ছে না।
বিষয়টি নিয়ে গত বুধবার দুপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়। তাঁর দাবি, ওই নারীকে তিনি বিয়ে করেন এবং পরে তালাক দেন। তবে তাঁর কাছে বিয়ের নিকাহনামা আছে কি না, তা দেখতে চাইলে তিনি দেখাতে পারেননি।
এদিকে ২৯ মার্চ থেকে চেয়ারম্যান না আসায় ইউনিয়ন পরিষদে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। নাগরিক সনদ, জন্ম ও মৃত্যুর সনদসহ বিভিন্ন নাগরিক সেবা পেতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন বলে সেবাগ্রহীতারা জানান। বুধবার ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে ওই চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে তালা ঝুলতে দেখা গেছে। ইউপি সচিব উপজেলায় কাজে গেছেন বলে জানান হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর।
দুপুর ১২টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ২০ থেকে ২৫ নারী–পুরুষকে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। তাঁদের একজন মনিরা বেগম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ছেলে মাজহারুল ইসলামের বিদ্যালয়ের উপবৃত্তির জন্য জন্মসনদের প্রয়োজন। কিন্তু চেয়ারম্যানকে পাচ্ছেন না। চেয়ারম্যান কোথায়, সেটাও জানেন না।
এক ইউপি সদস্য বলেন, চেয়ারম্যানের দাপ্তরিক কাজ ছাড়া নাগরিকত্ব, জন্ম ও মৃত্যু, চারিত্রিক, জাতীয়তা, অবিবাহিত, বিবাহিত, বিধবা ও আইডি কার্ডের ভুল সংশোধনসহ বিভিন্ন ধরনের প্রত্যয়নের প্রয়োজন হয়। কিন্তু চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদে না আসায় জনগণ হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হওয়ায় তিনি ইউনিয়ন পরিষদে যাচ্ছেন না। তাঁর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে নাগরিকদের সেবা দিচ্ছেন।
মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিকাশ চন্দ্র বর্মন প্রথম আলোকে বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতির বিষয়টি তাঁর জানা ছিল না। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ওই ন র
এছাড়াও পড়ুন:
শুঁটকিপল্লির ব্যস্ত সময়
২ / ৮টুকরি থেকে মাছগুলো ঢালা হচ্ছে