সচিবালয়ের অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে ‘মনিটরিং’ ও ‘বাস্তবায়ন’ নামে দুটি কমিটি করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি গঠিত সাত সদস্যের মনিটরিং কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মনিরুল আলমকে। আর পাঁচ সদস্যের বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক গণপূর্ত অধিদপ্তরের ইএম সার্কেল-২-এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো.

কায়কোবাদ।

সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদনের পর এ কমিটি করা হলো। গত মার্চের শেষদিকে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়।

জানা যায়, স্বল্পমেয়াদি কাজ এক থেকে ছয় মাস, মধ্যমেয়াদি ছয় থেকে এক বছর এবং দীর্ঘমেয়াদি কাজ ১২ মাসের বেশি সময়ে করার সুপারিশ রয়েছে প্রতিবেদনে। ‘মনিটরিং’ কমিটি অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সুপারিশের আলোকে বাস্তবায়ন-সংক্রান্ত কমিটির কার্যক্রম দেখভাল করবে। ‘বাস্তবায়ন’ কমিটি প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে সুপারিশ, সচিবালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা-সংক্রান্ত নীতিমালা সংশোধন, পরিমার্জন ও সংযোজন করবে।

তদন্ত কমিটির স্বল্পমেয়াদি সুপারিশে বলা হয়, অগ্নিপ্রতিরোধক উপাদান ছাড়া সচিবালয়ে ইন্টেরিয়রের কাজ করা যাবে না। ফায়ার প্রটেকশন ও ডিটেকশন পদ্ধতি সব ভবনে রাখতে হবে। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি স্বাভাবিকভাবে প্রবেশের ব্যবস্থা এবং সংযোগ করিডোরগুলো ভেঙে উঁচু করতে হবে।

মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সুপারিশের মধ্যে রয়েছে– প্রতিবছর মেইনটেন্যান্স অডিট, বৈদ্যুতিক কাজের জন্য পর্যাপ্ত কর্মী নিয়োগ, ঝুঁকিপূর্ণ কাজ দ্রুত মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ, সচিবালয়ের সব ভবনে বৈদ্যুতিক তার মেরামত, ফ্লোরে হোসপাইপ সিস্টেম কার্যকর ও হোসপাইপে নজেল (তামার বা কপার) নিশ্চিত করা।

জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির সদস্য ইয়াসির আরাফাত সমকালকে বলেন, ‘মার্চের শেষ সপ্তাহে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছি। প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয় কেপিআইভুক্ত হওয়ায় সুপারিশগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা উচিত।’

নবগঠিত ‘মনিটরিং’ কমিটির আহ্বায়ক মনিরুল আলম সমকালকে বলেন, ‘কোন কাজ আগে বাস্তবায়ন করা হবে, তা এখনও জানি না। কারণ এখনও কমিটির কোনো বৈঠক হয়নি। চলতি সপ্তাহের মধ্যে আমরা বসব।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন ত কম ট র মন ত র র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

একজনের অসুস্থতায় আটকা ৪ লাখ শিক্ষকের বেতন, আজ মাউশি ঘেরাওয়ের ঘোষণা

মে মাসের অর্ধেক পার হয়েছে। এপ্রিলের বেতন এখনও পাননি সারাদেশের পৌনে ৫ লাখের বেশি শিক্ষক ও কর্মচারী। এরা সবাই মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার (এমপিও)ভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত। এর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যাচ্ছে, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) এক কর্মকর্তার অসুস্থতার কথা। এমন অবস্থায় আজ মাউশি ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়েছেন ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা।

মাউশি সূত্র জানায়, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রস্তুত করে এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (ইএমআইএস) সেল। এই সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট খন্দকার আজিজুর রহমান অসুস্থ। তাই বেসরকারি শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রস্তুত করা যায়নি।

জানা গেছে, আজিজুর রহমান অসুস্থ। বিকল্প জনবল না থাকায় বেতন বিল তৈরির কাজ সম্পূর্ণ থমকে আছে। ফলে শিক্ষকরা তাদের ড্যাশবোর্ডে প্রয়োজনীয় তথ্য দেখতে পাচ্ছেন না। অনেকের আশঙ্কা, বড় কোনো সংকট ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

সূত্র বলছে, ইএফটি (ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার) পদ্ধতিতে বেতন দেওয়ার জন্য মাউশি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা একাধিক বৈঠক করলেও কার্যকর কোনো সমাধান আসেনি। একজন কর্মকর্তার ওপর নির্ভরশীল এ ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা প্রকট হয়ে উঠেছে।

শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, দেশে অনেক আইটি বিশেষজ্ঞ থাকলেও মাউশি তাদের সাহায্য নিচ্ছে না। মার্চে যারা ইএফটির মাধ্যমে বেতন পেয়েছেন, তাদের মধ্যে কেউ অবসরে গেলে, মারা গেলে বা চাকরি ছাড়লে সফটওয়্যারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেতন স্থগিত হওয়ার কথা। তাহলে অন্যদের বেতন বিলম্বিত হওয়ার কারণ গ্রহণযোগ্য নয়।

বেসরকারি শিক্ষকদের অভিযোগ, সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যথাসময়ে বেতন পেলেও এমপিওভুক্তরা বারবার বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন।

জানা গেছে, এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এক লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী ইএফটির আওতায় আসেন। এর পর ধাপে ধাপে আরও প্রায় দেড় লাখ শিক্ষক ইএফটিতে যুক্ত হন। তবে বহু শিক্ষক এখনও এ ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেননি।

শিক্ষকদের তথ্যভিত্তিক নানা ত্রুটি (এনআইডি, এমপিওশিট, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা জন্মতারিখ ও নামের বানানগত অসংগতি) দূর করা যায়নি। ফলে তাদের বেতন আটকে আছে। কেউ সংশোধনের আবেদন করলেও তা নিষ্পত্তি হয়নি।

ইএমআইএস সেলের প্রোগ্রামার মো. জহির উদ্দিন সমকালকে বলেন, ‘কাজ এখনও শেষ হয়নি। তবে দ্রুত শেষ হবে।’

মাউশির কর্মকর্তারা জানান, কাজ শেষ হলেও শিক্ষকদের বেতন পেতে আরও চার-পাঁচ দিন লাগবে। ফলে এ সপ্তাহে কাজ শেষ না হলে এপ্রিলের বেতন পৌঁছতে পারে মে মাসের শেষ সপ্তাহে।

এই সংকট নিরসনে দ্রুত ও দক্ষ জনবল নিয়োগ এবং আইটি সহযোগিতা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা।

শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) সভাপতি অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ সমকালকে বলেন, একজন কর্মকর্তার অসুস্থতার কারণে পাঁচ লাখ 
শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা বন্ধ থাকতে পারে না। এটি বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীর প্রতি অবহেলা ও ষড়যন্ত্র। ঈদুল আজহার আগে পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতাসহ মে মাসের বেতন না দেওয়ার জন্য এটি ষড়যন্ত্র হতে পারে। 

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আজাদ খান ও পরিচালক (মাধ্যমিক) কে এম এ এম সোহেল সাংবাদিকদের এড়িয়ে চলছেন। গত বৃহস্পতিবার দফায় দফায় কল করলেও তারা ফোন ধরেননি।

আজ মাউশি ঘেরাও

শনিবারের মধ্যে এপ্রিল মাসের বেতন ছাড় না হলে আজ রোববার সকাল ১০টায় মাউশি ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করার দাবিতে পরিষদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি থেকে গতকাল শনিবার এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

কর্মসূচি থেকে শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে ঈদুল আজহার আগে পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতার দাবি জানানো হয়েছে।

অবস্থান কর্মসূচিতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে যেসব শিক্ষক নেতারা অংশ নেন, তারা নানা বৈষম্যের কথা তুলে ধরেন। শিক্ষকরা বলেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রথমে মাধ্যমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করতে হবে। বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ করতে হবে। আর্থিক প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সব বাধা ঘুচিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাত দফা দাবিতে ‘নিজ ব্যানারে’ চবিতে ছাত্রশিবিরের মিছিল
  • হ্যাকার যুদ্ধে ডিডস
  • ভারতীয় পদক্ষেপে সমস্যা হলে আলোচনা করে সমাধান: বাণিজ্য উপদেষ্টা
  • একজনের অসুস্থতায় আটকা ৪ লাখ শিক্ষকের বেতন, আজ মাউশি ঘেরাওয়ের ঘোষণা
  • স্বপ্ন পূরণের পথে ফাহমিদুল
  • দুই বিভাগের টানাপোড়েনে নষ্ট হচ্ছে ১২শ গাছের আম
  • গাজায় না খেয়ে আছে বহু মানুষ: ট্রাম্প
  • গুজব, অপপ্রচার, আতঙ্ক সৃষ্টির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে
  • নারী সংস্কার কমিশনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালালে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান