২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই রান্নার প্রযুক্তি পাবে সবাই
Published: 23rd, May 2025 GMT
দেশের অধিকাংশ পরিবারের রান্নার নির্ভরযোগ্য উৎস কাঠ, খড়কুটো, গোবরসহ নানা ধরনের জৈব জ্বালানি। এ জ্বালানির কারণে ঘরের ভেতরে বায়ুদূষণ ঘটে। তৈরি হয় ক্ষতিকারক ধোঁয়া। এ থেকে বছরে নিঃসৃত হয় প্রায় পাঁচ কোটি টনের বেশি কার্বন। এই দূষণে তৈরি হচ্ছে জলবায়ু সংকট। বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। হিসাব অনুযায়ী, শুধু ঘরোয়া বায়ুদূষণ থেকে বাংলাদেশে বছরে প্রায় ৭০ হাজার মানুষের অকাল মৃত্যু হয়, যাদের বেশির ভাগ নারী ও শিশু।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে কর্মশালায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। এ কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য দেন উন্নয়ন সংস্থা প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর ইশরাত শবনম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো.
উপস্থাপনায় বলা হয়, ২০১৩ সালে দেশের প্রথম পরিচ্ছন্ন রান্নার কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়, যার আওতায় প্রায় ৩০ লাখ উন্নত চুলা বিতরণ হয়। তবে জ্বালানির বৈচিত্র্য, চুলা টেকসই না হওয়া ও সচেতনতার অভাবে সেই পরিকল্পনা তেমন সফলতা পায়নি। পরে সরকার পরিচ্ছন্ন রান্নার জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০২২-৩০ গ্রহণ করে। এর লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের শতভাগ পরিবারে পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ ও টেকসই রান্নার প্রযুক্তি পৌঁছে দেওয়া। অন্তত ৫০ শতাংশ পরিবারে এলপিজি বা বৈদ্যুতিক চুলার ব্যবহার নিশ্চিত করা। ঘরোয়া বায়ুদূষণ অর্ধেক, রান্নার জ্বালানিতে ৩০ শতাংশ দক্ষতা অর্জন এবং বছরে ২০ লাখ টন কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে নাবিদ সাফিউল্লাহ বলেন, এ কর্মপরিকল্পনা শুধু জ্বালানি প্রকল্প নয়, এটি নারীর স্বাস্থ্য, শিশুর নিরাপত্তা এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই এর সফল বাস্তবায়নে সরকারের পাশাপাশি উন্নয়ন অংশীদার, বেসরকারি খাত এবং জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ভালো সিনেমার কারণে নাটকে আমাদের দায়িত্ববোধ বেড়েছে: আরশ
যতটা না বলেছেন তার চেয়ে বেশি করে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। কথার সঙ্গে কাজের মিল রেখে বিরতিহীনভাবে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন। টেলিভিশন ও ইউটিউব নাটকে তাঁর সরব উপস্থিতি। কখনও কমেডি আবার কখনও রোমান্টিক রূপে, আবার কখনও হুট করেই হাজির হচ্ছেন অ্যাকশন অবতারে। নিজের স্বকীয়তা বজায় রেখে এগিয়ে চলছেন আপন গতিতে। নিজেকে গড়তে চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। সেই চেষ্টা এখনও চলমান। বলছি, ছোটপর্দার অভিনেতা আরশ খানের কথা।
কয়েক বছরের অভিনয়জীবনে তাঁর নাটকগুলোর প্রতি দর্শকের যেমন আগ্রহ তৈরি হচ্ছে, ঠিক তেমনি নির্মাতারাও হয়ে উঠছেন আরশকেন্দ্রিক।
গেল ঈদ থেকে শুরু করে জুলাইয়ের প্রথমভাগ পর্যন্ত প্রায় ১৭টি নাটকে দেখা গেছে আরশকে। এগুলোর মধ্যে ‘প্রথম হারালো মন’, ‘পাখি গো নাম ধরে ডাকো’, ‘পাগল প্রেম’, ‘আদরে রেখো’, ‘কখনও কি তোমার হবো’, ‘আমার গার্লফ্রেন্ড’, ‘বেলা শেষে তুমি’, ‘তোমাকেই ছুঁতে চাই’, ‘প্রেম প্রেম লাগে’, ‘হৃদয়ের টানে’, ‘দোষটা কার’, ‘সিম্প্যাথি’, ‘নেমেসিস’, ‘শেওলা ফুল’, ‘কখনও কখনও’, ‘তোমাকেই চাই’, ‘সুখের মতো অসুখ’ ইত্যাদি। সেগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই পেয়েছে দর্শকপ্রিয়তা। মানের দিক বিবেচনায় দর্শকের মন কেড়েছে।
শুক্রবার আসছে মাবরুর রশীদ বান্নাহ পরিচালিত ও আরশ খান অভিনীত নাটক ‘যত্ন’। এরই মধ্যে বেশকিছু নাটকের শুটিংও শেষ করেছেন। সেগুলো সময়মতো মুক্তি পাবে।
নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে এখন বেশ সচেতন তিনি। ভালো অভিনয় ও ভালো কাজের ক্ষুধা দিন দিন বেড়েই চলছে। নতুন কাজের ক্ষেত্রে আরও সচেতন হতে চান। গল্পের সঙ্গে নিজেকে সূক্ষ্মভাবে উপস্থাপন করাটাই এখন তাঁর মূল লক্ষ্য। মাথা উঁচু করে টিকে থাকার মতো কাজ করে যেতে চান।
আরশ বলেন, ‘তারকা হওয়ার চেয়ে ভালো প্রজেক্ট উপহার দিতে চাই। একই বিষয় বারবার তুলে আনতে চাই না। একটা সময় কমেডি করেছি, এরপর রোমান্টিক। সঙ্গে কিছুটা অ্যাকশন। এখন কাজ করতে চান সব ধরনের গল্পে। তবে শর্ত একটাই। ভালো গল্প ও চ্যালেঞ্জিং চরিত্র হতে হবে। কারণ, দর্শক যেন আমার কাজগুলোতে নিজেদের গল্প খুঁজে পান। ব্যতিক্রমী কাজ করলে দর্শক সন্তুষ্ট হয়। সেই সঙ্গে আমার নিজেরও ভালো লাগে।’
অনেক সময় অনেকে বলেন সিনেমার বাজার ভালো হলে নাটকের বাজার পড়ে যায়। এমন কথায় বিশ্বাসী নন এই অভিনেতা। তবে দেশে ভালো সিনেমার কারণে নাটকে নিজেদের দায়িত্ববোধ বেড়েছে বলেও জানালেন তিনি।
তাঁর কথায়, ‘দেশে এখন ভালো সিনেমা হচ্ছে। দর্শকও সিনেমা হলমুখী হচ্ছে। এটিতে নাটকের দর্শক কমছে না বরং আমাদের প্রেশার বেড়েছে। কারণ, ভালো একটি সিনেমা দেখে এসে কেন আমার নাটকটা দেখবে? সেই ভাবনা থেকে আমি চেষ্টা করছি এমন কিছু মৌলিক গল্প-চরিত্রে কাজ করার সেটি সাধারণ মানুষকে কানেক্ট করে। ঈদের পর যেসব নাটকে অভিনয় করেছি। সবক’টিতে ভালো সাড়া পেয়েছি। দর্শক নাটকগুলো সাদরে গ্রহণ করেছে। এখন আরও সচেতনভাবে অভিনয় করতে চাই।’
একসঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে সহশিল্পীর সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন নতুন কিছু নয়। তেমনি এই অভিনেতার সঙ্গে সহশিল্পীর প্রেমের গুঞ্জন উঠেছে একাধিকবার। নতুন করে সুনেরাহ বিনতে কামালে সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
আরশ খান বলেন, ‘এমন গুঞ্জন তো অনেকের সঙ্গে উঠেছে। পরে দেখা গেছে বিষয়টি ভুয়া। তাঁর সঙ্গে সুনেরাহ ভালো অভিনয়শিল্পী। তাঁর সঙ্গে আমার কিছু কাজ হয়েছে। এখনও হচ্ছে। এখানে প্রেম কোথা থেকে এলো সেটিই বুঝলাম না। আমরা শুধু সহকর্মী। একসঙ্গে কাজ করি। এরপর বাড়ি চলে যাই। এখানে প্রেমের কিছু নেই।’
নাটকে অভিনয় দিয়ে নিজেকে পরিপক্ব করতে চান আরশ। নিজেকে সঠিকভাবে ঝালিয়ে আসতে চান বড়পর্দায়। এজন্য সময় নিচ্ছেন, নিজেকে সেইভাবেই প্রস্তুত করছেন।
আরশের কথায়, ‘সময় হলেই সিনেমা করব। কারণ, আমি খুব অল্প সময় হলো ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছি। আমাদের সিনিয়র চঞ্চল চৌধুরী, জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, আফরান নিশো, সিয়াম আহমেদ ভাইসহ আরও যারা আছেন তাদের তুলনায় ইন্ডাস্ট্রিতে আমার টাইম ডিউরেশন কম। অনেক বছর পর আফরান নিশো-সিয়াম আহমেদরা সিনেমার দিকে গেছেন। তারা ভালো কাজ করেছেন বলেই সেই জায়গাতে পৌঁছাতে পেরেছেন। আমি অভিজ্ঞতা বাড়াতে থাকি। আমি কমার্শিয়াল সিনেমাও চাই আবার গল্পনির্ভর সিনেমাও চাই। এজন্য নিজেকে প্রস্তুত করা দরকার বলে আমি মনে করি। সেটিই করে যাচ্ছি।’