‘আমাকে এই আলিম নামের জালেম থেকে আল্লাহর ওয়াস্তে বাঁচান’
Published: 23rd, May 2025 GMT
ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা নাজনীন আক্তার হ্যাপি। প্রায় এক যুগ আগে জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করে আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন।
পরবর্তীতে রুপালি জগত ছেড়ে ইসলামি জীবনযাপন শুরু করেন নাজনীন আক্তার হ্যাপি। বিয়ে করেন মুফতি মোহাম্মদ তালহা নামে একজন মাদরাসা শিক্ষককে। অনেক দিন ধরে দাম্পত্য জীবন ভালো যাচ্ছে না তাদের। কিছুদিন আগে স্বামীর বিরুদ্ধে মারধর, ৯টি বিয়েসহ নানা অভিযোগ তুলেন এই প্রাক্তন অভিনেত্রী। কেবল তাই নয়, বিষয়টি মামলা পর্যন্ত গড়িয়েছে।
বর্তমানে কঠিন সময় পার করছেন নাজনীন আক্তার হ্যাপি। তার ভেরিফায়েড ফেসবুক স্ট্যাটাস তারই ইঙ্গিত বহন করে। শুক্রবার (২৩ মে) হ্যাপি তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এ পোস্টে দেশের আলেম-ওলামাদের সহযোগিতা চেয়েছেন।
আরো পড়ুন:
কলকাতায় এলেই মনে হয়, মায়ের বাড়ি এলাম: কাজল
লুকিয়ে সালমানের বাড়িতে দুই ব্যক্তি, নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন
হ্যাপি লেখার শুরুতে বলেন, “এই দেশে কি কোনো হক্কানী ওলামা নেই? আমাকে এই আলিম নামের জালেম থেকে আল্লাহর ওয়াস্তে বাঁচান! আগে অনুরোধ করেছি, এখনো অনুরোধ করছি। আপনারা সবাই কেন চুপ করে আছেন? আমি যে মাজলুম এটা কেন মানছেন না? আমার অতীতের কারণে? যা তওবাকৃত। আপনারা কিছুই করতে পারছেন না?”
কিছু প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে নাজনীন আক্তার হ্যাপি বলেন, “আমাকে মুক্ত করে দিন দয়া করে। সে আমাকে ঝুলিয়ে রাখতে রাখতে আমাকে এই অবস্থায় নিয়ে দাঁড় করিয়েছে। আপনাদের একজন আলেমের কুকর্ম ঢাকার জন্য কটাক্ষ করছেন, আমার অতীত নিয়ে। আল্লাহর সামনে হিসাব দিতে পারবেন? কোনো দায়িত্ব ছিল না আপনাদের? এগুলো যা আজকে নতুন না, আমি অনেকদিন ধরে এগুলো বলে আসছি। মামলা করার আগে থেকে।”
নাজনীন আক্তার হ্যাপির স্বামী মুফতি মোহাম্মদ তালহার বিরুদ্ধে ৯টি বিয়ের অভিযোগ করেছেন। অন্য একটি পোস্টে নয় স্ত্রীর নাম ও ঠিকানাসহ বিয়ের কাগজপত্রও প্রকাশ করেছেন এই অভিনেত্রী।
গত ১২ মে স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন নাজনীন আক্তার হ্যাপি। ১৪ মে সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান হ্যাপির আইনজীবী অ্যাডভোকেট জান্নাতুল ফেরদৌস।
মামলা দায়ের করায় অনেকের প্রশ্নের মুখে পড়েছেন নাজনীন আক্তার হ্যাপি। এর কারণ ব্যাখ্যা করে অন্য একটি পোস্টে তিনি বলেন, “আমি যে যৌতুক মামলাটা করেছি। সেটা নিয়ে অনেকের একটা ভুল ধারণা আছে। অর্থ দাবি করা হচ্ছে, আইনের ভাষায় যৌতুক বলা হয়। তিনি তার রেস্টুরেন্টের নতুন ব্রাঞ্চ খোলার জন্য আমাকে টাকা দেওয়ার জন্য চাপাচাপি করে, একই সঙ্গে সে বলে, দিতে না পারলে তালাক দিয়ে দেব। এখন মূল বিষয়টা এখানে, তালাক দিয়ে দেব আর ধরুন আমিও তালাক নিয়ে নিলাম। কিন্তু সে যেটা করত আমার বাচ্চাটাকে নিয়ে পালিয়ে যেত। সুতরাং সেই ভয়ে আমি আমার বাচ্চার নিরাপত্তার জন্য সেসব হুমকি সহ্য করি। বাচ্চাটাকে ব্যবহার করে তার সব আয়োজন। আমি তো জানি লোকটার চরিত্র কেমন! সুতরাং আমি কোনোভাবেই তার হাতে বাচ্চা তুলে দেওয়ার চিন্তা করারও প্রশ্ন আসে না।”
২০১৩ সালে মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের ‘কিছু আশা কিছু ভালোবাসা’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় হ্যাপির। এরপর বদরুল আমিনের ‘রিয়েলম্যান’, মুশফিকুর রহমান গুলজারের ‘লাল সবুজের সুর’, মেজবাহ শিকদারের ‘অন্যরকম’, জামশেদুর রহমানের ‘ছন্দপতন’ চলচ্চিত্রে কাজ করেন। এ ছাড়া কয়েকটি বিজ্ঞাপনেও কাজ করেছেন তিনি।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র র জন য কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
চিকিৎসায় আর্থিক সহায়তা নয়, সবার কাছে দোয়া চাইলেন ফরিদা পারভীন
বাংলা লোকসংগীতের প্রবাদপ্রতিম শিল্পী, লালনসাধনার অঙ্গনে এক উজ্জ্বল তারকা ফরিদা পারভীন আজ অসুস্থ। তাঁর এই অসুস্থতা যেন কেবল একজন শিল্পীর শরীরের দুর্বলতা নয়-এ যেন বাংলা গানের এক প্রিয় কণ্ঠের স্তব্ধ হয়ে যাওয়া। কিন্তু তবুও, এই দুঃসময়ে আর্থিক সহায়তার কথা উচ্চারণ করেননি তিনি। বরং হাত জোড় করে চেয়েছেন-সবাই যেন তার জন্য দোয়া করে।
যদিও ইতোমধ্যে ফরিদা পারভীনের অনেক শুভাকাঙ্খীই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জানিয়ে আসছিলেন, আর্থিক সঙ্কটের কারণে ফরিদা পারভীনের চিকিৎসা হচ্ছিল না। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে। তবে বিষয়টি একেবারেই অস্বাীকার করেছেন শিল্পীর ছেলে ইমাম জাফর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভ্রান্তিকর তথ্যকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আমরা আমাদের মায়ের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে সক্ষম। প্রয়োজন হলে তার নিজস্ব সঞ্চয় দিয়েই চিকিৎসা সম্ভব। তাই কেউ যেন ভেবে না বসেন, মা আর্থিক সংকটে আছেন।’
একজন শিল্পী, যিনি সারাজীবন আমাদের হৃদয়ে গেয়েছেন আত্মার গান, মানবতার গান, আজ তার পাশে দাঁড়ানোর সময়। আর তিনি চেয়েছেন শুধু একটি জিনিস-প্রার্থনা।
ইমাম জানান, ‘আম্মার কিডনির সমস্যাটা ২০১৯ সাল থেকেই চলছে। এখন ডায়ালাইসিস শুরুর পর শরীর আরও দুর্বল হয়ে গেছে। আমাদের সবাই—আমি, আমার ভাইবোন, তাদের জীবনসঙ্গীরা-নিজ হাতে আম্মার সেবা করছি। এই সময়ে সরকার থেকেও জানতে চাওয়া হয়েছে, কোনো সহায়তা দরকার কি না। কিন্তু মা স্পষ্ট জানিয়েছেন, তিনি তা নিতে চান না।’
এই প্রজ্ঞাময় শিল্পীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রেখে ইমাম জাফর সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন-গুজব নয়, দোয়া ছড়ান।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মা যেন আবার গানে ফিরতে পারেন, আবার মঞ্চে দাঁড়িয়ে গেয়ে ওঠেন-এই প্রার্থনা করি। আপনারাও তার জন্য দোয়া করবেন।’
বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনে ফরিদা পারভীনের অবদান অনস্বীকার্য। নজরুলসংগীত ও দেশাত্মবোধক গান দিয়ে শুরু করে সাধক মোকসেদ আলী শাহের কাছে তালিম নেওয়া লালনের গান দিয়ে যিনি পৌঁছে গেছেন বাংলার হৃদয়ে। আজ সেই শিল্পীর জন্যই আমাদের প্রার্থনা দরকার।