নকল ইনজেকশনে ছাত্রীর মৃত্যুর অভিযোগ, দোকানির জরিমানা
Published: 23rd, May 2025 GMT
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায় নকল ইনজেকশন পুশ করায় রিপা খাতুন (২৩) নামে এক কলেজছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় উপজেলার কাশিনাথপুর কাওসার ফার্মেসির মালিককে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
নিহত রিপা পাবনার সুজানগর উপজেলার দুলাই গ্রামের আব্দুর রহমানের মেয়ে। তিনি সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের মাস্টার্সের ছাত্রী ছিলেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত, পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রিপা খাতুন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তাঁর শরীরে টাইফয়েড জ্বর ধরা পড়ে। বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ইলিয়াস হোসেনের কাছে নিয়ে গেলে তিনি একটি কোম্পানির ইনজেকশন শরীরে পুশ করার পরামর্শ দেন।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, তাঁর পরিবার সুজানগরের দুলাই বাজারের মেডিসিন পয়েন্ট থেকে ইনজেকশন কিনে গত বুধবার রিপার শরীরে পুশ করে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই বাড়িতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। এ সময় আগে ব্যবহার করা ইনজেকশনের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা যায়, আসলটির ব্যাচ নম্বর সাত অঙ্কের এবং নকলটির আট অঙ্কের।
মেডিসিন পয়েন্টের বিক্রয় প্রতিনিধি মৃদুল হোসেন জানান, ইনজেকশনটি কোম্পানির এসআর হাবিবুর রহমান সরকারের কাছ থেকে কিনেছেন। হাবিবুর রহমানের ভাষ্য, তিনি সাঁথিয়ার কাশিনাথপুরের কাওসার ফার্মেসি থেকে ইনজেকশন এনে দিয়েছেন।
কলেজছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনা সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে জানালে বৃহস্পতিবার পাবনার ড্রাগ সুপারকে বিষয়টি জানানো হয়। ড্রাগ সুপার রোকনুজ্জামান বিষয়টি সাঁথিয়ার ইউএনওকে জানান। পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইউএনও রিজু তামান্না ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কাওসার ফার্মেসির মালিক গোলাম মোস্তফাকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
কলেজছাত্রীর চাচা ইমরান খান বলেন, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানায় আমরা আশাহত হয়েছি। কাওসার ফার্মেসি নকল ওষুধ বিক্রি করে মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা করছে। তাদের ব্যবসা বন্ধের দাবি জানাই।’
শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের চিকিৎসক ইলিয়াস হোসেন বলেন, ইনজেকশনটি সরাসরি কোম্পানির এসআরের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়। পরে কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানায়, এটি নকল করা হয়েছে। কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রেজাউল করিমও একই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তাদের কোম্পানির নাম ব্যবহার করে ওষুধটি নকল করা হয়েছে। নকল বন্ধে প্রতিনিয়ত মোড়ক ও ডিজাইন পরিবর্তন করেন তারা।
এসআর হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কোম্পানির কাছে দাবি জানানো হয়েছে জানিয়ে পাবনার ড্রাগ সুপার রোকনুজ্জামান বলেন, কলেজছাত্রীর পরিবার চাইলে আইনের আশ্রয় নিতে পারেন।
এ বিষয়ে সাঁথিয়ার ইউএনও রিজু তামান্না বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর কাওসার ফার্মেসিতে অভিযান চালানো হয়। ঘটনাস্থলেই ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ফার্মেসির মালিককে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এটি ভ্রাম্যমাণ আদালতের আইনে সর্বোচ্চ জরিমানা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প বন ইনজ কশন র রহম ন প বন র
এছাড়াও পড়ুন:
গিলের এক ভুলে ২৫০ কোটি রুপির ক্ষতির মুখে বিসিসিআই!
ইংল্যান্ড সফরে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ছন্দে রয়েছেন ভারতের নতুন টেস্ট অধিনায়ক শুভমান গিল। হেডিংলি ও এজবাস্টনে প্রথম দুই টেস্টে করেছেন ৫৮৫ রান, গড় ১৪৬.২৫। এর মধ্যে রয়েছে দুটি সেঞ্চুরি ও একটি ডাবল সেঞ্চুরি। ব্যাটিংয়ে যেমন ছন্দে, নেতৃত্বেও পেয়েছেন প্রশংসা। বিশেষ করে এজবাস্টনে তার ২৬৯ ও ১৬১ রানের ইনিংস দুটি সিরিজে সমতা ফেরাতে বড় ভূমিকা রেখেছে।
তবে দ্বিতীয় ম্যাচে ঘটে যায় একটি বিতর্কিত ঘটনা, যা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইকে বড় আর্থিক ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করতে ড্রেসিংরুম থেকে সরাসরি মাঠে আসেন গিল। কিন্তু তখন তার গায়ে ছিল নাইকি ব্র্যান্ডের কালো স্ট্রেচ টি-শার্ট। আর এখানেই বিপত্তি।
ভারতীয় দলের অফিসিয়াল কিট স্পন্সর অ্যাডিডাস। ২০২৩ সালের মে মাসে বিসিসিআইয়ের সঙ্গে ২৫০ কোটি রুপির চুক্তি করে অ্যাডিডাস, যা বলবৎ থাকবে ২০২৮ সাল পর্যন্ত। চুক্তি অনুযায়ী, মাঠে বা খেলার সংলগ্ন সময়ে খেলোয়াড়রা অন্য কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ব্র্যান্ডের পোশাক পরতে পারবেন না।
শুভমান গিল ব্যক্তিগতভাবে নাইকির শুভেচ্ছাদূত হলেও জাতীয় দলের জার্সিতে তার সেই পরিচয় প্রকাশ করা নিয়মবহির্ভূত। বিসিসিআই ধারণা করছে, তাড়াহুড়ার কারণে হয়তো নিয়মটি ভুলে গিয়েছিলেন গিল। তবুও বিষয়টিকে হালকাভাবে নিচ্ছে না বোর্ড, তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হতে পারে।
ঘটনাটি অ্যাডিডাসের নজরে এলে তারা চাইলে বিসিসিআইয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। এমনকি চাইলে চুক্তিও বাতিল করে দিতে পারে, যার ফলে পুরো ২৫০ কোটি রুপি ক্ষতি হতে পারে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের। চুক্তি বাতিল না করলেও, ক্ষতিপূরণ বা জরিমানা দাবি করতে পারে অ্যাডিডাস।
তবে বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, ভারতের বিশাল বাজার ধরে রাখার স্বার্থে অ্যাডিডাস হয়তো এই ঘটনার জেরে কড়া পদক্ষেপ নেবে না। সতর্কবার্তা দিয়েই হয়তো মীমাংসার পথে হাঁটবে তারা।