অতিরিক্ত পড়াশোনার চাপ সহ্য করতে না পারায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ছাত্র সজীব বাড়ৈই আত্মহত্যা করেছেন। নিজেই শরীরে বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করে তিনি আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যার আগে তিনি চিরকুটে এর কারণ জানিয়ে গেছেন। 

রবিবার (২৫ মে) সকালে জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল গ্রামের পারিবারিক শশ্মানে নিহত সজীবের অন্তেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। এ সময় ওই এলাকায় শোক নেমে আসে। 

সজীবের প্রতিবেশী সাংবাদিক ওমর আলী সানী জানান, নিহত সজীব বাকাল গ্রামের বাসিন্দা ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত সুধীর বাড়ৈর ছেলে। সজীবের বাবা আগৈলঝাড়া উপজেলা সদরের সাথী টেইলার্সের মালিক। দীর্ঘদিন তিনি ব্রেন টিউমারসহ বিভিন্ন দুরারোগ্যব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে বিছানায় পড়ে আসেন। পরিবারের বড় সন্তান সজীব। এলাকার বিত্তশালীদের সহযোগিতায় তার পড়াশুনা চলছিল।

আরো পড়ুন:

রোগী সেজে জামালপুরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুদকের অভিযান

দিনাজপুরে ট্রাক-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে নিহত ৪

নিহত সজীবের রুমমেট সুমন হালদার জানান, পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপ সামলাতে না পেরে নিজের শরীরে ইনজেকশন পুশ করে আত্মহত্যা করেছেন সজীব বাড়ৈ। পড়াশুনার অতিরিক্ত চাপে সজিব প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়তেন। তিনি তৃতীয়বর্ষের মাইক্রোবায়োলজিতে আটকে ছিলেন। তার ব্যাচের শিক্ষার্থীরা সবাই এমবিবিএস পাস করে ইন্টার্নশিপ করছেন। গত ২২ মে দিবাগত রাতে শিরায় বিষাক্ত ওষুধ পুশ করেন তিনি। সহপাঠীরা বিষয়টি টের পেয়ে তাকে প্রথমে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (২৪ মে) বিকেলে সজীব বাড়ৈ মারা যান।

সুমন হালদার আরো জানান, সজীব বাড়ৈ ৫০তম ব্যাচের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের তৃতীয়বর্ষের ছাত্র ছিলেন। মারা যাওয়ার আগে সজীব একটি চিরকুট লিখে গেছেন। তাতে তিনি লিখেছেন, ‘‘নিজের সাথে যুদ্ধ করে করে ক্লান্ত আমি। একটু বিশ্রাম চাই। ক্ষমা করে দিও। এত ভালোবাসার প্রতিদান দিতে পারলাম না।’’ 

রবিবার (২৫ মে) দুপুরে কলেজের অধ্যক্ষ ফয়জুল বাশার জানান, মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে সজীব কিছুদিন আগে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাকে হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসা দেয়া হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় মুমূর্ষু অবস্থায় সজীবকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল। 

ঢাকা/পলাশ/বকুল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

‘মা, ক্ষুধা পেয়েছে’ বলে হারিয়ে যায় শিশু, দুই দিন পর লাশ উদ্ধার

‘মা, ক্ষুধা পেয়েছে, ভাত খাব।’ চার বছরের শিশু সত্যজিৎ চাকমার এটিই ছিল শেষ কথা। শুনে ছেলেকে বারান্দায় রেখে রান্নাঘরে ভাত আনতে যান মা সুরেশ বালা তঞ্চঙ্গ্যা। তবে দুই মিনিট পর ফিরে দেখেন, বারান্দায় ছেলেটি আর নেই।

ঘটনাটি ঘটেছে বান্দরবান শহরতলির সিনিয়রপাড়ায় এলাকায়। গত মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে এভাবেই নিখোঁজ হয়েছিল সত্যজিৎ। দুই দিন পর আজ বৃহস্পতিবার সকাল আটটার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে রেইছা বাজারসংলগ্ন রেইছা খাল থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বান্দরবানে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে পাহাড়ি ঝিরি ও ঝরনা হঠাৎ স্রোতপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সিনিয়রপাড়ার সমীরণ চাকমার বাড়ির পাশে একটি ঝিরি আছে। শিশুটির বাবা সমীরণ চাকমার ধারণা, শিশুটি পাশের ঝিরিতে খেলতে গিয়ে স্রোতে ভেসে গেছে।

সমীরণ চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার দিন তিনি অফিসে ছিলেন। তাঁর স্ত্রী ও ছেলে বাড়িতে ছিল। সকাল থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছিল। ছেলে বলেছিল, ক্ষুধা পেয়েছে। মা ছেলেকে বারান্দায় বসিয়ে রান্নাঘরে যায়। ফিরে এসে দেখে ছেলে নেই।

বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদ পারভেজ বলেন, রেইছা বাজার এলাকার খাল থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের অনুমতির জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ