গরুর হাটে ক্রেতা কম মন খারাপ বিক্রেতার
Published: 25th, May 2025 GMT
নিজ খামারের পাঁচটি গরু নিয়ে রোববার সকালে হরগজ হাটে এসেছেন মো. আজম আলী। বিকেল পর্যন্ত কোনোটিই বিক্রি হয়নি। সবগুলো গরুর দামই দেড় লাখ টাকার ওপরে। ক্রেতারা ৯০ হাজার থেকে এক লাখের বেশি দাম বলছেন না। এ নিয়ে হতাশার কথা জানান মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার চারিগ্রামের এই ব্যক্তি।
জেলার সাটুরিয়ার হরগজ হাটটি উপজেলার বৃহত্তম। এখানে আসার আগে আরও দুটি হাট ঘুরে এসেছেন আজম আলী। তিনি বলেন, যে খরচ হয়েছে, দেড় লাখের নিচে বিক্রি করলে তাঁর লোকসান হবে। আশা অনুযায়ী দাম না পাওয়ায় মন খারাপ তাঁর।
এই হাটে আসা বিক্রেতাদের বেশির ভাগই হতাশ। তারা বলছেন, হাটজুড়ে গরু আর গরু। কিন্তু সেই তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা কম। তাই আশা অনুযায়ী দর হাঁকছেন না কেউই। বিশেষ করে গরু নিয়ে আসা ব্যক্তিদের মধ্যেই হতাশা বেশি। তারা বলছেন, স্থানীয় কোরবানিদাতারা ছোট ও মাঝারি গরুই বেশি কিনছেন।
তাদের মতোই পরিস্থিতিতে পড়েছেন মুন্সীগঞ্জের খামারিরা। মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার পূর্ব শিলমন্দির খামার মালিক মো.
একই এলাকার খামারে ২২টি গরু কোরবানির জন্য তৈরি করেছেন শিল্পী বেগম। তিনি জানান, বিগত বছরগুলোতে পাইকার ও ক্রেতারা ভিড় জমাতো খামারে ও বাড়িতে। এবার ঈদের দুই সপ্তাহের কম সময় বাকি। কোনো পাইকার বা ক্রেতা আসেনি।
মিরকাদিমের খামারের মালিক ইমন ব্যাপারী জানান, এ বছর ৭০টি গরু প্রস্তুত করেছেন। ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার লোকজন আসছে, দামাদামি করছে। ভারত থেকে এবার গরু না এলে ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন।
সবারই দুশ্চিন্তা বড় গরু বিক্রি নিয়ে। তবে ছোট ও মাঝারি গরুর বিক্রেতাদের অনেকেই সন্তুষ্ট। মানিকগঞ্জর সদর থেকে রোববার হরগজ হাটে গরু নিয়ে আসা মো. ইউনুচ আলী বলেন, বাড়িতে লালন-পালন করা মাঝারি আকারের ষাঁড় বিক্রি করেছেন। এক লাখ টাকা দাম চাইলেও তাঁকে বিক্রি করতে হয়েছে ৯০ হাজার টাকায়। এই দামে তিনি সন্তুষ্ট।
একই হাট থেকে ৭০ হাজার টাকায় কেনা বকনা গরু নিয়ে ফিরছিলেন সাজাহান মিয়া। তিনি এসেছিলেন ঢাকার ধামরাই উপজেলার কুশরা থেকে। তাঁর ধারণা, গরুটিতে প্রায় তিন মণ মাংস হবে। গতবার একই আকারের গরুর বিক্রি হয়েছে ৬০-৬৫ হাজার টাকায়।
মুন্সীগঞ্জ জেলায় এবার কোরবানির পশুর হাট বসছে ৩৯টি। এর মধ্যে অস্থায়ী হাট ৩১টি, স্থায়ী হাট ৮টি। কোরবানির ঈদ ঘিরে সব হাটেই বেচাকেনার চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে। এর বাইরে খামারগুলো থেকে সরাসরি গরু-ছাগল
বেচাকেনার জন্য জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অনলাইন। সেখানেও বিক্রি হচ্ছে।
এ বছর ৮১ হাজার ৭৭৫টি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানান মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম। তাঁর দেওয়া তথ্যমতে, এগুলোর মধ্যে গরু ৬৯ হাজার ৮৭৭টি, ছাগল ১৮ হাজার ৬৩৭টি, ভেড়া ৩ হাজার ১৩৯টি ও মহিষ ২২২টি। এই কর্মকর্তা বলেন, জেলায় এবার কোরবানির পশুর চাহিদা ৬৯ হাজার ৭৭০টি। উদ্বৃত্ত থাকবে ১২ হাজার ১০৫টি পশু। অন্যদিকে এবার মিরকাদিমের ধবল গরু রয়েছে ২০০টি। এগুলোর বেশির ভাই বিক্রি হবে রাজধানীর পুরান ঢাকার রহমতগঞ্জের হাটে। ৩৯টি পশুর হাটে সেবাদানের জন্য প্রাণিসম্পদ বিভাগ ৩৯টি চিকিৎসক দল তৈরি রেখেছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গর ক রব ন র প রস ত ত ন র জন য কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের অস্ত্রবিরতি ভেঙে পড়ল
অস্ত্রবিরতি ভেঙে আজ মঙ্গলবার ভোর থেকে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান পাল্টাপাল্টি রকেট হামলা চালিয়েছে। কাবুলে বিভিন্ন সূত্র থেকে এমন তথ্য জানা গেছে। স্থানীয় সাংবাদিকদের ভাষ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার ভোর চারটা নাগাদ দক্ষিণ আফগানিস্তানের কান্দাহার প্রদেশের শুরাবাক জেলায় রকেট হামলা চালায় পাকিস্তান। তবে হামলায় তাৎক্ষণিক হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
আফগান সূত্র জানায়, প্রথমে পাকিস্তানের দিক থেকে হামলা চালানো হয়। জবাবে ইসলামি আমিরাতের সরকার নতুন করে পাকিস্তানি চৌকি এবং অবস্থানের ওপর পাল্টা রকেট হামলা চালায়। আফগানিস্তানের বিভিন্ন সূত্র মনে করছে, এতে পাকিস্তানের ভালো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, অনেকের প্রাণহানিও হয়েছে।
এই রকেট হামলা প্রমাণ করছে, কাতার ও ইরানের পরামর্শে যে অস্ত্রবিরতি শুরু হয়েছিল, তা ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই ভেঙে পড়ল। এতে অস্ত্রবিরতির ভবিষ্যৎ নিয়ে একটা প্রশ্নও দেখা দিল। অবশ্য এর আগে সোমবার দুই পক্ষ থেকেই অস্ত্রবিরতিকে স্বাগত জানানো হয়েছিল।
পাশাপাশি পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আফগানিস্তানের বিষয়ে যে ধরনের মন্তব্য করেছে তাতে ধারণা করা হচ্ছে, দুই দেশের সম্পর্কের দ্রুত অবনতি হচ্ছে। গত কয়েক বছরে তালেবান নেতৃত্বাধীন ইসলামিয়া আমিরাতের সরকারকে ‘অন্তর্বর্তী বা আফগানিস্তানের সরকার’ বলে অভিহিত করেছে ইসলামাবাদ। তবে গত রোববার থেকে তারা আফগান সরকারকে কার্যত পাকিস্তান নির্ধারিত সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে তুলনা করতে শুরু করেছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, পাকিস্তানের ওপর সাম্প্রতিক সময়ে একসঙ্গে হামলা চালিয়েছে আফগান তালেবান, তেহরিক-ই-তালেবান (টিটিপি) এবং বালুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। অর্থাৎ আফগান সরকার বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ মন্তব্য নিয়ে এখনো আমিরাতের সরকার কোনো মন্তব্য করেনি।