সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, তার দুই ছেলে এস এম আসিফ শামস ও এস এম নাসিফ শামসসহ পাঁচ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্লকের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৭ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব দুদকের পৃথক দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।

অন্য দুই জন হলেন-আইন বিচার ও সংসদ মন্ত্রণালয়ের অধীন নিবন্ধন অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিদর্শক খান মো.

আব্দুল মান্নান এবং তার স্ত্রী শাকিলা বেগম।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

টুকু এবং তার দুই ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা এবং এনআইডি ব্লক চেয়ে আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক আল আমিন।

আবেদনে বলা হয়, শামসুল হক টুকুর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে অর্থনৈতিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থেকে বিপুল পরিমাণ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। তিনি ভিন্ন মামলায় কারাগারে রয়েছেন। জামিনে মুক্ত হয়ে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন।তিনি বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে শামসুল হক টুকু এবং তার দুই ছেলের বিদেশ গমন বন্ধ করা প্রয়োজন।

এছাড়া অনুসন্ধানকালে বিশ্বস্তসূত্রে জানা যায়, তারা তাদের নামীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন, যা করতে পারলে মামলার অনুসন্ধানের ধারাবাহিকতায় মামলা দায়ের, আদালতে চার্জশিট দাখিল, আদালতের বিচার শেষে সাজার অংশ হিসেবে অপরাধলব্ধ আয় থেকে  অর্জিত সম্পত্তি সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্তকরণসহ সব উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তর, আয়কর রিটার্ন দাখিল, পাসপোর্ট ইস্যু-নবায়ন, ব্যাংক হিসাব খোলা-পরিচালনাসহ যাবতীয় কার্যক্রম যেহেতু জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়, সেহেতু তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রটি ব্লক করা হলে, এ সমস্ত কাজে তারা বাধাগ্রস্ত হবেন। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্লক করা প্রয়োজন।

মান্নান দম্পতির বিষয়ে আবেদন করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সহিদুর রহমান।

আবেদনে বলা হয়, সাবেক মহাপরিদর্শক (নিবন্ধন) খান মো.আবদুল মান্নান ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে সাব-রেজিস্ট্রার নিয়োগ-বদলি, বদলি স্থগিত এবং প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কর্মচারীদের নিয়োগ ও বদলিসহ কয়েকশ নকল নবীশ নিয়োগ, কয়েক হাজার দলিল লেখকের লাইসেন্স বা সনদ বিক্রয়ের মাধ্যমে কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে।অনুসন্ধানের বিষয়টি রাষ্ট্রের স্বার্থে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। অনুসন্ধানকালে গোপন সূত্রে জানা যায়, অভিযোগ সংশ্লিষ্টরা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রম দীর্ঘায়িত বা ব্যাহত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তাদের বিদেশ গমন বন্ধ করা একান্ত প্রয়োজন। এছাড়া বর্তমানে বাংলাদেশে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তর, আয়কর রিটার্ন দাখিল, পাসপোর্ট ইস্যু-নবায়ন, ব্যাংক হিসাব খোলা-পরিচালনাসহ যাবতীয় কার্যক্রম তথা নাগরিক সুবিধা যেহেতু জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে সম্পাদিত হয় সেহেতু অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র ব্লক করা হলে এ সমস্ত কাজ সম্পন্ন সম্ভব হবে না। এজন্য তার জাতীয় পরিচয়পত্র ব্লক করা একান্ত প্রয়োজন।

ঢাকা/এম/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ক্ষমা চাইলেন এনবিআরের আরও শতাধিক কর্মকর্তা

সাম্প্রতিক আন্দোলনে যুক্ত থাকা আরও শতাধিক কর্মকর্তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন। আজ বুধবার আগারগাঁও রাজস্ব ভবনে চেয়ারম্যানের দপ্তরে পৃথকভাবে দুই দফায় চেয়ারম্যানের সঙ্গে স্বাক্ষাৎ করে ক্ষমা চান তারা এবং দুঃখ প্রকাশ করেন। এরা সবাই বিসিএস আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের কর্মকর্তা, যারা এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

গতকাল মঙ্গলবারও আয়কর ক্যাডারের প্রায় দুই শতাধিক কর্মকর্তা চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে একইভাবে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, আজ সকাল ৯টার দিকে আয়কর ক্যাডারের বিভিন্ন ব্যাচের প্রায় ৫০ কর্মকর্তা চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করেন। এরপর সোয়া ৯টার দিকে কাস্টমস ও ভ্যাট ক্যাডারের প্রায় ৫০ জন কর্মকর্তা দেখা করে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন। 

এ সময় তারা আন্দোলনের কারণে রাজস্ব আদায়, দেশ ও অর্থনীতির যে ক্ষতি হয়েছে-তা স্বীকার করেন এবং দুৎখ প্রকাশ করেন। তারা সরকারের নির্দেশনা মানা ও রাজস্ব ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কাজ করবেন বলেও চেয়ারম্যানের কাছে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সমকালকে জানান, কর্মকর্তারা দেখা করতে গেলে চেয়ারম্যান তাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, তার বিরুদ্ধে যারা আন্দোলন করেছেন, তিনি তাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। কিন্তু যারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন, রাষ্ট্র তাদের ক্ষমা করবে কিনা তা তিনি জানেন না। এ সময় এনবিআর চেয়ারম্যান সবাইকে দেশপ্রেমে উদ্ধুদ্ধ হয়ে দেশের উন্নয়নের অক্সিজেন রাজস্ব আদায়ে মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্রেডিট কার্ড, সঞ্চয়পত্র কেনাসহ ১৩ সেবায় রিটার্ন জমার প্রমাণ দেখাতে হবে না
  • যুক্তরাষ্ট্রসহ ৫ দেশে ভোটার নিবন্ধন শুরুর সম্মতি পেয়েছে ইসি
  • যুক্তরাষ্ট্রসহ ৫ দেশে ভোটার নিবন্ধনের সম্মতি পেয়েছে ইসি
  • ক্ষমা চাইলেন এনবিআরের আরও শতাধিক কর্মকর্তা