টুকুসহ ৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা, এনআইডি ব্লক
Published: 27th, May 2025 GMT
সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, তার দুই ছেলে এস এম আসিফ শামস ও এস এম নাসিফ শামসসহ পাঁচ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্লকের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব দুদকের পৃথক দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
অন্য দুই জন হলেন-আইন বিচার ও সংসদ মন্ত্রণালয়ের অধীন নিবন্ধন অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিদর্শক খান মো.
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
টুকু এবং তার দুই ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা এবং এনআইডি ব্লক চেয়ে আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক আল আমিন।
আবেদনে বলা হয়, শামসুল হক টুকুর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে অর্থনৈতিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থেকে বিপুল পরিমাণ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। তিনি ভিন্ন মামলায় কারাগারে রয়েছেন। জামিনে মুক্ত হয়ে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন।তিনি বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে শামসুল হক টুকু এবং তার দুই ছেলের বিদেশ গমন বন্ধ করা প্রয়োজন।
এছাড়া অনুসন্ধানকালে বিশ্বস্তসূত্রে জানা যায়, তারা তাদের নামীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন, যা করতে পারলে মামলার অনুসন্ধানের ধারাবাহিকতায় মামলা দায়ের, আদালতে চার্জশিট দাখিল, আদালতের বিচার শেষে সাজার অংশ হিসেবে অপরাধলব্ধ আয় থেকে অর্জিত সম্পত্তি সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্তকরণসহ সব উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তর, আয়কর রিটার্ন দাখিল, পাসপোর্ট ইস্যু-নবায়ন, ব্যাংক হিসাব খোলা-পরিচালনাসহ যাবতীয় কার্যক্রম যেহেতু জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়, সেহেতু তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রটি ব্লক করা হলে, এ সমস্ত কাজে তারা বাধাগ্রস্ত হবেন। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্লক করা প্রয়োজন।
মান্নান দম্পতির বিষয়ে আবেদন করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সহিদুর রহমান।
আবেদনে বলা হয়, সাবেক মহাপরিদর্শক (নিবন্ধন) খান মো.আবদুল মান্নান ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে সাব-রেজিস্ট্রার নিয়োগ-বদলি, বদলি স্থগিত এবং প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কর্মচারীদের নিয়োগ ও বদলিসহ কয়েকশ নকল নবীশ নিয়োগ, কয়েক হাজার দলিল লেখকের লাইসেন্স বা সনদ বিক্রয়ের মাধ্যমে কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে।অনুসন্ধানের বিষয়টি রাষ্ট্রের স্বার্থে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। অনুসন্ধানকালে গোপন সূত্রে জানা যায়, অভিযোগ সংশ্লিষ্টরা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রম দীর্ঘায়িত বা ব্যাহত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তাদের বিদেশ গমন বন্ধ করা একান্ত প্রয়োজন। এছাড়া বর্তমানে বাংলাদেশে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তর, আয়কর রিটার্ন দাখিল, পাসপোর্ট ইস্যু-নবায়ন, ব্যাংক হিসাব খোলা-পরিচালনাসহ যাবতীয় কার্যক্রম তথা নাগরিক সুবিধা যেহেতু জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে সম্পাদিত হয় সেহেতু অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র ব্লক করা হলে এ সমস্ত কাজ সম্পন্ন সম্ভব হবে না। এজন্য তার জাতীয় পরিচয়পত্র ব্লক করা একান্ত প্রয়োজন।
ঢাকা/এম/এসবি
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কর্মবিরতিতে অচলাবস্থায় এনবিআর: বিজিবি-পুলিশ মোতায়েন
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিলসহ চার দফা দাবিতে আজ রোববারও পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি পালন চলছে। আজ রোববার সকাল ৯টা থেকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ের নিচে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’-এর ব্যানারে আয়কর, শুল্ক ও ভ্যাট বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতির কর্মসূচি পালন করছেন।
তবে কাস্টমস হাউস, এলসি স্টেশন, রপ্তানি কার্যক্রম ও আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এই কর্মবিরতির বাইরে রয়েছে।
এদিকে আজ সরেজমিন দেখা গেছে, এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এদিক-সেদিক ঘোরাঘুরি করছেন। কেউ বাইরে, কেউ ভেতরে দাঁড়িয়ে কিংবা পেপার বিছিয়ে বসিয়ে অলস সময় পার করছেন।
অন্যদিকে এনবিআরের ভবনের ভেতরে এবং বাইরে বিপুল সংখ্যক বিজিবি এবং পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেছে। তাদের সতর্ক অবস্থায় থাকতে দেখা গেছে।
তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য উপস্থিত নিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করেছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। তাদের অভিযোগ পরিষদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এনে আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করছে সরকার।
ঐক্য পরিষদ জানিয়েছে কর্মসূচি শেষে আজ বিকেল ৪টায় সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী করণীয় জানানো হবে।
তবে নতুন কোনো ঘোষণা না এলে আগামীকাল সোমবার থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ছাড়া আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি চলবে বলে জানা গেছে।
যে চার দাবিতে আন্দোলন:
নতুন অধ্যাদেশ বাতিল, চেয়ারম্যানকে অপসারণ এবং রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটির সুপারিশ জনসাধারণের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। এছাড়া এনবিআরের প্রস্তাবিত খসড়া এবং পরামর্শক কমিটির সুপারিশ আলোচনা-পর্যালোচনা করে প্রত্যাশী সংস্থা, ব্যবসায়ী সংগঠন, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনের মতামত নিয়ে উপযুক্ত ও টেকসই রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কার নিশ্চিত করার দাবিতে আন্দোলন করছেন। এনবিআরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।