নিয়মিত চশমা ব্যবহার করলে কি চোখের পাওয়ার ঠিক হয়ে যায়?
Published: 12th, July 2025 GMT
আমরা চোখ দিয়ে দেখি ঠিকই, তবে আমাদের দেখা সম্পূর্ণ করে মস্তিষ্ক। সহজ করে বললে, চোখ হলো দেখার যন্ত্র, আর সেই ছবি বোঝার কেন্দ্র হলো মস্তিষ্ক।
বিষয়টা আরেকটু খোলাসা করি। আমাদের দেখার কাজটি কয়েকটি ধাপে হয়ে থাকে। প্রথমে কোনো বস্তু থেকে আলো এসে চোখে পড়ে এবং চোখের স্নায়ুর স্তর বা রেটিনায় ফোকাস বিন্দু তৈরি করে। ফলে রেটিনা উজ্জীবিত হয়ে বিদ্যুৎ তরঙ্গ বা সংকেত তৈরি করে মস্তিষ্কে পৌঁছে দেয়। মস্তিষ্ক তখন বস্তুটির ছবি তৈরি করে এবং আমরা জিনিসটা দেখতে পাই। তাই কোনো কারণে ফোকাস ঠিকমতো রেটিনায় না হলে দেখার বিষয়টি বিঘ্নিত হয়। এটিই রিফ্র্যাকটিভ এরর বা দৃষ্টির সমস্যা। এটি দুই ধরনের:
দূরদৃষ্টিসমস্যাএ ক্ষেত্রে দূরের বস্তু দেখতে অসুবিধা হয়ে থাকে। মায়োপিয়া বা দূরদৃষ্টিসমস্যা সাধারণত মাইনাস পাওয়ারের লেন্স বা চশমা ব্যবহার করতে হয়। এখানে মাইনাস লেন্সের কাজ হলো, ফোকাল পয়েন্টকে পেছনে সরিয়ে রেটিনায় পৌঁছে দেওয়া।
ক্ষীণদৃষ্টিসমস্যাহাইপার মেট্রোপিয়া বা ক্ষীণদৃষ্টিসমস্যায় দূরের বস্তু দেখার সমস্যার পাশাপাশি কাছের জিনিস দেখতে, যেমন পড়াশোনা করতে অসুবিধা হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে সাধারণত প্লাস পাওয়ারের লেন্স ব্যবহার করতে হয়। প্লাস পাওয়ারের লেন্সের কাজ হলো, ফোকাল পয়েন্টকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে রেটিনায় ঠিক জায়গামতো পৌঁছে দেওয়া।
এই দুটি সমস্যার বাইরেও আরও একটি দৃষ্টিসমস্যা আছে যাকে সহজ বাংলায় বলে চালশে। চল্লিশ বছর বা তার আশপাশের বয়সসীমায় কাছের বস্তু দেখতে অসুবিধা হয় বা পড়াশোনা, সেলাই ইত্যাদি কাজে ব্যাঘাত ঘটে। এটিকে বলা হয় প্রেসবায়োপিয়া। এখানেও প্লাস পাওয়ারের চশমা ব্যবহার করতে হয়।
নানা কারণেই দৃষ্টিসমস্যা হতে পারে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ ষ ট সমস য ব যবহ র যবহ র ক
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন
তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের।
দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত।
আরো পড়ুন:
রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন
টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়
প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।
তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।
গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে।
সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়।
ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে।
২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে
ঢাকা/লিপি