বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি রবিবার
Published: 12th, July 2025 GMT
বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ রবিবার (১৩ জুলাই) অনুষ্ঠিত হবে। ডাম্বুলার ক্যান্ডিতে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্য সাড়ে ৭টায় ম্যাচটি শুরু হবে।
প্রথম ম্যাচ দাপটের সঙ্গে জিতে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে শ্রীলঙ্কা। পাল্লেকেল্লেতে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে উড়িয়ে দেয় শ্রীলঙ্কা।এবার তাদের সিরিজ নিশ্চিতের লড়াই। উল্টো চিত্র বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে। সিরিজ বাঁচাতে বাংলাদেশকে জিততেই হবে। নয়তো সিরিজ হাতছাড়া। এর আগে বাংলাদেশ টেস্ট, ওয়ানডে সিরিজ হেরেছে। টি-টোয়েন্টি সিরিজও খোয়াবে নাকি সেটাই দেখার।
ফরম্যাট পাল্টাচ্ছে কিন্তু বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের চিত্র পাল্টাচ্ছে না। ২০১৭ সালের পর বাংলাদেশ দল এবার পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে দ্বীপরাষ্ট্রে গেছে। এক মাসের সফর। লম্বা সময়ে ক্রিকেটাররা নিজেদের পরিবারকেও কাছে পেয়েছে। হোম সিকনেস আসার সুযোগ নেই। তবুও মাঠের ক্রিকেটে নেই কোনো পেশাদারিত্ব।
আরো পড়ুন:
পাঁচ বলে পাঁচ উইকেট! ইতিহাস গড়লেন আয়ারল্যান্ডের ক্যাম্ফার
রুটের ব্যাটে ইতিহাস, ভাঙলেন দ্রাবিড়-স্মিথের রেকর্ড
ফরম্যাট পাল্টাতেই অধিনায়ক পাল্টায়। নতুন অধিনায়ক আসে। দলেরও পরিবর্তন হয়। কিন্তু বাংলাদেশের ভাগ্যে পরিবর্তন হয় না। অতীত ইতিহাসও এরকমই। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আগের পাঁচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের চারটিই হেরেছে বাংলাদেশ। একটি ড্র করেছে সেটা অবশ্য ছিল দুই ম্যাচের সিরিজ। প্রথম ম্যাচ হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ায়।
বাংলাদেশ যেখানে ব্যর্থতায় হাবুডুবু খাচ্ছে সেখানে শ্রীলঙ্কা নিজেদের মাঠে প্রতি ফরম্যাটেই দুর্দান্ত পারফর্ম করে যাচ্ছে। ব্যাটার, বোলার, ফিল্ডার প্রত্যেকেই নিজেদের ভূমিকা সম্পর্কে সচেতন। সেই অনুযায়ী পারফর্মও করছেন। ব্যাটিংয়ে পাথুম নিশাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস বাংলাদেশের জন্য প্রতি ম্যাচেই ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু রান-ই তারা করছেন না…নতুন বলে পেসারদের আক্রমণ করে এলোমেলো করে দিচ্ছেন। এরপর অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কাও নিয়মিত রান পাচ্ছেন। বোলারদের শাসন করছেন প্রাণখুলে। স্পিনার মাহিশ থিকসানা ও পেসার নুয়ান থুসারা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ভোগাচ্ছেন।সব মিলিয়ে স্বাগতিক শিবির যেন একটা হাসিখুশি পরিবার। যারা এক হয়ে অনায়েসে পারফর্ম করে সাফল্য পেয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ দলে পারফর্মারের অভাব নেই। নিজেদের দিনে প্রত্যেকে জ্বলে উঠলে সাফল্য ধরা দেয়। কিন্তু কবে ক্রিকেটাররা চেনা রূপে ধরা দেবেন সেটাই বিরাট প্রশ্নের। শ্রীলঙ্কায় অন অ্যান্ড অফ পারফরম্যান্সে নিজেদের প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন ক্রিকেটাররা।টি-টোয়েন্টি সিরিজ বাঁচানোর লড়াইয়ে নিজেদের সেরা খেলাটা জরুরি। এবার পারবেন তো তারা? নাকি এক ম্যাচ আগেই খোয়াবে টি-টোয়েন্টি সিরিজ? উত্তরটা জানতে, রবিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
ঢাকা/ইয়াসিন/সাইফ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
খেলার নামে আদম পাচার ঠেকাতে তৎপর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ
বিদেশে খেলোয়াড় পাঠানোর নামে মানব পাচারের ঝুঁকি রোধ এবং যোগ্য খেলোয়াড়দের জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া নিশ্চিত করতে নতুন নিয়ম চালু করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। ৯ অক্টোবর এনএসসি এক চিঠিতে ফেডারেশনগুলোকে জানিয়েছে, এখন থেকে বিদেশে ক্রীড়া দল পাঠানোর আগে ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনগুলোকে ফ্লাইটের কমপক্ষে ১০ দিন আগে জিওর (সরকারি আদেশ) জন্য প্রস্তাব পাঠাতে হবে। একই সঙ্গে নির্বাচিত খেলোয়াড়দের ফিটনেস ও পারফরম্যান্স–সংশ্লিষ্ট প্রমাণপত্রও এনএসসিকে দিতে হবে।
অভিযোগ আছে, কিছু ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশন অনেক বছর ধরেই দলের সঙ্গে ভুয়া খেলোয়াড়-কর্মকর্তা পাঠিয়ে আদম পাচার করে আসছে। দুই একটা ঘটনা সামনে এলেও এসবের বেশির ভাগই থেকে যায় আড়ালে। ছোট খেলাগুলো থেকেই এ ধরনের অভিযোগ বেশি আসে। এনএসসির একটি সূত্র জানিয়েছে, মূলত এ ধরনের অপকর্ম ঠেকাতেই বিদেশ সফরের ক্ষেত্রে ফ্লাইটের অন্তত ১০ দিন আগে জিওর প্রস্তাব পাঠানোর নিয়ম করা হয়েছে। এনএসসির পরিচালক (ক্রীড়া) আমিনুল এহসান সরাসরি তা না বললেও তাঁর কথায়ও সে আভাস আছে, ‘আমি বলব না শুধু আদম পাচার রোধ করতে এই নিয়ম করেছি। তবে কোথাও কোথাও এসব খেলার নামে মানব পাচারের প্রশ্ন চলে আসে।’
অনেক সময় শুনি, কোনো কোনো ফেডারেশন ভুয়া খেলোয়াড় নিয়ে যায়। এনএসসির উদ্যোগটাকে তাই ভালোই বলব। এটা জবাবদিহির মধ্যে পড়ে।ফারহাদ জেসমিন, সাবেক অ্যাথলেট ও বিএও অ্যাথলেটস কমিশনের চেয়ারম্যানএনএসসির কাছে ফেডারেশন বা অ্যাসোসিয়েশন এত দিন জিওর জন্য খেলোয়াড়দের নামই শুধু পাঠাত। যাঁর নাম দেওয়া হতো, তিনি আসলেই খেলোয়াড় কি না বা খেলোয়াড় হলে তাঁর যোগ্যতা কী বা যোগ্য কাউকে বাদ দিয়ে অযোগ্য কাউকে নেওয়া হচ্ছে কি না, এসব যাচাই–বাছাই করা হতো না। এনএসসি তাই জানত না কিসের ভিত্তিতে একজন খেলোয়াড়কে দলে নির্বাচিত করা হয়েছে। নতুন নিয়মে এনএসসিকে এসব দিতে হবে।
জিওর জন্য আবেদনকারীদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করতে সময় লাগে বলে ১০ দিন আগে তালিকা চাওয়ার যুক্তি আছে। কিন্তু পারফরম্যান্স আর ফিটনেসের তথ্যপ্রমাণও পাঠানোর নিয়মটা একটু অভিনবই, যা নিয়ে অবশ্যই নানা রকম প্রশ্ন তোলা যায়। তবে জিওর জন্য ফ্লাইটের ১০ দিন আগে নাম চাওয়ার নিয়মটাকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের অ্যাথলেটস কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক অ্যাথলেট ফারহাদ জেসমিন লিটি বলেছেন, ‘অনেক সময় শুনি, কোনো কোনো ফেডারেশন ভুয়া খেলোয়াড় নিয়ে যায়। এনএসসির উদ্যোগটাকে তাই ভালোই বলব। এটা জবাবদিহির মধ্যে পড়ে।’
আরও পড়ুনবিশ্বকাপের আগে সৌদি লিগে খেলতে চেয়েছিলেন মেসি, সৌদি সরকারের ‘না’১১ ঘণ্টা আগেআদম পাচার যেহেতু সব ফেডারেশন করে না, ক্রিকেট-ফুটবলসহ অনেক ফেডারেশনের জন্য নির্বাচিত খেলোয়াড়দের তথ্য এনএসসিকে দেওয়াটা বিব্রতকর হতে পারে। কারণ, এই ফেডারেশনগুলো একটা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই দল গড়ে। তাদের সব তথ্য চাওয়া ফেডারেশনের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ কি না, এমন প্রশ্ন আসেই।ক্রীড়াঙ্গনে স্বজনপ্রীতি ঠেকাতেও এ নিয়ম ভূমিকা রাখবে বলে ফারহাদ জেসমিনের আশা, ‘অনেক ফেডারেশন অনেক সময় যোগ্যতার বিচার না করে নিজেদের পছন্দের খেলোয়াড় নিয়ে যায়। দেখে মনে হয়, বিদেশভ্রমণই মুখ্য, পারফরম্যান্স মুখ্য নয়।’ বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেছেন, ‘এটা ভালো উদ্যোগ। কারণ, এনএসসির জানার অধিকার আছে, বিদেশে টুর্নামেন্টে আমরা কাদের নিয়ে যাচ্ছি।’ সম্প্রতি হকি তারকা রাসেল মাহমুদকে বয়সের অজুহাতে বাদ দেয় হকি ফেডারেশন। এ নিয়ে সমালোচনা হলে এনএসসিকে বিষয়টি তদন্তও করতে হয়।
এনএসসির নতুন নিয়ম অনুযায়ী ক্রিকেট-ফুটবলসহ সব খেলাতেই বিদেশে দল পাঠানোর জন্য নির্বাচিত খেলোয়াড়দের নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে হবে। কিন্তু আদম পাচার যেহেতু সব ফেডারেশন করে না, ক্রিকেট-ফুটবলসহ অনেক ফেডারেশনের জন্য নির্বাচিত খেলোয়াড়দের তথ্য এনএসসিকে দেওয়াটা বিব্রতকর হতে পারে। কারণ, এই ফেডারেশনগুলো একটা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই দল গড়ে। তাদের সব তথ্য চাওয়া ফেডারেশনের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ কি না, এমন প্রশ্ন আসেই।
আরও পড়ুনআগে চা পরে লাঞ্চ—বদলে যাচ্ছে ক্রিকেটের শতবর্ষ পুরোনো এক রীতি১৫ ঘণ্টা আগেএনএসসির পরিচালক আমিনুল এহসান অবশ্য তা মনে করেন না, ‘প্রায় প্রতিদিনই এনএসসির কাছে অনেক খেলোয়াড় অভিযোগ করেন, কোনো না কোনো কর্মকর্তার অপছন্দের কারণে নাকি তিনি দল থেকে বাদ পড়েছেন। এ কারণেই খেলোয়াড় নির্বাচনের তথ্যগুলো এনএসসির জানা থাকলে সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়কে একটা উত্তর দেওয়া যায়। এটা ফেডারেশনের কাজে হস্তক্ষেপ নয়। স্বচ্ছতার স্বার্থে এনএসসি তা জানতে চাইতে পারে।’