দেশের গণ্ডি পেরিয়ে কলকাতার সিনেমায় অভিষেক হতে যাচ্ছে কাজী নওশাবার। মুক্তি পেতে যাচ্ছে তাঁর অভিনীত প্রথম টালিউড সিনেমা ‘যত কাণ্ড কলকাতাতেই’। অনিক দত্ত পরিচালিত এই সিনেমাটি আসছে দুর্গাপূজায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে বলে নিশ্চিত করেছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ফ্রেন্ডস কমিউনিকেশন। নওশাবা দুই বছর আগে সিনেমাটিতে অভিনয় করেছিলেন।
সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে এর মোশন পোস্টার। সিনেমার গল্প নির্মিত হয়েছে ফেলুদাভক্তদের স্মৃতিচারণা ও ধাঁধার সূত্রে। মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন আবীর চট্টোপাধ্যায়। নওশাবাকে দেখা যাবে বাংলাদেশি এক তরুণীর চরিত্রে, যে কলকাতায় আসে নিজের শিকড় খুঁজতে এবং এক রহস্যময় ঘটনার ভেতরে জড়িয়ে পড়ে।
নওশাবা বলেন, ‘সিনেমায় গল্পটি অসাধারণ। দর্শক যে ধরনের গল্প সিনেমায় দেখতে চায় এটি তেমনই। আমার চরিত্রটা বাংলাদেশ থেকে আসা একজন মেয়ের। যে তার শিকড় খুঁজতে এসে একধরনের ধাঁধায় জড়িয়ে পড়ে। সে আর আবীরের চরিত্রটি ফেলুদার বড় ভক্ত। যদিও এটি গোয়েন্দা গল্প নয়, তবে সিনেমার প্রতিটি পরতে পরতে রয়েছে ফেলুদা ও সত্যজিৎ রায়কে শ্রদ্ধা জানানোর প্রয়াস।’
সিনেমাটিতে যুক্ত হওয়াকে ‘ম্যাজিক’ বলে উল্লেখ করেন নওশাবা। তাঁর ভাষায়, ‘একদিন হঠাৎ অনিক দা টেক্সট করেন। এরপর অডিশন দিয়ে নির্বাচিত হই। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে শুটিং শুরু করি। এতদিন পর সেই সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে, তাও দুর্গাপূজার মতো একটা বড় উৎসবে– এটি দারুণ আনন্দের।’
এই সিনেমাটি তাঁর জীবনের এক বিশেষ অনুভূতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে জানিয়ে নওশাবা বলেন, ‘আমার বাবা বেঁচে থাকতে স্বপ্ন দেখতেন আমি ভালো কাজ করব। তিনি ফেলুদার বড় ভক্ত ছিলেন। আমি বিশ্বাস করি, সিনেমাটি দেখে তিনি অনেক খুশি হতেন। আমার পরিবারও খুব আনন্দিত, কারণ অনেক দিন পর আমি বড়পর্দায় ভালো একটি চরিত্রে আসছি।’
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে সিনেমার মুক্তির সময় কলকাতায় যাওয়ার পরিকল্পনাও আছে তাঁর। হলে হলে ঘুরে দর্শকের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করার ইচ্ছা রয়েছে এই অভিনেত্রীর। এদিকে, চলতি জুলাই মাসেই ‘কানাগলি’ নামের একটি ওয়েব সিরিজে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা গেছে নওশাবাকে। এটি পরিচালনা করেছেন আহমেদ জিহাদ। এতে বেশ দর্শক সাড়াও পাচ্ছেন তিনি।
ওয়েব মাধ্যম, সিনেমায় কাজের পাশাপাশি মঞ্চেও সরব নওশাবা। তাঁর নাট্যদল ‘টুগেদার উই ক্যান’ নতুন নাটক মঞ্চস্থ করবে আগামী ৮ আগস্ট। এতে তাঁর নির্দেশনায় নাটকটিতে সারা বাংলাদেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কিছু মানুষ অভিনয় করবেন বলে জানা গেছে। নাটকটিতে থাকবে বাঙালির ফেলে আসা ইতিহাস। থাকবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি থেকে শুরু করে ৫২, ৭১, ৯০ এবং গত বছরের জুলাই অভ্যুত্থান। এমনটিই জানিয়েছেন নওশাবা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অভ ন ত র চর ত র নওশ ব কলক ত
এছাড়াও পড়ুন:
দায় স্বীকার করে আদালতে হামলাকারীর জবানবন্দি
চাঁদপুর সদরে জুমার নামাজ শেষে মসজিদের ভেতরেই কুপিয়ে জখম করা আহত ইমাম ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি এখন আগের চেয়ে সুস্থ আছেন বলে জানিয়ে পরিবার। অন্যদিকে হামলাকারী বিল্লাল হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শনিবার বিকেলে চাঁদপুরের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহাদাতুল হাসান আল মুরাদের আদালতে তিনি জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি শেষে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়।
শুক্রবার চাঁদপুর সদরের প্রফেসরপাড়া মোল্লা বাড়ি জামে মসজিদে শুক্রবার জুমার নামাজে খুতবা ও আলোচনার সময় ইমাম নূর রহমানের বক্তব্যে ক্ষিপ্ত হন ওই এলাকার তরকারির ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন। নামাজ শেষে বিল্লাল চাপাতি নিয়ে মসজিদের ভেতরেই ইমামের ওপর হামলা চালান। পরে মুসল্লিরা আহত অবস্থায় ইমামকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন এবং হামলাকারীকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
এ ঘটনায় রাতেই চাঁদপুর মডেল থানায় মামলাটি করেন আহত নূর রহমানের বড় ছেলে আফনান তাকি।
শনিবার আফনান তাকি বলেন, বাবাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে এসেছি। বর্তমানে তিনি হলি কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং শঙ্কামুক্ত।
তিনি আরও বলেন, আমার বাবার ওপর বর্বরোচিত হামলার বিচার চাই।
এদিকে বিল্লালকে শনিবার চাঁদপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহাদাতুল হাসান আল মুরাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। পরে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন তিনি। পরে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এসব তথ্য জানিয়েছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী আবদুল কাদের জিলানি। তিনি বলেন, রোববার বিল্লালকে আবার কোর্টে হাজির করলে ৭ দিন রিমান্ড চাওয়া হবে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আব্দুর রকিব জানান, বিল্লাল নিজেই এই নির্মম কাজটি সম্পন্ন করেছেন। আজ তাকে আদালতে পাঠানো হলে দায় স্বীকার করে তিনি জবানবন্দি দেন।
বিল্লাল ধর্মীয় কোনো উগ্র সংগঠনের সঙ্গে জড়িত কিনা, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এমন কোনো তথ্য এখন পর্যন্ত পাইনি। তদন্ত চলছে।
এদিকে চাঁদপুরে ইমামের ওপর হামলার ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। শনিবার বিকেলে চাঁদপুর শহরের কালীবাড়ি বাইতুল আমিন জামে মসজিদের সামনে এ ঘটনার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও প্রতিবাদ মিছিল করেছে শহর জামায়াত। কর্মসূচিতে জেলা জামায়াতের আমির বিল্লাল হোসেন, জেলা সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শাহাজাহান মিয়াসহ উপজেলা ও শহর জামায়াতের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।