ভাস্কর নভেরা আহমেদ চেতনাগত জায়গা থেকে যে শিল্পের চর্চা করেছেন, সে কাজই সমাজ আর সংস্কৃতির রূপান্তর ঘটিয়েছে। তাঁর ভাস্কর্য রাষ্ট্র-সমাজ আর সংস্কৃতিকে আমূল বদলে দেয় না, একটা গতিমুখের সন্ধান দেয়। কারণ, পাকিস্তান আমলে পূর্ববাংলায় নভেরার হাতেই প্রথম ভাস্কর্যের উদ্বোধন হয়।

আজ শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ‘ভাস্কর্য: আধুনিকতার প্রাথমিক পর্ব ও নভেরার উত্থান’ শীর্ষক আলোচনায় ভাস্কর নভেরা আহমেদের কাজের মূল্যায়নে এসব কথা বলেন বক্তারা। শিল্পকলা একাডেমির ষষ্ঠ জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনীর ভাববিনিময় সভার প্রথম পর্বে এই আলোচনা হয়। তাতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন কবি ও প্রবন্ধকার সাখাওয়াত টিপু।

সাখাওয়াত টিপু তাঁর প্রবন্ধে বলেন, শিল্পী নভেরা খুব শ্রেণিসংগ্রামের চেতনা থেকে শিল্প সৃষ্টি করেছেন, তা নয়। শিল্পীর সর্বদা শ্রেণিসচেতন হতে হবে এমন নিয়মও নেই। প্রকৃতিবাদী নভেরা চেতনাগত জায়গা থেকে শিল্পের চর্চা করেছেন, সে কাজই সমাজ আর সংস্কৃতির রূপান্তর ঘটিয়েছে।

ভাববিনিময় সভার প্রথম পর্বের এই আলোচনায় আলোচক হিসেবে শিল্প সমালোচক রেজাউল করিম সুমন বলেন, ‘নভেরার আগে আমাদের এই ভূখণ্ডে আর কোনো আধুনিক ভাস্কর্যশিল্পীর কাজের খবর পাওয়া যায় না। নভেরার শিল্পের উন্মেষের পেছনে কলকাতার শৈশব, পরিবারে ভাস্কর্য শিক্ষা ও শিল্পচর্চার অনুপ্রেরণা ছিল।’

‘ভাস্কর্য: আধুনিকতার প্রাথমিক পর্ব ও নভেরার উত্থান’ শীর্ষক আলোচনায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন কবি ও প্রবন্ধকার সাখাওয়াত টিপু। আজ শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

একই প্রার্থী একাধিক আসনে নয়, দ্বিকক্ষের সংসদ; নির্বাচনে যত সুপারি

জাতীয় নির্বাচনে এলেই বড় দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের একাধিক আসনে প্রার্থী হওয়ার আলোচনা গতি পায়। দলকে জেতাতে দলীয় প্রধানদের জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে ভোটে জয় পাওয়ার এই ধারা বাংলাদেশে বহু পুরোনো। তবে এই ব্যবস্থা আর রাখতে চায় না নির্বাচন সংস্কার কমিশন। তাদের জমা দেওয়া সংস্কার প্রস্তাবে একজন প্রার্থীর আর একাধিক আসনে ভোটে না দাঁড়ানোর কথাই বলা হয়েছে।

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে গঠিত কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বুধবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে এসে এসব বিষয়ে তথ্য তুলে ধরেন। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে সংস্কার প্রস্তাব জমা দেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, মোট ১৬টি ক্ষেত্রে ১৫০টি সুপারিশ করেছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।

আরো পড়ুন:

ভোটার তালিকা হালনাগাদে সহায়তা করবে ইউএনডিপি 

বেশি সংস্কার না চাইলে ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট: প্রেস সচিব

বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বাধীন কমিশনের সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে- কোনো আসনে ৪০ শতাংশ ভোট না পড়লে সেখানে ভোট বাতিল হয়ে যাবে। ‘না’ ভোটেরও ব্যবস্থা থাকবে। ৪০ শতাংশের বেশি ভোট না পড়লে অথবা ‘না ভোট’ বেশি হলে উভয় ক্ষেত্রেই নির্বাচন বাতিল হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে নতুন করে আবার নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।

বদিউল আলমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৫০টি সুপারিশের মধ্যে একজন প্রধানমন্ত্রী সর্বোচ্চ দুইবারের এই পদে থাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। দুইবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের অযোগ্য করার সুপারিশ করা হয়েছে। একই ব্যক্তি একই সঙ্গে যাতে দলীয় প্রধান, প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা না হতে পারেন, সেই বিধান চালু করারও সুপারিশ করেছে কমিশন।

জাতীয় সংসদের আসন সংখ্যা আরো ১০০ বাড়িয়ে ৪০০ করার প্রস্তাব করা হয়েছে সুপারিশে। যার মধ্যে ১০০ আসন নারীদের জন্য বরাদ্দ রাখার কথা বলা হয়েছে।

সংস্কার কমিশন সংসদকে দুই কক্ষবিশিষ্ট করার প্রস্তাব দিয়েছেন, যেখানে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন উভয় কক্ষের ভোটে। 

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ চার মাস করার প্রস্তাব দিয়ে সংস্কার কমিশন সুপারিশ করেছে নির্বাচনে ইভিএম বাতিল করা হবে। 

প্রবাসী ভোটারদের পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার সুযোগ ও অনলাইন ভোটিং পদ্ধতি চালুরও সুপারিশ করেছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।

ঢাকা/হাসান/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ