সমাজ-সংস্কৃতিতে রূপান্তরের গতিমুখ দেয় ভাস্কর নভেরা আহমেদের কাজ
Published: 10th, January 2025 GMT
ভাস্কর নভেরা আহমেদ চেতনাগত জায়গা থেকে যে শিল্পের চর্চা করেছেন, সে কাজই সমাজ আর সংস্কৃতির রূপান্তর ঘটিয়েছে। তাঁর ভাস্কর্য রাষ্ট্র-সমাজ আর সংস্কৃতিকে আমূল বদলে দেয় না, একটা গতিমুখের সন্ধান দেয়। কারণ, পাকিস্তান আমলে পূর্ববাংলায় নভেরার হাতেই প্রথম ভাস্কর্যের উদ্বোধন হয়।
আজ শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ‘ভাস্কর্য: আধুনিকতার প্রাথমিক পর্ব ও নভেরার উত্থান’ শীর্ষক আলোচনায় ভাস্কর নভেরা আহমেদের কাজের মূল্যায়নে এসব কথা বলেন বক্তারা। শিল্পকলা একাডেমির ষষ্ঠ জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনীর ভাববিনিময় সভার প্রথম পর্বে এই আলোচনা হয়। তাতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন কবি ও প্রবন্ধকার সাখাওয়াত টিপু।
সাখাওয়াত টিপু তাঁর প্রবন্ধে বলেন, শিল্পী নভেরা খুব শ্রেণিসংগ্রামের চেতনা থেকে শিল্প সৃষ্টি করেছেন, তা নয়। শিল্পীর সর্বদা শ্রেণিসচেতন হতে হবে এমন নিয়মও নেই। প্রকৃতিবাদী নভেরা চেতনাগত জায়গা থেকে শিল্পের চর্চা করেছেন, সে কাজই সমাজ আর সংস্কৃতির রূপান্তর ঘটিয়েছে।
ভাববিনিময় সভার প্রথম পর্বের এই আলোচনায় আলোচক হিসেবে শিল্প সমালোচক রেজাউল করিম সুমন বলেন, ‘নভেরার আগে আমাদের এই ভূখণ্ডে আর কোনো আধুনিক ভাস্কর্যশিল্পীর কাজের খবর পাওয়া যায় না। নভেরার শিল্পের উন্মেষের পেছনে কলকাতার শৈশব, পরিবারে ভাস্কর্য শিক্ষা ও শিল্পচর্চার অনুপ্রেরণা ছিল।’
‘ভাস্কর্য: আধুনিকতার প্রাথমিক পর্ব ও নভেরার উত্থান’ শীর্ষক আলোচনায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন কবি ও প্রবন্ধকার সাখাওয়াত টিপু। আজ শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৮ কুকুরছানা হত্যা: সরকারি বাসভবন ছাড়লেন সেই কর্মকর্তা
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় পুকুরে ডুবিয়ে আটটি কুকুরছানাকে মারার ঘটনায় সরকারি বাসভবন ছেড়েছেন উপজেলা ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়ন।
সোমবার (০১ ডিসেম্বর) উপজেলা প্রশাসন থেকে তাকে এ নির্দেশ দিয়ে নোটিশ জারি করা হয়। পরে আজ মঙ্গলবার (০২ ডিসেম্বর) তিনি পরিবার নিয়ে সরকারি বাসভবন ছেড়ে দিয়ে ভাড়া বাসায় উঠেছেন।
আরো পড়ুন:
কুকুরছানা হত্যার ঘটনায় ক্ষুব্ধ তারকারা
পাবনায় ৮ কুকুরছানা পুকুরে ডুবিয়ে হত্যার অভিযোগ
ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘‘সোমবার (১ নভেম্বর) তাকে বাসা ছেড়ে দিতে নোটিশ দেওয়া হয়। আজ তিনি বাসা খুঁজে নিয়ে মালামাল নিয়ে সরকারি বাসভবন ছেড়ে চলে গেছেন।’’
এদিকে, কুকুরছানা হত্যার দায়ে মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিয়েছে ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর।
ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বলেন, ‘‘কুকুরছানা হত্যার ঘটনায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাতে ঈশ্বরদী থানায় মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে।’’
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ. স. ম আব্দুন নুর বলেন, ‘‘মামলার এজাহার লেখার কাজ চলছে। এজাহার পেলে মামলা রুজু হবে।’’
দীর্ঘদিন ধরে ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের একটি কোণায় থাকতো এই কুকুর। কুকুরটি বিশ্বস্ত হওয়ায় মানুষজন তাকে খুব ভালবাসত। নাম রাখা হয় টম। এক সপ্তাহ আগে টম আটটি বাচ্চা প্রসব করে। সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে তার ছানাগুলো না পেয়ে পাগলপ্রায় অবস্থায় ছুটাছুটি করতে দেখা যায় মা কুকুর টমকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈশ্বরদী উপজেলা পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়ন ও তার স্ত্রী আটটি কুকুর ছানাকে বস্তার মধ্যে ভরে হত্যার উদ্দেশ্য রবিবার রাতের কোনো এক সময় উপজেলা পরিষদের পুকুরে ফেলে দেন। সোমবার সকালে মরা কুকুর ছানাগুলো পাওয়া যায়। দুপুরের পর মৃত কুকুর ছানাগুলোকে ইউএনওর বাসভবনের পাশে মাটি চাপা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত হাসানুর রহমান নয়ন বলেন, দরজার সামনে ডাকাডাকি করায় তার স্ত্রী বিরক্ত হয়ে বাসার কাজের মহিলাকে দিয়ে কুকুরছানাগুলো বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে দিয়েছিল।
মঙ্গলবার (০২ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলার সামনে মা কুকুরটিকে ঘুরতে দেখা যায়। বারবার সরানোর চেষ্টা করলেও সরানো যায়নি। পরে সরানো গেলেও সারা দিন উপজেলা চত্বরে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে।
ঢাকা/শাহীন/বকুল