গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার জামালপুর এলাকায় ডাকাতিকালে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় এলাকাবাসী ধাওয়া করে ডাকাত দলের দুই সদস্যকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার বড়ইবাড়ী-জামালপুর সড়কের হাটুরিয়া চালা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যবসায়ীর নাম সজীব হোসেন (৩৮)। তিনি কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালি ইউনিয়নের গাবচালা এলাকার মুক্তার আলীর ছেলে। সজীব এলাকায় মাটি সরবরাহের ব্যবসা করতেন। এতে রয়েল মিয়া নামের অপর এক ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন।

এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, মাটি ব্যবসায়ী সজীব হোসেন ও রয়েল মিয়া বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে মোটরসাইকেলে করে ব্যবসায়িক কাজে হাটুরিয়া চালা বাজারে যাচ্ছিলেন। বড়ইবাড়ী-হাটুরিয়া চালা সড়ক ধরে বাজারে পৌঁছার আগেই বনের ভেতর তাঁদের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে একদল ডাকাত। তখন তাঁরা মোটরসাইকেল ফেলে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় ডাকাত দলের সদস্যরা ব্যবসায়ী সজীব হোসেনকে ধরে কুপিয়ে জখম করে। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। অপর ব্যবসায়ী রয়েল দৌড়ে গিয়ে ‘ডাকাত পড়েছে’ বলে চিৎকার করলে এলাকার মানুষজন এগিয়ে আসেন। তাঁরা ধাওয়া দিয়ে ডাকাত দলের দুই সদস্যকে ধরে পিটুনি দেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ডাকাত দলের দুই সদস্যকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। তাঁদের একজনকে সফিপুর মডার্ন হাসপাতালে, অন্যজনকে কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রিয়াদ মাহমুদ বলেন, ডাকাত দলের হামলায় একজন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন। এলাকাবাসী দুই ডাকাতকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ড ক ত দল র ব যবস য় উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবকে বলেছিলাম, যা কর না কর, আওয়ামী লিগ করবা না—মেজর হাফিজ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিতে নিষেধ করেছিলেন। সাকিব পরামর্শটি গ্রহণ করেননি বলে এখন বিপদে পড়েছেন। আজ ঢাকায় বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক অ্যাসোসিয়েশনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

একই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফেব্রুয়ারিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করা তামিম ইকবাল। হাফিজউদ্দিন তামিমকেও রাজনীতির বিষয়ে সতর্ক থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন হাফিজ।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া সাকিব গত আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে দেশের বাইরে আছেন। তিনি দেশ ফিরতে পারছেন না।

নির্বাচনের আগে সাকিব তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন জানিয়ে হাফিজউদ্দিন বলেন, ‘সাকিব আল হাসান আমার বাসায় এসেছিল একদিন। আমার পরিচিত সামরিক বাহিনীর এক কর্মকর্তা তাকে নিয়ে এসেছিল। আমার সঙ্গে পরিচয় ছিল না। এমনিই খেলা দেখেছি টেলিভিশনে। বলল আপনার সঙ্গে দেখা করতে চায়। অ্যাডভাইস নিতে চায়। বললাম, আমি তো বিরোধী দল করি। সে তো বিরোধী দলে যোগ দেওয়ার জন্য নিশ্চয়ই আসবে না। পরে আসলো।  তাকে অনেক কথাবার্তা বললাম। তাকে একটা উপদেশ দিয়েছি, যেটি সে গ্রহণ না করে বিপদে পড়েছে। তাকে আমি বলেছি ‘‘যা কর না কর, আওয়ামী লীগ কোনো দিন করবা না।’’ সে এটা শুনে একটু বিমর্ষ হলো। তার ধারণা আওয়ামী লীগে গেলে মন্ত্রী হবে, এটা-ওটা হবে। এমপি তো হবেই।’

আশির দশকে রাজনীতিতে নামার আগে হাফিজউদ্দিন ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড়। নিজের খেলোয়াড়ি জীবনের কথা সাকিবকে মনে করিয়ে দিয়েছিলেন জানিয়ে হাফিজ বলেন, ‘তাকে বললাম, দেখ আমিও তোমার মতো খেলোয়াড় ছিলাম। আমারও পরিচিতি ছিল। একসময় পাকিস্তান জাতীয় দলে আমি একাই বাঙালি ছিলাম। অনেক সুযোগ-সুবিধা নিতে পারতাম। কিন্তু খেলোয়াড়ি অবস্থায়, জাতীয় দলে থাকা অবস্থায় রাজনীতিতে যোগদান করা আমার ঠিক মনঃপূত হচ্ছে না।’

রাজনীতিতে যোগ না দিলে সাকিব এখন বেশ ভালো থাকতেন বলে মনে করেন হাফিজ, ‘(বলেছিলাম) তুমি এখন রাজনীতিতে যেয়ো না। আর গেলে এই দলটির (আওয়ামী লীগ) বেশি দিন আর আয়ু নাই। সে চুপচাপ করে পরে চলে গেল। যদি সে আমার কথা শুনত, এভাবে রাজনীতিতে না যেত, নির্বাচনে না যেত, আজ অনেক সম্মানের সঙ্গে ঢাকার রাজপথে বিচরণ করতে পারত। এখন তো তার বাড়ি আসাই মুশকিল হবে।’

সাকিবের উদাহরণ টেনে অনুষ্ঠানে উপস্থিত তামিমকে রাজনীতি বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শও দিয়েছেন বিএনপির এই নেতা, ‘এখানে যারা ক্রিকেটের, ফুটবলের, হকির খেলোয়াড় আছে, বিশেষ করে তামিম ইকবালকে বলব, তার যথেষ্ট নাম আছে। তার ব্যাটিং আমার খুব পছন্দ। এ রকম অ্যাগ্রেসিভ খেলোয়াড় এখন দেখাই যায় না। সুতরাং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড তাকে হ্যান্ডল করতে পারে নাই। যার জন্য মানসিকভাবে খেলার আগে বিড়ম্বিত ছিল। সময়ের আগেই হয়তো কোনো কোনো ফরম্যাট থেকে অবসর নিয়েছে।’

বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে আওয়ামী লীগের নেতিবাচক প্রভাবের প্রসঙ্গে হাফিজ বলেন, ‘ক্রীড়াঙ্গনের জন্য আমাদের রাজনীতিবিদরা তেমন কিছু করেন নাই আজ অবদি। অনেক কিছুই করানোর রয়েছে। এর একটা প্রধান কারণ হলো এ দেশের একটি পুরোনো রাজনীতিক দল আওয়ামী লীগ, তারা এ দেশের খেলাধুলার অতীতের সকল ট্রাডিশনকে পাল্টে দিয়েছেন। ক্রীড়াসুলভ মনোবৃত্তি এদের মধ্যে একেবারেই দেখা যায় না। এরা অনেক ক্রীড়াবিদকেও বিপদে ফেলেছে।’

রাজনীতি ও ক্রীড়াঙ্গনের পার্থক্য তুলে ধরে হাফিজ বলেন, ‘ক্রীড়াঙ্গন একটি অন্য ধরনের অঙ্গন। রাজনীতি থেকে অনেক দূরের অঙ্গন। ক্রীড়াঙ্গনে যারা রথী মহারথী, যারা সময় দেন, তাদের হৃদয় অন্যরকম, ব্যঞ্জনা অন্যরকম। মনমানসিকতা অন্যরকম। রাজনীতিবিদদের সঙ্গে ক্রীড়াবিদদের মনমানসিকতার অনেক তফাত রয়েছে। আমি কখনোই চিন্তা করি নাই রাজনীতি করব।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ