ম্যাচ জিতিয়ে মর্মাহত ডি ব্রুইনে জানালেন, চুক্তি নবায়নের প্রস্তাব
Published: 3rd, May 2025 GMT
কেভিন ডি ব্রুইনে আর ম্যানচেস্টার সিটি, এই নাম দুটি যেন সমার্থক। পেপে গার্দিওলার অধীনে যে শক্তিশগালী ম্যানসিটি গড়ে উঠেছিল তার মূল স্তম্ভ ছিলেন এই বেলজিয়ান মিডফিল্ডার। তবে বলা হয়, সব কিছুরই ইতি আছে। সেই বানীকে সত্যতা দিয়ে, হঠাৎ গত মাসে ডি ব্রুইনে জানান, সিটি তার সঙ্গে চুক্তি নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে!
শুক্রবার (২ মে) ম্যানসিটির ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে নিজের দ্বিতীয় শেষ ম্যাচ খেলেছেন ডি ব্রুইনে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের (ইপিএল) ম্যাচে উলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্সকে ১-০ গোলে হারিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে ম্যানসিটি। সামনের মৌসুমে তাদের চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলা নিয়ে যে সংশয়ের মেঘ তৈরি হয়েছিল সেটা কেটে গিয়েছে আপাতত।
ঘরের মাঠ ইতিহাদে প্রথমার্ধে কিছুটা চাপে থাকলেও, ৩৫তম মিনিটে জেরেমি ডকুর বাঁ দিক থেকে করা কাট-ব্যাকে ডি ব্রুইনের সাইড ফুটের শটে বল জালে জড়িয়ে দেন। স্টেডিয়াম জুড়ে তখন গর্জে ওঠে কোরাস: “ওহ, কেভিন ডি ব্রুইনে!” জন্ম নেয় এক আবেগঘন মুহূর্তেরে। এটি ৩৩ বছর বয়সী ডি ব্রুইনার ইতিাহাদে দ্বিতীয় শেষ ম্যাচ।
আরো পড়ুন:
ম্যাচ জিতিয়ে মর্মাহত ডি ব্রুইনে জানালেন, চুক্তি নবায়নের প্রস্তাব
গার্দিওয়ালার ভয়, চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা হারালে বড় ট্রান্সফার করতে পারবেন না
ম্যাচ শেষে স্কাই স্পোর্টসকে ডি ব্রুইনে বলেন, “আমি জানি এখানে (ইতিহাদে) এখনও একটি ম্যাচ বাকি আছে। আমি আমার কাজ ঠিকমতো করার চেষ্টা করি, আজকেও সেটা করেছি। গর্বিত যে ঠিকভাবে খেলতে পেরেছি।”
গত দুই মৌসুমে চোটের সঙ্গে লড়াই করা ডি ব্রুইনে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন যে, ক্লাব তার চুক্তি নবায়নের প্রস্তাব দেয়নি। তিনি বিশ্বাস করেন তার এখনও অনেক কিছু দেওয়ার আছে তার। এই ম্যাচে সেই দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। ডি ব্রুইনে বলেন, “অনেক সতীর্থ বলেছে, দুঃখজনক যে আমাকে চলে যেতে হবে। জীবনে এমনটাই হয় কখনো কখনো। আমি দলের একজন হিসেবে সব দিয়েছি, জিততে চেয়েছি, এখনও চাই।”
ভবিষ্যত সম্পর্কে জানতে চাইলে ডি ব্রুইনে জানান, “দুঃখজনকভাবে, আমি এখনো জানি না। আমি দেখিয়েছি যে আমি এখনো খেলতে পারি, না হলে গত চার-পাঁচ সপ্তাহে যা করেছি, তা করতে পারতাম না।”
এই জয়ে গার্দিওলার দল ৩৫ ম্যাচে ৬৪ পয়েন্ট নিয়ে অস্থায়ীভাবে এক ধাপ ওপরে উঠে এসেছে। তারা চতুর্থ স্থানে থাকা নিউক্যাসলের চেয়ে ২ পয়েন্ট এবং চেলসি ও নটিংহ্যাম ফরেস্টের চেয়ে ৪ পয়েন্টে এগিয়ে। যদিও এই তিন দলেরই একটি করে ম্যাচ হাতে আছে।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ফিলিপাইনে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে নিহত বেড়ে ১১৪, জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা
চলতি বছরের অন্যতম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় কালমেগির তাণ্ডবে বিধ্বস্ত ফিলিপাইন। দেশটির মধ্যাঞ্চলে কালমেগির আঘাতে ভয়াবহ বন্য দেখা দিয়েছে, যার ফলে কমপক্ষে ১১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস ‘জাতীয় দুর্যোগ’ ঘোষণা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
আরো পড়ুন:
ঘূর্ণিঝড় মন্থা, বন্দরে ২ নম্বর সতর্কতা
‘সঠিক স্থান নির্ধারণ না হওয়া আশ্রয়কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হবে’
প্রতিবেদনে বলা হয়, কালমেগির প্রভাবে ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলীয় সেবু দ্বীপের সব শহর প্লাবিত হয়েছে। কর্দমাক্ত বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গেছে গাড়ি, ট্রাক এমনকি বিশাল আকারের কনটেইনারও।
সেবুর প্রতিরক্ষা অফিসের ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর রাফায়েলিটো আলেজান্দ্রো জানান, কেবল সেবুতেই এখন পর্যন্ত ৯৯ জনের প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কালমেগির প্রভাবে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৪ জনে। আহত হয়েছে ৮২ জন। এছাড়া ১২৭ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট মার্কোস বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানান, তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কারণ ঘূর্ণিঝড় কালমেগির আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং সপ্তাহান্তে দেশটিতে আরেকটি ঝড় ‘উওয়ান’ আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তিনি স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, “প্রায় ১০ থেকে ১২টি অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই যদি এতগুলো অঞ্চল এই ধরনের প্রভাবের সাথে জড়িত থাকে, তাহলে এটি একটি জাতীয় দুর্যোগ।”
জাতীয় দুর্যোগের মানে হলো, এমন এক পরিস্থিতি যেখানে ব্যাপক হতাহত, সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের জীবিকা নির্বাহ ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
এটি সরকারি সংস্থাগুলোকে জরুরি তহবিল সংগ্রহ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য ও পরিষেবা ক্রয় এবং সরবরাহ দ্রুত করার জন্য আরও ক্ষমতা দেয়।
স্থানীয়ভাবে ‘টিনো’ নামে পরিচিত ঘূর্ণিঝড় কালমেগি মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্বর) ভোরে ফিলিপাইনের স্থলভাগে আঘাত হানে। এতে সেবুর আবাসিক এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, ছোট অনেক বাড়িঘর বন্যার পানিতে ভেসে গেছে, শহরজুড়ে কাদার ঘন স্তুর পড়েছে। উদ্ধারকারী দল ঘরের ভেতরে আটকা পড়া মানুষদের উদ্ধার করতে নৌকা ব্যবহার করছে।
ফিলিপাইনে প্রতিবছর গড়ে অন্তত ২০টি ঝড় ও টাইফুন আঘাত হানে। পরপর দুটি টাইফুনে এক ডজনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং অবকাঠামো ও ফসলের ক্ষতি হওয়ার মাত্র এক মাস পরই সর্বশেষ এই ঘটনাটি ঘটল।
সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে ফিলিপাইনে সুপার টাইফুন রাগাসা আঘাত হেনেছিল এবং তার পরেই আসে টাইফুন বুয়ালোই।
আগের মাসগুলোতে, বর্ষা মৌসুমে দেশটি ব্যাপকভাবে বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। ওই ঘটনায় নিম্নমানের বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর, মধ্য ফিলিপাইনে ৬ দশমিক ৯ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর কয়েক ডজন মানুষ নিহত ও আহত হয়েছিল, যার ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি ছিল সেবুতে।
ঘূর্ণিঝড় কালমেগি আজ বৃহস্পতিবার ফিলিপাইন ছেড়ে মধ্য ভিয়েতনামের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, যেখানে ইতিমধ্যেই রেকর্ড বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সেপ্টেম্বরে দুটি ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ভিয়েতনামে প্রায় ২৫০ জন নিহত হয়েছিলেন।
পূর্বাভাস অনুসারে, ঘূর্ণিঝড় কালমেগি শুক্রবার সকালে মধ্য ভিয়েতনামে আঘাত হানবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সেখানকার ৫০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল অথবা পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।
ভিয়েতনাম ইতিমধ্যেই এক সপ্তাহ ধরে বন্যা ও রেকর্ড বৃষ্টিপাতের সাথে লড়াই করছে। দেশটির বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র এখনও বন্যার কবলে রয়েছে।
থাইল্যান্ডও ঝড়ের প্রভাবের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা কালমেগির প্রভাবে সম্ভাব্য আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের সতর্কতা জারি করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ