নাটোরে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক কর্মীকে চলন্ত অটোরিকশায় (ইজিবাইক) মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের দুই নেতার বিরুদ্ধে। আজ রোববার দুপুরে জেলা শহরের কানাইখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মারধরের শিকার ওই ছাত্রলীগ কর্মীর নাম ফয়সাল হোসেন (২৫)। মারধরকারীরা নাটোর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি নাঈম ও সাধারণ সম্পাদক রিমন বলে জানা গেছে।

এ ঘটনার ১১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, অটোরিকশায় শুইয়ে ছাত্রলীগ কর্মী ফয়সালের পিঠের ওপর জুতা পায়ে চেপে ধরে আছেন আরেক তরুণ। সঙ্গে থাকা আরও কয়েকজন উচ্চ স্বরে গান বাজাচ্ছেন। পায়ের নিচে থাকা ফয়সাল চিৎকার করে ছেড়ে দেওয়ার আকুতি জানাচ্ছেন। কিন্তু নির্যাতনকারী তরুণেরা তাতে সাড়া দিচ্ছেন না। এভাবেই শহরের প্রধান সড়কে প্রায় দুই কিলোমিটার ওই তরুণকে ঘোরানো হয়।

ফয়সাল গত বছরের ৩ ও ৪ আগস্ট নাটোরের সাবেক এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুল বাহিনীর সঙ্গে যোগ দিয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

ছাড়া পেয়ে ফয়সাল হোসেন বলেন, দুপুরে আমি ফায়ার সার্ভিসের মোড় থেকে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলাম। এ সময় পেছন থেকে মোটরসাইকেলে এসে আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে নাটোর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি নাঈম ও সাধারণ সম্পাদক রিমন। আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই রিকশায় তুলে সিটের নিচে পা রাখার জায়গায় আমাকে শুইয়ে পেছন থেকে দুই হাত ধরে মারধর শুরু করে। এ সময় আমার পকেটে থাকা মানিব্যাগের সব টাকাও নিয়ে নেয় তারা। এভাবে পুরো শহর ঘুরায়।

ফয়সাল আরও বলেন, আমার অপরাধ কি জানতে চাইলে, তারা বলছিল তুই ছাত্রলীগ করিস, এটাই তোর অপরাধ। পরে লিখিত মুচলেকা নিয়ে তারা আমার মা-বাবার কাছে আমাকে তুলে দেয়।

এ ঘটনার বিষয় জানতে নাইম ও রিমনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাঁদের নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

নাটোর পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো.

মোহন বলেন, অনেকেই এখন নিজেদের ছাত্রদল হিসেবে পরিচয় দেয়। যারা ছাত্রলীগ কর্মীকে পিটিয়ে শহর ঘুরিয়েছে, তারা ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত নয়। তারপরও আমরা বিষয়টি নিয়ে খোঁজ করছি। যদি সংগঠনের কেউ জড়িত থাকে তবে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সদর থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুর রহমান বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনার খবর জানা নেই। কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল ছ ত রদল র ম রধর ফয়স ল

এছাড়াও পড়ুন:

ঋতুপর্ণা চাকমার গ্রামের বাড়িতে রিজভী

বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড় ঋতুপর্ণা চাকমার মায়ের অসুস্থতার খবরে তার গ্রামের বাড়িতে গেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বুধবার (৯ জুলাই) সকালে বৃষ্টি, কাদাপানি এবং ছড়া মাড়িয়ে ঋতুপর্ণার বাড়ি রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার দুর্গম মগাছড়ি গ্রামে যান তিনি।

ঋতুপর্ণা চাকমা মা ভুজোপতি চাকমা ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত। ইতোমধ্যে তিনি তিনটি কেমো দিয়েছেন। প্রতি ২১ দিন অন্তর অন্তর তাকে চট্টগ্রাম নিয়ে কেমোথেরাপি দিতে হচ্ছে।

মগাছড়ি গ্রামে পৌঁছে রুহুল কবির রিজভী ঋতুপর্ণার মা ভুজোপতি চাকমার সঙ্গে কথা বলেন। তিনি তার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন। তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দেন ভুজোপতি চাকমার কাছে।

আরো পড়ুন:

চৌদ্দগ্রামের ৩ মামলা থেকে খালেদা জিয়াকে অব্যাহতি

তিন আগ্নেয়াস্ত্রসহ আ.লীগ-বিএনপির ২ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

এসময় ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা এবং জেলা বিএনপি থেকে এক লাখ টাকা সহযোগিতা প্রদান করা হয় ভুজোপতি চাকমাকে। প্রতি মাসে কেমোথেরাপি দেওয়ার জন্য মাসে ৩০ হাজার টাকা করে আমরা বিএনপি পরিবার থেকে প্রদান করার ঘোষণা দেওয়া হয়।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, “জাতীয় নারী ফুটবলের দলের খেলোয়াড় ঋতুপর্ণা চাকমার মা অসুস্থ। এই খবর শুনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দ্রুত ঋতুপর্ণা চাকমার মায়ের সঙ্গে দেখা করার নির্দেশনা দেন। নির্দেশনা পেয়ে আজ সকালে মগাছড়ি গ্রামে তার বাড়িতে আসি। ঋতুপর্ণা চাকমার মায়ের সঙ্গে দেখা করে তার রোগমুক্তির প্রার্থনা করেছি। তাকে তারেক রহমানের সহযোগিতা পৌঁছে দিয়েছি।” 

মগাছড়ি গ্রামে যাওয়া সড়ক নিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, “গত ১৭ বছর ধরে উন্নয়নের যে বুলি উড়ানো হয়েছে, তার প্রমাণ তো আজকে আমরা এখানে এসে দেখতেই পেলাম।”

এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মীর হেলাল উদ্দিন, আমরা বিএনপি পরিবার-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, জেলা বিএনপির সভাপতি দীপু চাকমা, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদসহ জেলা ও উপজেলার নেতারা।

ঢাকা/শংকর/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ