কুষ্টিয়ায় টেনে হিঁচড়ে রাস্তায় নিয়ে নারী চিকিৎসক ও তার স্বামীকে বেধড়ক মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (৬ মে) রাত সাড়ে ১০টায় হওয়া মামলায় তিনজন নারীর নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরো ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ভুক্তভোগী চিকিৎসক শারমিন সুলতানার স্বামী মুহাম্মদ মাসুদ রানা বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, সোমবার (৫ মে) দুপুরে তাঁর স্ত্রী শারমিন সুলতানা (৩৭) শহরের কোর্টপাড়া র‌্যাব গলির লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে ফোনকল পেয়ে রোগী দেখতে যান। সেখানে পৌঁছানোর পর রিকশা থেকে নামামাত্রই সংঘবদ্ধভাবে ওঁৎ পেতে থাকা এজাহারনামীয় আসামিরা তার স্ত্রীর পথরোধ করেন এবং গালাগাল করতে থাকেন। তখন তার স্ত্রী আসামিদের গালাগাল করতে নিষেধ করেন এবং গালাগালের কারণ জিজ্ঞাসা করলে আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তার স্ত্রীকে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি ও লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম করে।

আরো পড়ুন:

মসজিদের ইমামকে মারধর, গ্রেপ্তার ২

শেখ হেলাল ও শেখ তন্ময়ের নামে চাঁদাবাজির মামলা

এজাহারে আরো বলা হয়েছে, একপর্যায়ে আসামিরা চিকিৎসক শারমিন সুলতানার পরনের কাপড় টেনে-হিঁচড়ে ছিঁড়ে ফেলে শ্লীলতাহানি করেন। খবর পেয়ে তিনি (স্বামী) ও তার গাড়িচালক স্ত্রীকে রক্ষা করতে গেলে তাদেরও মারধর করা হয়। আসামিরা স্মার্টফোনসহ তার স্ত্রীর কাছে থাকা সোনার গয়না ও দেড় লাখ টাকা নিয়ে নেয়। পরে তারা হুমকি ধামকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

কুষ্টিয়া মডেল থানার (ওসি) মোশাররফ হোসেন জানান, মামলায় তিনজন নারীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের সবার বাড়ি মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলায়। অজ্ঞাত আরো ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হবে।

ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাইয়ের মাঝামাঝি একটা অবস্থানে পৌঁছার ব্যাপারে আশাবাদী আলী রীয়াজ

চলতি জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন একটা অবস্থানে যেতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল মাল্টিপারপাস হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের অষ্টম দিনের আলোচনার শুরুতে আলী রীয়াজ এই আশার কথা বলেন।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, ‘আমি আশাবাদী, আমরা একটা জায়গায় পৌঁছাতে পারব, জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে একটা জায়গায় যেতে পারব।’

আজকের বৈঠকে আগের কয়েকটি অসমাপ্ত বিষয় নিয়ে আবার আলোচনা হওয়ার কথা। এর মধ্যে সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, উচ্চকক্ষের নির্বাচনপ্রক্রিয়া ও উচ্চকক্ষের দায়িত্ব ও ভূমিকা রয়েছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজকের আলোচনায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে। আলোচনার শুরুতে জুলাই শহীদদের স্মরণে সবাই দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।

জুলাই আন্দোলনের কথা তুলে ধরে আলী রীয়াজ বলেন, ‘এক বছর আগে আমরা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নেমেছিলাম। আজ এক বছর পর রাষ্ট্রকাঠামো পরিবর্তনের জন্য একতাবদ্ধ হয়ে আলোচনা করছি। যেন রাষ্ট্রকাঠামো পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র আমরা তৈরি করতে পারি। যেন নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষিত হয়। যেন গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে না হয় আমাদের। এটা আপনাদের অবদান, আপনাদের কর্মীদের অবদান, নাগরিকদের অবদান।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার সরকারের পতনকে জনগণের সাফল্য বলে উল্লেখ করেন আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, জনগণের সে সাফল্য, শুধু একপর্যায়ে থেমে গেলে হবে না, এটাকে সুরক্ষিত করতে হবে। সে সুরক্ষার উপায় হচ্ছে যেন সংস্কারের কার্যক্রমে এগিয়ে যাওয়া যায়।

আলী রীয়াজ বলেন, ‘এই চেষ্টাই আপনারা আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করছেন। কারণ, এ দায়িত্ব আপনার, আমার, আমাদের সবার।’

সবার সহযোগিতায় একটা অবস্থানে পৌঁছানোর ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেন আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘কখনো কখনো আলোচনায় অগ্রসর হই, আবার কখনো কখনো যতটা হওয়ার, তা না হতে পেরে হতাশ হই। তবু সবাই চেষ্টা করলে সবার সহযোগিতায় আশা করি আমরা একটা অবস্থানে পৌঁছাতে পারব।’

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আজকের আলোচনায় আরও উপস্থিত আছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান ও মো. আইয়ুব মিয়া।

সম্পর্কিত নিবন্ধ