পাকিস্তানে ভারতের হামলা দুঃখজনক, চলমান পরিস্থিতি উদ্বেগের: ইয়াও ওয়েন
Published: 8th, May 2025 GMT
পাকিস্তানে ভারতের হামলাকে দুঃখজনক ও চলমান পরিস্থিতি উদ্বেগের বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, চীন সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতা করে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব (পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা) নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানায়।
বৃহস্পতিবার সকালে এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) ‘বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের পাঁচ দশক: নতুন উচ্চতার দিকে যাত্রা’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করে। এতে অতিথি বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ড.
সূচনা বক্তব্যে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ৭ মে ভোরে ভারত পাকিস্তানের লক্ষ্যবস্তুতে সামরিক হামলা চালায়। চীন এটিকে দুঃখজনক বলে মনে করে এবং চলমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানায়।
তিনি বলেন, ভারত ও পাকিস্তান একে অপরের প্রতিবেশী এবং সব সময়ে তারা প্রতিবেশী থাকবে। তারা উভয়ই চীনেরও প্রতিবেশী। চীন সকল ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতা করে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানায়। চীন উভয়পক্ষকে শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে কাজ করা ও শান্ত থাকার পাশাপাশি সংযম বজায় রেখে এবং পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলতে পারে, এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানায়।
ইয়াও ওয়েন বলেন, বিশ্ব আজ অস্থিরতা, অস্থিতিশীলতা ও অনিশ্চয়তায় পরিপূর্ণ। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি যে দিকেই যাক না কেন, চীন ইতিহাসের সঠিক দিকে এবং মানব অগ্রগতির পক্ষে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে। সেই সঙ্গে বিশ্বের স্থিতিশীল এবং শান্তিপূর্ণ শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
রাখাইনে মানবিক করিডোর নিয়ে চীনের অবস্থান জানতে চাইলে ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘তথাকথিত মানবিক করিডোর’, আমি বলবো এতে চীনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এ থেকে যা বুঝেছি, রাখাইনে সংঘাতে আক্রান্ত মানুষের মানবিক সরবরাহের জন্য উদ্যোগটি জাতিসংঘের কয়েকটি সংস্থা নিয়েছিল। আমি জানতে পেরেছি, এতে বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও আরাকান আর্মি সম্পৃক্ত। তবে চীন এর সঙ্গে যুক্ত নয়।
চীনের অবস্থানের বিষয়ে তিনি বলেন, চীন যেকোনো দেশের সার্বভৌম ও অখণ্ডতায় বিশ্বাসী। আমরা কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাই না। চীন আশা করে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধান করবে এবং প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এগিয়ে নেবে।
আরাকান স্বাধীন করা নিয়ে জামায়াতের মন্তব্যের বিষয়ে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, রাজনৈতিক সংলাপে রাখাইনে তথাকথিত স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, আমার ধারণা নাই। আপনারা হয়তো এটি লক্ষ্য করেছেন এ বিষয়ে জামায়াত একটি ব্যাখ্যা দিয়েছে, যেখানে তারাও বিবৃতির বিষয়ে অস্বীকার করেছে।
তিস্তা প্রকল্পে সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, চীনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর একটি যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশ চীনকে তিস্তা প্রকল্পে অংশগ্রহণ করতে স্বাগত জানিয়েছে। আমি বলবো চীন প্রস্তুত। আমরা সহযোগিতার প্রস্তাব করতে চাই। কিন্তু সিদ্ধান্ত একান্তই বাংলাদেশের। বাংলাদেশ যে সিদ্ধান্ত নেবে, তাতে সম্মান জানাবে চীন। এ প্রকল্প দ্রুত শুরু হওয়ার প্রত্যাশা করছি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বহিরাগতদের মোটরসাইকেলের ধাক্কায় পা ভাঙল রাবি শিক্ষার্থীর, প্রতিবাদে মানববন্ধন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বহিরাগতদের মোটরসাইকেলের ধাক্কায় সংগীত বিভাগের এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে ও ছয় দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৬ আগস্ট) বেলা ১১টায় প্রশাসন ভবনের সামনে এ মানববন্ধন করেন তারা।
এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে ‘ক্যাম্পাসে ওভার স্পিডিং কেন?’, ‘আজ অনিক, কাল আমি! ’, ‘বেপরোয়া গতি বন্ধ করো’ ইত্যাদি স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
আরো পড়ুন:
আবু সাঈদ হত্যা মামলা: সাবেক উপাচার্যসহ ২৪ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে মহাসড়কে রবি শিক্ষার্থীদের শেকল ভাঙার গান
শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবিগুলো হলো- আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার জন্য তিন কর্মদিবসের মধ্যে বীমার অর্থ প্রদান; পারিবারিক অসচ্ছলতার ভিত্তিতে এককালীন আর্থিক সহায়তা; বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যানবাহনের সর্বোচ্চ গতিসীমা নির্ধারণ ও স্পিড ব্রেকার স্থাপন; দ্বিতীয় বিজ্ঞান ভবনের পাশের রাস্তা এবং স্টেশনবাজার-বিনোদপুর সড়কসহ প্রয়োজনীয় রাস্তা সংস্কার; গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে রেডিয়াম রিফ্লেক্টর স্থাপন এবং প্রতিটি সড়কে ফুটপাত নির্মাণ।
এর আগে, সোমবার (৪ আগস্ট) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সামনে চার রাস্তার মোড়ে সংগীত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক মল্লিক দুটি দ্রুতগতির বাইকের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন। তার একটি পা ভেঙে যায়। বর্তমানে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মানববন্ধনে সংগীত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তর্পণা দে বলেন, “ক্যাম্পাসে চেকপোস্ট আর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও বহিরাগতরা এত বেপরোয়া গতিতে চলাফেরা করতে পারে— এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। গাড়িগুলোর গতিসীমা নির্ধারণ এখন সময়ের দাবি।”
নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী জয় রায় বলেন, “একজন শিক্ষার্থী হাঁটার সময় বাইকের চাপায় আহত হচ্ছে— এটা কি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য? প্রশাসনের মূল দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অথচ এখানে বারবার তারা ব্যর্থ হচ্ছে।”
পরে শিক্ষার্থীরা দাবিগুলো আদায়ের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, “শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো আমরা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছি। আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ক্যাম্পাসের মূল ফটকগুলোতে সার্বক্ষণিক চেকিং চলছে। তারপরও এ ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী