লামিয়া ধর্ষণ মামলার আসামি ইমরান গ্রেপ্তার
Published: 11th, May 2025 GMT
পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার আলোচিত কলেজছাত্রী লামিয়া আক্তার সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার আসামি ইমরান মুন্সীকে (১৮) গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
রবিবার (১১ মে) বিকাল ৫টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বরিশালের এয়ারপোর্ট থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পটুয়াখালী জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) আহমেদ মাইনুল হাসান।
গত ৭ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দুমকি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম পটুয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে অভিযুক্তরা হলেন, শাকিব মুন্সী, সিফাত মুন্সী এবং ইমরান মুন্সী। এর মধ্যে শাকিব ও সিফাতকে আগেই গ্রেপ্তার করে যশোর শিশু সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে।
আরো পড়ুন:
চাঁদা দাবি, ছাত্রদল-যুবদল নেতাসহ আটক ১০
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-কিশোরগঞ্জে বজ্রপাতে ৮ মৃত্যু
পটুয়াখালী জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহমেদ মাইনুল হাসান বলেন, ‘‘ইমরান মুন্সীকে গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম ধারাবাহিকভাবে অভিযান পরিচালনা করে আসছিল। তিনি গ্রেপ্তার এড়াতে বারবার অবস্থান পরিবর্তন করছিলেন। অবশেষে সফলভাবে তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। ভিকটিমের পরিবার যাতে ন্যায়বিচার পায়, সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মামলা পরিচালনা করছি।’’
লামিয়ার বাবা জসিম উদ্দিন গত ১৯ জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে ঢাকার মোহাম্মদপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত হন। পরে তার গ্রামের বাড়ি দুমকির পাঙ্গাশিয়া গ্রামে দাফন করা হয়।
গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানাবাড়ি ফেরার পথে দুমকির রাজগঞ্জ গ্রামে লামিয়াকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। পর দিন লামিয়া আক্তার নিজে বাদী হয়ে দুমকি থানায় মামলা করেন। ঘটনার প্রায় এক মাস পর, ২৬ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে রাজধানীর শেখেরটেক এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে লামিয়ার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়।
ধর্ষণ মামলায় ইমরান মুন্সীকে আসামি করা হয় এবং তদন্তকালেও তার নাম উঠে আসে। এরপর থেকে তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আসছিল।
ঢাকা/ইমরান/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর ইমর ন ম ন স
এছাড়াও পড়ুন:
নোয়াখালীতে সাম্যবাদী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা, আহত ৫
নোয়াখালীতে সাম্যবাদী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় সাম্যবাদী আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা তারেকেশ্বর দেবনাথ ওরফে নান্টুসহ কমপক্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
গত ৩০ এপ্রিল শহরের টাউন হল মোড় এলাকার সমবায় বিপণিকেন্দ্রের নিচতলায় সাম্যবাদী আন্দোলনের জেলা কার্যালয়ে তালা দেওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে আজ সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল দলটি। ওই কর্মসূচি পালন করতে যাওয়ার পথে হামলার ঘটনা ঘটে বলে দলের নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন।
সাম্যবাদী আন্দোলনের পক্ষ থেকে ঘটনার জন্য জেলা বিএনপির সদস্য আবদুল মোতালেব ওরফে আপেলের লোকজনকে দায়ী করা হয়েছে। তবে আবদুল মোতালেব এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। আজ দুপুরে নোয়াখালী প্রেসক্লাবে নোয়াখালী সমবায় ব্যাংকের সদস্যদের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাম্যবাদী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলায় তাঁর কোনো লোক জড়িত নন বলে আবদুল মোতালেব দাবি করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১০টার দিকে সাম্যবাদী আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সামনে থেকে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করার উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দিকে যাচ্ছিলেন। তাঁরা জেলা শিল্পকলা একাডেমির দক্ষিণ-পশ্চিম পাশের সড়ক অতিক্রম করার সময় ১০-১২ জন তরুণ অতর্কিতে লাঠিসোঁটা নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালান। হামলায় সাম্যবাদী আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন।
সেখানে উপস্থিত লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হামলাকারীদের হামলা ও ধাওয়ার শিকার হয়ে সাম্যবাদী আন্দোলনের নেতা-কর্মী ও সংবাদ সংগ্রহের দায়িত্বরত বেসরকারি একাধিক টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যান দৌড়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিচতলায় আশ্রয় নেন। তখন হামলাকারীরা সেখানে গিয়েও হামলার চেষ্টা চালান। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনবাহিনীর সদস্যরা সেখানে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান।
হামলার শিকার মুক্তিযোদ্ধা তারেকেশ্বর দেবনাথ প্রথম আলোকে বলেন, সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আবদুল মোতালেবের লোকজন গত ৩০ এপ্রিল তাঁদের দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। ওই ঘটনার প্রতিবাদে আজ সকালে মানববন্ধন করার জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাওয়ার পথে অতর্কিতে তাঁদের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলায় তিনিসহ দলের পাঁচজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
হামলার অভিযোগ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা আবদুল মোতালেব প্রথম আলোকে বলেন, তারেকেশ্বর দেবনাথের সঙ্গে কিংবা তাঁদের সংগঠনের সঙ্গে তাঁর কোনো বিরোধ নেই। তাঁরা যে কক্ষে দলের কার্যালয় করেছেন, সেটি সমবায় ব্যাংকের। কক্ষের ভাড়া না পেয়ে ব্যাংকের লোকজন ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। এর সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই।
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সাম্যবাদী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ গিয়ে হামলাকারীদের কাউকে পায়নি। পরে হামলার শিকার মুক্তিযোদ্ধা তারেকেশ্বর দেবনাথসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা থানায় এসে তাঁকে ঘটনা জানিয়ে গেছেন। তবে লিখিত কোনো অভিযোগ দেননি।