শপিং করতে সবারই ভালো লাগে। তা যদি ঘরে বসে করা যায়, তাহলে তো কথাই নেই। সময় বাঁচে, ঝামেলাও কম– এ কারণে বাংলাদেশে অনলাইন শপিংয়ের জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়ে চলেছে। তবে অনলাইন শপিংয়ে ক্রেতারা ঠিক কী চান? কোন বিষয়গুলো তাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ? সম্প্রতি এমন কিছু প্রশ্নের উত্তর মিলেছে গবেষণায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড.

আবুরেজা এম. মুজারেবার তত্ত্বাবধানে গবেষণাটি করেছেন দুই শিক্ষার্থী– জিসান নূরেন সিয়াম ও মুনিরুন নেসা তামান্না। ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামের এ গবেষণায় দেশের সাতটি প্রধান ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম– দারাজ, চালডাল, রকমারি, পিকাবু, অথবা, আরোগ্য ও সাজগোজ কীভাবে গ্রাহকের চাহিদা মেটাচ্ছে তা বিশ্লেষণ করা হয়।
ক্রেতা সন্তুষ্টির ছয় বিষয়
গবেষণায় উঠে এসেছে ক্রেতা সন্তুষ্টির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি বিষয়। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো হাতের নাগালে থাকা দাম। এরপর সহজ ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশন। দ্রুত ডেলিভারি। পণ্যের গুণমানের প্রতি আস্থা এবং ফ্লেক্সিবল রিটার্ন/রিফান্ড পলিসি ও কাস্টমার সার্ভিস (কম গুরুত্বপূর্ণ)।
অধ্যাপক মুজারেবার ভাষ্য, ‘বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে হলে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত হবে দাম ও বিশ্বাসযোগ্যতার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।’
গবেষণায় দেখা গেছে, একদিকে সহজ অ্যাপ্লিকেশন ও প্রতিযোগিতামূলক দামের জন্য এগিয়ে রয়েছে ‘দারাজ’। আবার অন্যদিকে অথেন্টিক ও যাচাইযোগ্য পণ্য সরবরাহে নির্ভরযোগ্য প্ল্যাটফর্ম ‘রকমারি’। তবে সবদিক থেকে এগিয়ে আছে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম  ‘সাজগোজ লিমিটেড’। কম দামে পণ্য, দ্রুত ডেলিভারি, বিশ্বাসযোগ্যতা, সহজ অ্যাপ্লিকেশন ও ঝামেলাবিহীন রিটার্ন পলিসি নিয়ে ‘সাজগোজ’ প্রতিটি মানদণ্ডেই গ্রাহকদের মন জিতে নিয়েছে। ‘সাজগোজ’ প্রমাণ করেছে অনলাইনে ক্রেতারা কী চান, তারাই সবচেয়ে ভালো বোঝে।
সাজগোজ দ্রুত ডেলিভারিতে সর্বোচ্চ স্কোর করেছে। প্রায় ৯৩ শতাংশ ব্যবহারকারী তাদের সন্তুষ্টি জানিয়েছেন। বলেছেন, তাদের অর্ডার দ্রুত সময়ের মধ্যে পৌঁছে গেছে।
সাজগোজের সিইও এবং কো-ফাউন্ডার নাজমুল শেখ বলেন, ‘এ গবেষণায় এমন স্বীকৃতি পেয়ে আমরা গর্বিত। আমরা চাই, অনলাইন শপিং হোক সহজ, দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য। এ গবেষণা বলছে আমরা ঠিক পথে আছি। এটা গ্রাহকদের জন্য আমাদের আরও ভালো কিছু করার অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে।’
২০১৩ সালে বিউটি ব্লগ হিসেবে যাত্রা শুরু করে ‘সাজগোজ’। সে সময় প্ল্যাটফর্মটিতে স্কিনকেয়ার টিপস ও পণ্যের রিভিউ শেয়ার করা হতো। এটি ধীরে ধীরে ব্র্যান্ডটির প্রতি গ্রাহকদের আস্থা তৈরি করে। পরে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে রূপ নিলে সাজগোজ অথেন্টিক ও যাচাইযোগ্য পণ্য বিক্রির ওপর জোর দেয়। তাদের পণ্য সংগ্রহ করা হয় যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, যুক্তরাজ্য ও কোরিয়ার নির্ভরযোগ্য সরবরাহকারীদের কাছ থেকে। পণ্যের গুণগত মানের ক্ষেত্রে আপসহীন অবস্থানই বাজারে তাদের আলাদা করেছে।
আরও বেশি গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে ‘সাজগোজ’ নিয়েছে বহুমাধ্যমভিত্তিক বিপণন কৌশল। এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট, অ্যাপ্লিকেশন, অফলাইন স্টোরে গ্রাহকদের একটি সমন্বিত সেবা দেওয়া হয়। রাজধানীর ব্যস্ত শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্ক ও সীমান্ত সম্ভারে রয়েছে সাজগোজের স্টোর। এ কৌশলটি সাজগোজকে আরও বেশি গ্রাহকের কাছে নিয়ে গেছে। পাশাপাশি তাদের ব্র্যান্ডের অবস্থান আরও দৃঢ় করতে সাহায্য করেছে।
অনলাইন রিসোর্স ও ডেটা বিশ্লেষণ প্ল্যাটফর্ম ডিমান্ডসেইজ জানিয়েছে, ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী অনলাইন শপিং করেছে ২৭১ কোটি মানুষ। এ সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। এ বছর তা আরও কয়েক কোটি বাড়বে। বলা যায় প্রতিদিনই আরও বেশি গ্রাহক অনলাইন শপিংয়ের দিকে ঝুঁকছেন। তাই বার্তাটি বেশ স্পষ্ট। গ্রাহক চান এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যারা তাদের সময়, অর্থ এবং বিশ্বাসের যথাযথ গুরুত্ব দেবে। যারা এ বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখছে, তারাই এগিয়ে থাকবে। v

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প ল য টফর ম ই কম র স প গ র হকদ র গ র হক র হক র

এছাড়াও পড়ুন:

ডাকসুর বিবৃতি: বিএনপি তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে

জুলাই সনদে সই করলেও বিএনপি ধারাবাহিকভাবে সংস্কার কার্যকর করার বিরোধিতা করে তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে, এমন বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। রোববার বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই বিপ্লব ছিল বৈষম্য, অবিচার ও ফ্যাসিবাদী শাসনকাঠামোর বিরুদ্ধে এ দেশের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার সম্মিলিত বিপ্লব। শুধু সরকার পরিবর্তন নয়, বরং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার, ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ ও একটি বৈষম্যহীন-ন্যায়ভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষা ছিল বিপ্লবের মূল ভিত্তি। নতুন প্রজন্ম চেয়েছিল এমন একটি বাংলাদেশ, যেখানে কোনো প্রকার বৈষম্য ও রাজনৈতিক একচেটিয়া কর্তৃত্বের জায়গা থাকবে না। কিন্তু দুঃখজনকভাবে জুলাই সনদে সই করলেও বিএনপি ধারাবাহিকভাবে সংস্কার কার্যকর করার বিরোধিতা করে তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে।

ডাকসুর বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিশেষত বিএনপি এমন সব মৌলিক সংস্কারের বিরোধিতা করেছে, যা সরাসরি ছাত্র-জনতার স্বপ্নের সঙ্গে জড়িত। পিএসসি, দুদক, ন্যায়পাল ও মহাহিসাব নিরীক্ষকের মতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছ ও দলীয় প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নিয়োগ নিশ্চিত করার সংস্কার প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তারা ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায়। কোনো রাজনৈতিক দলের বিরোধিতা বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রভাব রাষ্ট্রগঠনমূলক সংস্কারের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে ছাত্র-জনতা সেই বাধা অতিক্রমে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নেবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ