সুশাসনের জন্য জনগণের অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি, দুর্নীতি প্রতিরোধে জনগণের সাহসী ভূমিকা আমাদের অনুপ্রাণিত করে বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার (অনুসন্ধান) অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাফিজ আহসান ফরিদ। 

তিনি বলেন, “দুর্নীতি শোষণের হাতিয়ার, এর শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। দুর্নীতি দেশটার কি পরিমাণ ক্ষতি করেছে সেটি চব্বিশে বোঝা গেছে। সব শেষ করে দিয়েছে। সব শোষণ করে নিয়ে গেছে। সরকার যাদের আমানতদারি ও বিশ্বস্থ মনে করে চেয়ারে বসায় তাদের বেশিরভাগই দুর্নীতি-লুটপাট করে।”

সোমবার (১৯ মে) দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমির হাছন রাজা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। 

আরো পড়ুন:

সাবেক উপাচার্যের দুর্নীতি তদন্তে অসহযোগিতা রাবি প্রশাসনের

সড়ক ছাড়াই অর্ধকোটি টাকার সেতু নির্মাণ, দুদকের অভিযান

হাফিজ আহসান ফরিদ বলেন, “মানুষ এখন দুর্নীতির বিষয়ে অনেক সচেতন হয়েছে। বিভিন্ন অফিস আদালতে মানুষ এখন মন খুলে কথা বলতে পারছেন। তথ্যপ্রযুক্তির যুগে মানুষের হাতের কাছেই এখন সব কিছু মিলছে। বাংলাদেশে বসে মানুষ জানতে পারছে, থ্যাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরে কি হচ্ছে। এখন আশেপাশে কোনো অনিয়ম দুর্নীতির ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে অডিও-ভিডিও করে আমাদের কাছে পাঠাবেন। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।” 

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের কৃষক-শ্রমিক-রিকশা চালকরা কোনো দিনও ঘুষ খায় না, দুর্নীতি করে না। তারা ২০০-৫০০ টাকাতেই সংসার চালায়।” 

কমিশনার আরো বলেন, “গত ৫ আগস্টের পরে দুর্নীতি দমন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে। যার কারণে প্রতিটি জেলা উপজেলা ও বিভাগীয় শহরের বিভিন্ন দপ্তরকে জবাবদিহিতার আওয়াতায় আনা হয়েছে।”

হাফিজ আহসান ফরিদ বলেন, “আপনাদের কাছে কেউ ঘুষ চাইলে সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করবেন, মানুষ জড়ো করবেন, প্রতিবাদ করবেন। প্রতিবাদ করতে কোনো টাকা-পয়সা লাগে না, প্রতিবাদ করতে কোনো শিক্ষা লাগে না। প্রতিবাদ করতে লাগে সৎ সাহস। নিজের অবস্থান থেকে সাহসী ভূমিকা রাখবেন, নিজেকেই একজন প্রতিবাদী দুদক মনে করবেন। তাহলেই আমরা দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়তে পারব।” 

গণশুনানিতে প্রাপ্ত অভিযোগগুলো যাচাই-বাছাই করে দ্রুত তদন্ত ও প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। গণশুনানিতে প্রাপ্ত কয়েকটি অভিযোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। কিছু ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক সমাধানও হয়েছে। এছাড়া যেসব অভিযোগ গভীর তদন্তের দাবি রাখে, সেগুলো নথিভুক্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড.

মো ইলিয়াস মিয়ার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন, সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার তোফায়েল আহাম্মেদ, দুদকের সিলেট সমন্বিত কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রাফি নাজমুস সাদাত, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির (দুপ্রক) সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মহিবুল ইসলাম। এছাড়াও জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির নেতারা, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/মনোয়ার/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর করব ন

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’

তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’

অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’

পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’

আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’

ঢাকা/আসাদ/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
  • বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি
  • রোহিঙ্গা সমস্যায় রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে হবে
  • হুংকার দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ঠেকান যাবে না: জাহিদ হোসেন
  • মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন 
  • জামায়াত কীভাবে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলে: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
  • জুলাই সনদ নিয়ে যেসব বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে
  • ফরিদপুরে সীমানা নিয়ে ডিসির চিঠি, এলাকাবাসীর ৫ দাবি
  • জামায়া‌তের তিন‌ দি‌নের কর্মসূচি ঘোষণা