বাংলাদেশ থেকে বছরে কোটি কেজি চা রপ্তানির সর্বশেষ উদাহরণ প্রায় ১৮ বছর আগের। দেশীয় চাহিদা বাড়তে থাকায় চা রপ্তানি ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে। ছোট হয়ে আসে রপ্তানি বাজার। চা রপ্তানির সেই ছোট্ট বাজারে কয়েক বছর ধরে নেতৃত্ব দিচ্ছে আবুল খায়ের গ্রুপের ‘সিলন’ ব্র্যান্ড। 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাবে, চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে ৩৬ লাখ ৪৪ হাজার ডলার মূল্যের ১৭ লাখ কেজি চা রপ্তানি হয়েছে। এ সময়ে এককভাবে সবচেয়ে বেশি চা রপ্তানি করেছে আবুল খায়ের গ্রুপের প্রতিষ্ঠান আবুল খায়ের কনজ্যুমার প্রোডাক্টস। প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব ‘সিলন’ ব্র্যান্ডের চা রপ্তানি করেছে ১৫ লাখ ৮১ হাজার ডলারের। রপ্তানি আয়ের হিসাবে গ্রুপটি বাজার অংশীদারত্ব ৪৩ শতাংশ। 

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে একটানা চার অর্থবছর ধরে আবুল খায়ের গ্রুপ চা রপ্তানিতে শীর্ষে রয়েছে। সবচেয়ে বেশি চা রপ্তানির জন্য গত দুই বছর বাংলাদেশের ‘শ্রেষ্ঠ চা রপ্তানিকারক’ শ্রেণিতে পুরস্কার পেয়ে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। জাতীয় চা দিবস উপলক্ষে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। 

চা রপ্তানি আয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দ্য কনসোলিডেটেড টি অ্যান্ড ল্যান্ডস কোম্পানি। ফিনলে টি কোম্পানির এই প্রতিষ্ঠানটি ৭ লাখ ৪৬ হাজার ডলারের চা রপ্তানি করেছে। প্রতিষ্ঠানটির চা রপ্তানির পরিমাণ ৪ লাখ ৬৬ হাজার কেজি। 

তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ইস্পাহানি গ্রুপ। গ্রুপটির দুটি প্রতিষ্ঠান ৩ লাখ ডলার মূল্যের চা রপ্তানি করেছে। ইস্পাহানি গ্রুপ মির্জাপুর, ব্লেন্ডার চয়েসসহ নানা ব্র্যান্ডের চা রপ্তানি করছে। তাদের প্রতি কেজি চায়ের রপ্তানিমূল্য ৪ ডলার ৯৩ সেন্ট বা ৬০০ টাকা, যা শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ।

চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে সিটি গ্রুপ। কোম্পানিটি প্রায় আড়াই লাখ ডলার মূল্যের চা রপ্তানি করেছে। গ্রুপটি বেঙ্গল ব্ল্যাক টি ব্র্যান্ডের চা রপ্তানি করছে। পঞ্চম অবস্থানে থাকা আরিফ টি কোম্পানি লিমিটেড পৌনে ২ লাখ ডলার মূল্যের চা রপ্তানি করেছে।  

রপ্তানিকারকদের হাত ধরে নতুন বাজার

চা রপ্তানিকারকেরা নতুন নতুন বাজারে যুক্ত হচ্ছেন। চলতি অর্থবছরে বিশ্বের ৩৫টি দেশে চা রপ্তানি করেছে ৫৯টি প্রতিষ্ঠান। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাজারের সংখ্যা ছিল ২৩। রপ্তানিকারক ছিল ৫০টি প্রতিষ্ঠান। নতুন করে যুক্ত হয়েছে ১২টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। নতুন বাজারের সংখ্যা বেড়েছে ১২টি। 

পাকিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় নিয়মিত চা রপ্তানি হয়। পাকিস্তানে মূলত খোলা চা বেশি চলে। খোলা চায়ের রপ্তানির মূল্য কম। যেমন এ বছর পাকিস্তানে রপ্তানি হওয়া চায়ের গড় মূল্য ছিল প্রতি কেজি ১ ডলার ৬০ সেন্ট। 

এর বাইরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের বাজারে নিয়মিত চা রপ্তানি করে আসছে রপ্তানিকারকেরা। এসব দেশে চায়ের রপ্তানিমূল্যও বেশি। যেমন এ বছর যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া প্রতি কেজি চায়ের গড় মূল্য ৪ ডলার ৮৭ সেন্ট বা ৫৯৪ টাকা। ইস্পাহানি গ্রুপ, সিটি গ্রুপসহ কয়েকটি কোম্পানি এই বাজারে চা রপ্তানি করে আসছে। 

চলতি অর্থবছরে বেলজিয়াম, ভুটান, সাইপ্রাস, ভিয়েতনাম, ডেনমার্কের মতো নতুন বাজারে যুক্ত হয়েছেন রপ্তানিকারকেরা। মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ বা এমজিআইয়ের হাত ধরে বেলজিয়ামে চা রপ্তানির নতুন বাজারে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। সিটি গ্রুপ ও ওরিয়ন গ্রুপের হাত ধরে নাম উঠেছে সাইপ্রাসের বাজার। নতুন বাজার ডেনমার্কে অর্গানিক ওলন চা রপ্তানি করেছে কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেট লিমিটেড। 

উৎপাদনের তুলনায় রপ্তানি কম, তবে বাড়ছে

স্বাধীনতার পর উৎপাদনের তুলনায় চায়ের চাহিদা ছিল কম। ফলে উদ্বৃত্ত চা রপ্তানি হতো। যেমন চা-বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদের হিসাবে, ১৯৭২-৭৩ সালে চা রপ্তানি হয়েছিল ২ কোটি ৩ লাখ কেজি। সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছিল ১৯৯২-৯৩ অর্থবছরে। এ সময় ৩ কোটি ৩০ লাখ কেজি চা রপ্তানি হয়। তিন দশক ধরে ধীরে ধীরে চায়ের ভোগ বাড়তে থাকে। চা উদ্বৃত্তের পরিমাণ কমতে থাকায় রপ্তানিও কমতে থাকে।

চায়ের ভোগ বাড়তে থাকায় এক যুগ আগে থেকে চা আমদানি শুরু হয়। বাজার বড় হতে থাকায় বড় শিল্প গ্রুপ চা-বাগানে যুক্ত হয়। গত তিন বছরে গড়ে ৯ কোটি ৬৬ লাখ কেজি করে চা উৎপাদন হতে থাকে, যা আগের তিন বছরের গড়ের চেয়ে ৩৬ লাখ কেজি বেশি। উৎপাদন বাড়ায় আমদানি কমে যায়। 

চা উদ্বৃত্তের পরিমাণ বাড়ায় রপ্তানিও বাড়তে থাকে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩৬ লাখ ডলারের চা রপ্তানি হয়। সেখানে চলতি অর্থবছরে ১০ মাসেই রপ্তানি হয় ৩৬ লাখ ৪৪ হাজার ডলার বা ৪৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকার চা রপ্তানি হয়। 

চা রপ্তানির সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা বলছেন, চা রপ্তানি বাড়াতে হলে উৎপাদন বাড়াতে হবে। আবার চায়ের মান বাড়ানো গেলে বিশ্ববাজারে রপ্তানিতে প্রতিযোগিতা-সক্ষমতাও বাড়বে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: নত ন ব জ র য ক ত হয় অবস থ ন ৩৬ ল খ

এছাড়াও পড়ুন:

লাভজনক গাজী ওয়্যারস এখন লোকসানে ধুঁকছে

দেশের একমাত্র তামার তার প্রস্তুতকারী রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠান গাজী ওয়্যারস। প্রতিষ্ঠানটির তৈরি পণ্যের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ছিল বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি)। প্রতিবছর গড়ে ৪০০ টন তার কিনত তারা। বছর চারেক ধরে আর তার নিচ্ছে না বিআরইবি। এতে লোকসান গুনতে হচ্ছে গাজী ওয়্যারসকে। গত বছর ৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। সদ্য সমাপ্ত ২০২৪–২৫ অর্থবছরেও লোকসানের পরিমাণ  ৫ কোটির বেশি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিআরইবি ছিল গাজী ওয়্যারসের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। ২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বশেষ তার কিনেছিল তারা। এখন বাড়তি দামের কথা বলে আর তার কিনছে না। এ কারণেই মূলত লোকসান গুনতে হচ্ছে গাজী ওয়্যারসকে। একটি মাত্র প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীলতাই লোকসানের অন্যতম কারণ। আবার বিকল্প ক্রেতা খোঁজার ক্ষেত্রেও গাজী ওয়্যারসের উদ্যোগের ঘাটতি রয়েছে।

গাজী ওয়্যারস হলো শিল্প মন্ত্রণালয়ভুক্ত বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) নিয়ন্ত্রণাধীন সরকারি মালিকানার একটি প্রতিষ্ঠান। ১৯৬৫ সালে ব্যক্তিমালিকানায় জাপানের ফুরুকাওয়া ইলেকট্রিক কোম্পানির সহযোগিতায় এটি চালু হয়। পরবর্তী সময়ে ১৯৭২ সালে জাতীয়করণ করে এটিকে বিএসইসির সঙ্গে একীভূত করা হয়। এরপর আবার এটিকে বিএসইসির অঙ্গপ্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়। বর্তমানে তিন ধরনের তার উৎপাদন করছে গাজী ওয়্যারস। এগুলো হচ্ছে সুপার এনামেল তামার তার (গেজ ১২ থেকে ৪৬), এনিল্ড তামার তার (গেজ ১০ থেকে ৪৬) ও হার্ডড্রন বেয়ার তামার তার (গেজ ১ থেকে ৪৬)। সবচেয়ে বেশি বিক্রি ও উৎপাদন হয় সুপার এনামেল তামার তার। প্রতিষ্ঠানটিতে ১২৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিক কর্মরত রয়েছেন।

সর্বশেষ ২০২০–২১ অর্থবছরে পৌনে ৫ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল। সেখানে গত অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি লোকসান করেছে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা। 

প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা বলছেন, গাজী ওয়্যারসের বার্ষিক উৎপাদনক্ষমতা দেড় হাজার টন। তবে চাহিদা না থাকায় ওই সক্ষমতা অনুযায়ী কখনো উৎপাদন হয়নি। মোটাদাগে ৮০০ টন তার উৎপাদন করলে প্রতিষ্ঠানটির লোকসান হয় না। কিন্তু গত বছর উৎপাদন হয়েছে ২৬৭ টন। আর চলতি অর্থবছরে উৎপাদন মাত্র ৮৭ টন। প্রতি কেজিতে উৎপাদন খরচ ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকার কাছাকাছি।

জানতে চাইলে গাজী ওয়্যারসের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল হালিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেশি দামের কথা বলে বিআরইবি তার কেনা বন্ধ রেখেছে। অথচ আমরা ভালো মানের তার উৎপাদন করি। তাই লোকসান কমাতে এখন আমরা বিকল্প বাজার খোঁজার চেষ্টা করছি। সরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। এর মধ্যে রয়েছে বিপিসির বিভিন্ন অঙ্গপ্রতিষ্ঠান, পেট্রোবাংলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।’

আবদুল হালিম আরও বলেন, ‘বিআরইবি কর্তৃপক্ষ গত ২২ মে গাজী ওয়্যারস কারখানা পরিদর্শন করেছে। তারা দাম নিয়ে আবার আলোচনা করছে। এ প্রতিষ্ঠান আবার তার কেনা শুরু করলে লাভে ফিরতে পারব। অন্যদিকে গত মাসে জ্বালানি মন্ত্রণালয় সব সরকারি প্রতিষ্ঠানকে গাজী ওয়্যারস থেকে পণ্য কেনার বিষয়ে আদেশ দিয়েছে।’

লোকসান বেড়েছে ১১ গুণ

প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী, ২০১৪-২০১৫ থেকে ২০২০-২০২১ অর্থবছর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৭৩ কোটি টাকা লাভ করেছিল। ২০২০-২০২১ অর্থবছরেও ৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা লাভ হয়। এরপর ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে এসে প্রতিষ্ঠানটির লোকসান একলাফে বেড়ে দাঁড়ায় ৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। সদ্য সমাপ্ত ২০২৪–২৫  অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত এই লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা। সেই হিসাবে চার বছরের ব্যবধানে লোকসান বেড়েছে প্রায় ১১ গুণ।

অদক্ষতা, অব্যবস্থাপনা

ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের অদক্ষতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে যে প্রতিষ্ঠানটি দিন দিন বাজার হারাচ্ছে, তা–ও উঠে এসেছিল বিএসইসির এক তদন্ত প্রতিবেদনে। ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠানটি শক্তিশালী ও আধুনিকীকরণ প্রকল্পের দুর্নীতি ও অনিয়মসংক্রান্ত অভিযোগ পর্যালোচনায় কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটি পরে অনিয়মের সত্যতা খুঁজে পায়। মূলত ওই প্রকল্পে জাপান ও তাইওয়ানে উৎপাদিত ‘জাপানি মানের’ ৪৫ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কেনার কথা। কিন্তু কেনাকাটা শেষে যন্ত্রপাতি কারখানায় স্থাপন করা হয়ে গেলেও জানা যায়নি এগুলো আসলে কোন দেশে তৈরি। যন্ত্রপাতি কেনার আগে মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নেওয়ার বিধান থাকলেও তা মানা হয়নি।

পরিকল্পনার ঘাটতি, এক ক্রেতার ওপর নির্ভরশীলতা, বাজার সম্প্রসারণ না করা ও অদক্ষতার কারণে প্রতিষ্ঠানটি লোকসানে ধুঁকছে বলে মনে করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যুরো অব বিজনেস রিসার্চের পরিচালক অধ্যাপক মো. আলী আরশাদ চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বাজার সম্প্রসারণ বা ক্রেতা না বাড়ালে প্রতিষ্ঠানটি লাভে ফিরতে পারবে বলে মনে হয় না। এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটি বাঁচাতে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লাভজনক গাজী ওয়্যারস এখন লোকসানে ধুঁকছে
  • অনিশ্চয়তা কাটুক, গতি আসুক অর্থনীতিতে
  • হিলি কাস্টমসে রাজস্ব আদায় ৭১৯ কোটি টাকা 
  • কাঁচা পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে মাশুল বাড়বে না
  • গরিব পাচ্ছে বিদ্যুৎ ভর্তুকির ছিটেফোঁটা, লাভবান ধনীরা
  • দেশীয় প্রসাধনশিল্পের উন্নয়নে দিকনির্দেশনা চান ব্যবসায়ীরা
  • শাবিপ্রবিতে ২০৫ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা
  • ভুয়া পরিসংখ্যানের সেইসব বাজেট আর এবারের বাজেট
  • সীমিত আয়ের মানুষের ওপর চাপ বাড়বে
  • তিন কারণে হঠাৎ বরখাস্ত হলেন চট্টগ্রামের কাস্টম কমিশনার