জামিন পেলেন ভারতীয় অধ্যাপক আলি খান মাহমুদাবাদ
Published: 21st, May 2025 GMT
অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়েছেন অপারেশন সিঁদুর নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘পোস্ট’ দেওয়ায় পর গ্রেপ্তার হওয়া অধ্যাপক আলি খান মাহমুদাবাদ।
আজ বুধবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিংয়ের ডিভিশন বেঞ্চ হরিয়ানার অশোক বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপকের জামিন মঞ্জুর করেন।
তবে জামিন পেলেও অধ্যাপক আলি খানকে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ও মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়নি; বরং বিচারপতি সূর্যকান্ত প্রশ্ন করেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সবার আছে ঠিকই, কিন্তু ‘দানবেরা’ যখন দেশ আক্রমণ করছে, তখন সস্তা প্রচার পাওয়ার কোনো প্রয়োজন অধ্যাপকের ছিল কি?
এদিন জামিনের আবেদন গ্রাহ্য করার পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট মামলার তদন্ত–সম্পর্কিত বিষয়ে একাধিক নির্দেশও দিয়েছেন, যেমন বলা হয়েছে, হরিয়ানা পুলিশকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করতে হবে। দলে উচ্চপদস্থ আইপিএস কর্মকর্তাদের রাখতে হবে। দলের সদস্যদের কেউ হরিয়ানা বা দিল্লি পুলিশের সদস্য হবেন না। দলের অন্তত এক সদস্য নারী হতে হবে।
অধ্যাপক মাহমুদাবাদের জন্য আদালত থেকে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। যেমন এই মামলা নিয়ে তিনি কিছু লিখতে ও বলতে পারবেন না। পেহেলগামকাণ্ড ও তারপরের ঘটনাবলি এবং ভারত-পাকিস্তান সংঘাত নিয়েও কোনো মন্তব্য করতে পারবেন না, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো পোস্ট দেবেন না। তা ছাড়া তাঁর পাসপোর্ট পুলিশের কাছে জমা দিতে হবে।অধ্যাপক মাহমুদাবাদের জন্যও কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, যেমন এই মামলা নিয়ে তিনি কিছু লিখতে ও বলতে পারবেন না। পেহেলগামকাণ্ড ও এরপরের ঘটনাবলি এবং ভারত-পাকিস্তান সংঘাত নিয়েও কোনো মন্তব্য করতে পারবেন না, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো পোস্ট দেবেন না। তা ছাড়া তাঁর পাসপোর্ট পুলিশের কাছে জমা দিতে হবে।
অপারেশন সিঁদুর ও এর প্রচারের দায়িত্ব দুই নারী সেনাকে দেওয়া নিয়ে অধ্যাপক মাহমুদাবাদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক দীর্ঘ পোস্ট দেন। তাতে কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংয়ের প্রশংসা করে তিনি বলেন, দক্ষিণপন্থীরা উৎফুল্ল। তাঁরা এ দুজনের খুব প্রশংসা করছেন। কিন্তু একইভাবে তাঁরা যদি ঘৃণা ভাষণ, বুলডোজার নীতি বা গণপিটুনিতে মৃত্যুর বিরুদ্ধে মুখ খোলেন, তাহলে আগামী দিনে দেশ সুরক্ষিত থাকবে।
এ মন্তব্যের কারণে হরিয়ানার এক বিজেপি নেতা ও রাজ্যের মহিলা কমিশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপকের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দাখিল করেন। পরদিনই হরিয়ানা ও দিল্লি পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
নিম্ন আদালত অধ্যাপক মাহমুদাবাদকে দুই দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। পরে গতকাল মঙ্গলবার তাঁকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
অধিকার যেমন আছে, তেমন কর্তব্যবোধও থাকা দরকার। মনে হচ্ছে, ৭৫ বছর ধরে দেশ শুধু অধিকারই বিলি করেছে, কর্তব্য নয়। ভাষা প্রয়োগের ক্ষেত্রেও যত্নবান হওয়া উচিত। এমন ভাষা ব্যবহার করা উচিত নয়, যা অন্যের অনুভূতিতে আঘাত করে।সূর্যকান্ত, ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিঅধ্যাপক মাহমুদাবাদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট, বৈরিতা সৃষ্টির চেষ্টা, বিচ্ছিন্নতাবাদে উসকানি, সশস্ত্র বিদ্রোহ, নাশকতা ও ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
আরও পড়ুননারীর অবমাননাকারী মন্ত্রী মুক্ত থাকলেও বিজেপির মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে গ্রেপ্তার অধ্যাপক১৯ মে ২০২৫আলি খান মাহমুদাবাদের হয়ে আজ সুপ্রিম কোর্টে লড়াই করেন কপিল সিব্বাল। এই আইনজীবী বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই পোস্ট করার পেছনে অধ্যাপকের কোনো অপরাধমূলক উদ্দেশ্য ছিল না।
বিচারপতি সূর্যকান্ত তা সত্ত্বেও বেশ কড়া ভাষায় বলেন, মতপ্রকাশের অধিকার সবার আছে। কিন্তু এই সময়ে এই বিষয়ে কথা বলা কি উচিত? দেশ এমন একটা অবস্থার মধ্য দিয়ে চলছে। দানবেরা এল ও মানুষদের মেরে চলে গেল। এখন দরকার প্রত্যেকের ঐক্যবদ্ধ থাকা। এই সময়ে এমন সস্তা প্রচারের কী দরকার?
বিচারপতি সূর্যকান্ত বলেন, অধিকার যেমন আছে, তেমন কর্তব্যবোধও থাকা দরকার। মনে হচ্ছে ৭৫ বছর ধরে দেশ শুধু অধিকারই বিলি করেছে, কর্তব্য নয়। তিনি এ কথাও বলেন, ভাষা প্রয়োগের ক্ষেত্রেও যত্নবান হওয়া উচিত। এমন ভাষা ব্যবহার করা উচিত নয়, যা অন্যের অনুভূতিতে আঘাত করে।
আরও পড়ুনপাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের পর শিক্ষাবিদ, শিল্পীদের নানাভাবে হয়রানি করছে বিজেপি সরকার২২ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনপাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান নিয়ে পোস্ট দেওয়ায় ভারতীয় অধ্যাপক গ্রেপ্তার১৯ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রব ন ন ব চ রপত দরক র
এছাড়াও পড়ুন:
অবসরপ্রাপ্ত মুয়াজ্জিনের জন্য পেনশন চালু করল কমিটি
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় অবসরপ্রাপ্ত এক মুয়াজ্জিনের জন্য পেনশন চালু করেছে মসজিদ কমিটি। তাকে আমৃত্যু প্রতি মাসে এক হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলে মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তাদের এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সবাই।
শনিবার (৫ জুলাই) আছরের নামাজ শেষে উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের মাতুব্বর বাড়ি জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন মোহাম্মদ ইসমাইল পাহলানকে (৭০) বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এসময় তার হাতে ২৫ হাজার টাকা, নতুন পোষাক, জায়নামাজ ও তসবিহ উপহার হিসেবে তুলে দেওয়া হয়।
মসজিদ কমিটি সূত্রে জানা যায়, ইসমাইল পাহলান গত ৩০ বছর ধরে মাতুব্বর বাড়ি জামে মসজিদের মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করেছেন। তার খেদমতে এলাকার মুসল্লিরা খুশি হয়ে এমন ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
পাগলা মসজিদে দান করা যাবে অনলাইনে
জৌলুস হারাচ্ছে ঐতিহাসিক ‘ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ’
মুয়াজ্জিন মোহাম্মদ ইসমাইল পাহলান বলেন, “তারা আমাকে যেভাবে বিদায়ী সংবর্ধনা দিয়েছে এতে আমি অনেক আনন্দিত। আল্লাহর কাছে লাখো শুকরিয়া আদায় করছি। মসজিদের মুসল্লি এবং কমিটির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করব।”
মসজিদ কিমিটির সভাপতি ইভান মাতুব্বর বলেন, “মসজিদে দীর্ঘ বছর খেদমত করে বিদায় নেওয়ার সময় ইমাম-মুয়াজ্জিনকে খালি হাতে ফিরে যেতে হয়। যেটা কষ্টের বিষয়। এটি উপলব্ধি করে মুয়াজ্জিন সাহেবকে নগদ অর্থ সম্মাননা হিসেবে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া তাকে প্রতিমাসে মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে এক হাজার টাকা করে অবসর ভাতা দেওয়া হবে। এটা একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।”
ঢাকা/ইমরান/মাসুদ