সহকারী অধ্যাপক নাদিরা ইয়াসমিনকে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে যোগদান করতে না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কলেজেরই একদল শিক্ষার্থী। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ‘সাধারণ শিক্ষার্থীর’ ব্যানারে তারা কলেজের উপাধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করে এমন ঘোষণা দেন। এ সময় তারা অধ্যক্ষকে না পেয়ে উপাধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি দেন। পরে ওই শিক্ষার্থীরা সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান স্মারকলিপি দিতে। সেখানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের কাছে তারা স্মারকলিপি দেন। 

স্মারকলিপি হস্তান্তরকালে উপস্থিত ছিলেন- সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মো.

বখতিয়ার হোসেন, রবিউল ইসলাম, ফাহমিদ আলম, ঝুমা মারিয়াম ও আব্দুল্লাহ আল মামুন।

শিক্ষক নাদিরা ইয়াসমিনের যোগদানের বিরোধিতা করে বখতিয়ার হোসেন বলেন, ‘শিক্ষক নাদিরা ইসলাম বিদ্বেষী। তিনি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে ইসলাম ধর্মের অবমাননা করেছেন। এসব কারণে তাকে সাতক্ষীরা কলেজে যোগদানে বিরোধিতা করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘উত্তরাধিকার আইন নিয়ে তিনি ইসলামবিরোধী বক্তব্য দিয়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছেন। সাতক্ষীরায় তিনি যোগদান করলে সকল শিক্ষার্থীকে নিয়ে বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ মো. মোস্তাসিম বিল্লাহ বলেন, ‘কয়েকজন শিক্ষার্থী এসে অধ্যক্ষ বরাবর একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন। অধ্যক্ষ হজ পালনের জন্য দেশের বাইরে অবস্থান করা আমি স্মারকলিপি গ্রহণ করেছি।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ২ জুন নরসিংদী সরকারি কলেজে শিক্ষক নাদিরা ইয়াসমিনের শেষ কার্যদিবস। পরবর্তীতে তার সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে যোগদানের কথা। তবে সাতক্ষীরায় না এসে নাদিরা ইয়াসমিন ঢাকায় ডিজি মহোদয়ের কার্যালয়ে যোগদান করবেন, বিধায় তাদের কিছু করার নেই। বিষয়টি স্মারকলিপি দিতে আসা শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে বলেছি।’

এর আগে গতকাল সোমবার নরসিংদী সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক নাদিরা ইয়াসমিনকে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে বদলি করা হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের উপসচিব মো. মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বদলির এ তথ্য জানানো হয়। গত রোববার হেফাজতে ইসলামের ‘৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের’ আলটিমেটাম দেওয়ার পরদিন তাকে বদলি করা হয়। 

নাদিরা ইয়াসমিন নরসিংদী জেলায় নারী অধিকারকর্মী হিসেবে পরিচিত। ‘নারী অঙ্গন’ নামে তার একটি সংগঠন রয়েছে। এ ছাড়া ‘নারী অঙ্গন’ নামের একটি ওয়েব পোর্টালের সম্পাদক তিনি। সম্প্রতি ‘হিস্যা’ নামে একটি ম্যাগাজিনে ‘বিতর্কিত লেখা’ ছাপানোর অভিযোগ তুলে তাকে অপসারণ ও শাস্তির দাবি জানায় হেফাজতে ইসলাম। একাধিক প্রতিবাদ সমাবেশ ও স্বারক লিপি প্রদান করে।  

রোববার নরসিংদী জেলা হেফাজতে ইসলামের সদস্যরা সকাল ১১টায় শহরের শিক্ষা চত্বরে প্রতিবাদ সভা করে। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান তারা। সেখানে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরীর কাছে স্বারকলিপি দেন। এ সময় তারা শিক্ষক নাদিরা ইয়াসমিনকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বদলির আলটিমেটাম দেন। এতে প্রশাসন ব্যর্থ হলে জেলায় যে কোনো অঘটনের জন্য প্রশাসন দায়ী থাকবে বলে উল্লেখ করেন তারা। আলটিমেটামের পরদিন সোমবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে নাদিরা ইয়াসমিনকে বদলি করা হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: নরস দ বদল স ম রকল প কল জ র ইসল ম সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

দলীয় গন্ডির বাইরে গিয়ে মৌলিক সংস্কার প্রশ্নে সবাইকে একমত হওয়ার আহ্বান আলী রীয়াজের

দলীয় গন্ডির বাইরে গিয়ে মৌলিক সংস্কার প্রশ্নে একমত হওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেছেন, সব বিষয়ে একমত হওয়ার কোনো বিষয় নেই। আমরা সব বিষয়ে একমত হবো না। কিছু মৌলিক জায়গায় এক হতে হবে। যেমনটি আমরা একমত হয়েছিলাম গত বছরের জুলাইয়ে ফ্যাসিবাদের পতন প্রশ্নে।

আজ শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদ আয়োজিত ‌‘ছাত্র-শ্রমিক জনতার গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি - বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আলী রীয়াজ আরও বলেন, ‘রাষ্ট্র কাঠামো গণতন্ত্রায়নের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তুলতে হবে। এ লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যেন আমরা ঘোষণাপত্রে বর্ণিত সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারি।’

তিনি বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের রক্ত আমাদের কিছু দায়িত্ব দিয়েছে। এই দায়িত্বটা কতটুকু পালন করতে পারলাম, আসুন নিজেকে সেই প্রশ্নটা করি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ