জমি ও ফ্ল্যাট নিবন্ধন ব্যয় আরও কমল
Published: 26th, June 2025 GMT
জমিজমা বিক্রিতে অপ্রদর্শিত অর্থ কমিয়ে আনতে নিবন্ধন ব্যয় আরেক দফা কমিয়েছে সরকার। তারপরও ঢাকা মহানগরে জমি বা প্লট এবং ফ্ল্যাটের নিবন্ধন ব্যয় সাড়ে ১২ শতাংশ হবে। অর্থাৎ ১ কোটি টাকার সম্পদ নিবন্ধনে সাড়ে ১২ লাখ টাকা দিয়ে তা নিবন্ধন করা যাবে।
গত রোববার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট চূড়ান্ত অনুমোদনের সময় সম্পত্তি নিবন্ধনে উৎসাহ দিতে মূলধনি মুনাফা কর বা উৎসে কর কমানো হয়। ২ জুন প্রস্তাবিত বাজেটে প্রকৃত বিক্রয়মূল্যে সম্পত্তি নিবন্ধনে উৎসাহ দিতে উৎসে কর এক দফা ছাড় দেয় অন্তর্বর্তী সরকার।
একই সঙ্গে অনুমোদন হওয়া বাজেটে ফ্ল্যাট ও ভবনে বিনিয়োগ করে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে। ২ জুন প্রস্তাবিত বাজেটে অ্যাপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাট এবং ভবন কেনায় কালোটাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখা হয়।
বর্তমানে জমি বা সম্পত্তি হস্তান্তরে উৎসে কর ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে ৮ শতাংশ, অন্যান্য সিটি করপোরেশন এলাকার জন্য ৬ শতাংশ এবং পৌরসভা পর্যায়ে ৪ শতাংশ। ২ জুন বাজেট প্রস্তাবকালে প্রথম দফায় এটি কমিয়ে যথাক্রমে ৬, ৪ ও ৩ শতাংশ করা হয়। তবে বাজেট অনুমোদনের সময় গত রোববার তা করা হয়েছে ৫, ৩ ও ২ শতাংশ।
জানা যায়, জমি বা প্লট ও ফ্ল্যাট নিবন্ধনে উৎসে কর ছাড়াও দেড় শতাংশ স্ট্যাম্প শুল্ক, নিবন্ধন ফি ১ শতাংশ, স্থানীয় সরকার ফি ৩ শতাংশ এবং ভ্যাট ২ থেকে সাড়ে ৪ শতাংশ ছিল। এর মধ্যে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৬০০ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাট পর্যন্ত ২ শতাংশ এবং তার বেশি আয়তনের ফ্ল্যাটে সাড়ে ৪ শতাংশ ভ্যাট। জমি বা প্লটে ভ্যাট ২ শতাংশ। তার মানে, ঢাকার গুলশানে ১ হাজার ৬০০ বর্গফুটের কম আয়তনের একটি ফ্ল্যাট নিবন্ধনে এত দিন ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ অর্থ লাগত। এখন সেটি কমে হবে সাড়ে ১২ শতাংশ।
এনবিআর ২০২৩ সালে ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকা ও এর বাইরের জমিকে মৌজা অনুযায়ী ক থেকে ঙ—এই পাঁচ শ্রেণিতে ভাগ করে। তারপর থেকে মৌজার অবস্থানভেদে জমির শ্রেণিবিভাগ অনুযায়ী কর নির্ধারণ হয়।
এনবিআরের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ‘ক’ শ্রেণির মধ্যে রয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ, গণপূর্ত অধিদপ্তর ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন বাণিজ্যিক এলাকা। আর ক শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত সংস্থাগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকা আবাসিক এলাকাগুলো রয়েছে ‘খ’ শ্রেণিতে। অন্যদিকে ক শ্রেণিতে উল্লেখিত সংস্থাগুলোর নিয়ন্ত্রণে নেই, কিন্তু আবাসন কোম্পানি বা ভূমি উন্নয়নকারী প্রতিষ্ঠিত বাণিজ্যিক এলাকাকে রাখা হয়েছে ‘গ’ শ্রেণিতে। এসব স্থানের (গ শ্রেণিভুক্ত) আবাসিক এলাকাকে রাখা হয়েছে ‘ঘ’ শ্রেণিতে। আর ক, খ, গ, ঘ ছাড়া বাকি সব জমি ‘ঙ’ শ্রেণিতে থাকবে।
এত দিন ঢাকার গুলশান, বনানী, মতিঝিল ও তেজগাঁও থানার মৌজার সব শ্রেণির জমির ক্ষেত্রে দলিলে উল্লেখিত জমির মূল্যে ৮ শতাংশ হারে উৎসে কর ধার্য ছিল। সেটিকে কমিয়ে আগামী অর্থবছর থেকে ৫ শতাংশ করা হচ্ছে। একইভাবে ধানমন্ডি, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল, রমনা, পল্টন, নিউমার্কেট ও কলাবাগান থানার অন্তর্গত মৌজার ক্ষেত্রে জমির মূল্যে ৮ শতাংশের পরিবর্তে এখন ৫ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হবে। একই ভাবে ঢাকার অন্যান্য মৌজার জমি নিবন্ধনে করহার কমেছে।
ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে এসব এলাকা বাদে অন্যান্য সিটি করপোরেশন ও জেলা সদরে জমি নিবন্ধনে জমির দামের ৬ শতাংশের পরিবর্তে এখন ৩ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। এর বাইরে অন্য যেকোনো পৌরসভায় ৪ শতাংশের পরিবর্তে ২ শতাংশ হারে জমি নিবন্ধন কর দিতে হবে গ্রাহকদের।
এনবিআরের তথ্যানুযায়ী, ক থেকে ঘ শ্রেণির জমিতে ফ্ল্যাট কিংবা বাণিজ্যিক স্পেসে প্রতি বর্গমিটারে ৮০০ টাকা অথবা দলিলে উল্লেখ করা মূল্যের ৮ শতাংশের পরিবর্তে এখন ৫ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। আর ঙ শ্রেণিতে করহার প্রতি বর্গমিটারে ৫০০ টাকা কিংবা ৩ শতাংশ।
আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিবন্ধন ব্যয় ৩ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্তটি ইতিবাচক। এতে আগের চেয়ে ফ্ল্যাট নিবন্ধন কিছুটা হলেও বাড়বে। তবে আমরা অনেক দিন ধরেই বলে আসছি, নিবন্ধন ব্যয় ৭-৮ শতাংশে নিয়ে আসতে হবে। ধাপে ধাপে সেটি করা গেলে ফ্ল্যাটের অধিকাংশ ক্রেতা তাঁদের সম্পদ নিবন্ধন করবেন। তাতে সরকারের রাজস্ব আয় বেড়ে যাবে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সাথে মহানগরী জামায়াতের আলোচনা সভা
২৪ জুন মঙলবার বাদ মাগরিব চাষাঢ়া এক মিলনায়তনে শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নারায়ণগঞ্জ ৫ (সদর- বন্দর) শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের সাংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমাদ।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসাবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরী জামায়াতের আমীর এবং নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা আবদুুল জব্বার।
মহানগরী জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি এইচ এম নাসির উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন মহানগরী নায়েবে আমীর মাওলানা আবদুুল কাইয়ুম, সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মানোয়ার হোসাইন, সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ জামাল হোসাইন, ডা: আলী আশরাফ, বন্দর উপজেলা জামায়াতের আমীর খোরশেদ আলম ফারুকী সহ মহানগরী শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
এসময় মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমাদ বলেন, শ্রমিকরা হলো আল্লাহর বন্ধু, শ্রমিকদের সাথে বিনয়ের সাথে সর্বোত্তম আচরণ করতে হবে।