মাদকের অবৈধ পাচার ও অপব্যবহারের কারণে জনস্বাস্থ্য, আইনশৃঙ্খলা ও দেশের অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস-২০২৫ উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য, ‘দ্য এভিডেন্স ইজ ক্লিয়ার: ইনভেস্ট ইন প্রিভেনশন। ব্রেক দ্য সাইকেল। স্টপ অর্গানাইজড ক্রাইম।’ মানে হলো, ‘প্রমাণ স্পষ্ট: প্রতিরোধে বিনিয়োগ করুন। চক্র ভেঙে ফেলুন। সংঘবদ্ধ অপরাধ দমন করুন।’

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসনের কারণে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যেকোনো দেশের উন্নতির প্রধান নিয়ামক হলো কর্মক্ষম বিপুল যুবশক্তি। আধুনিক ও প্রযুক্তিগত শিক্ষায় শিক্ষিত ও দক্ষ যুবশক্তিই পারে দেশকে চরম শিখরে নিয়ে যেতে। ভবিষ্যতে উন্নত এবং সফল রাষ্ট্রের কাতারে উপনীত হতে হলে আমাদের এই তরুণসমাজকে মাদক থেকে অবশ্যই মুক্ত রাখতে হবে।’

দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষই নানাভাবে অবৈধ মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের দেশে মাদক চোরাচালানের একটি ভয়াবহ বিষয় হলো নারী, শিশু ও কিশোরদের এই গর্হিত কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে তাদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি তাদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে।’

দেশকে মাদকমুক্ত করতে অপ্রতুল ও সীমিত জনবল নিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কাজ করছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘প্রায় ১৮ কোটি জনসংখ্যার দেশে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে বর্তমানে নিয়োজিত রয়েছে ২ হাজার ৯৪৩ জন। এর মধ্যে এনফোর্সমেন্টে (আইন প্রয়োগে) নিয়োজিত রয়েছেন ১ হাজার ৬২২ জন। অপরাধ দমনে কাজ করে এমন অন্যান্য সংস্থার জনবলের সঙ্গে তুলনা করলে এ সংখ্যা সীমিত। এ ছাড়া যানবাহন–স্বল্পতাসহ অপরাধ দমনে ও অভিযান পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও উন্নত উপকরণের অভাব রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চলমান প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’

মাদকাসক্তদের জন্য সরকারের বিভাগীয় পর্যায়ে আলাদা কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এ ছাড়া সম্প্রতি সাতটি বিভাগীয় শহরে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাতটি বিভাগীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো.

খোদা বখস চৌধুরী এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাসান মারুফ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ হ ঙ গ র আলম অন ষ ঠ ন ব যবহ র অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি

দেশের মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশি টহল, নজরদারি বাড়ানোসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা জোরদারের দাবি জানিয়েছে মানি চেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এমসিএবি)।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমসিএবি এই দাবি জানায়।

‘ঢাকাসহ সমগ্র বাংলাদেশের মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানসমূহে ছিনতাই, ডাকাতিসহ হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি এবং সমগ্র দেশব্যাপী অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসা পরিচালনার প্রতিবাদে’ এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সারা দেশের মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছিনতাই, ডাকাতিসহ হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে গেছে। তাই নিরাপত্তা নিশ্চিতে কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও এমসিএবির মনোনীত প্রতিনিধি সমন্বয়ে টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে। এই টাস্কফোর্স অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান চালাবে।

সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—বৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানে ছিনতাই-ডাকাতির ঘটনার দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ছিনতাই-ডাকাতি হওয়া অর্থ ফেরত দেওয়া বা যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান। বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে হয়রানি বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।

এমসিএবির মহাসচিব গৌতম দে বলেন, ৫ আগস্টের পর মবের নামে সুযোগসন্ধানীরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলোয় ছিনতাই, ডাকাতিসহ হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। অবিলম্বে এসব কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা জরুরি। একই সঙ্গে ছিনতাই ও ডাকাতি হয়ে যাওয়া অর্থ ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এনবিআর ভবন অবরুদ্ধ করে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী
  • নির্যাতন প্রতিরোধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে রাষ্ট্রকে
  • মাদক নির্মূলে সবার আগে গডফাদারদের ধরতে হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • জাতীয় নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকবে
  • সরকারের নিষ্ক্রিয়তায় মানবাধিকার লঙ্ঘন, ৩০ নাগরিকের বিবৃতি
  • ৩০ নাগরিকের বিবৃতি: সরকারের নিষ্ক্রিয়তায় মানবাধিকারের অঙ্গীকার লঙ্ঘিত হচ্ছে
  • ‘মব ভায়োলেন্স’ বন্ধ করা যাচ্ছে না, তবে কমিয়ে আনা হচ্ছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • ‘মব’ করে হেনস্তা ও অপরাধীর বিমানবিকীকরণ ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত নয়: জোনায়েদ সাকি
  • মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি