‘নিত্যপণ্যের দাম কমাও, জানমালের নিরাপত্তা দাও’ এমন আহ্বানের মধ্য দিয়ে শেরপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি জেলা প্রতিনিধি সম্মেলন। এ সম্মেলনে শতাধিক পণ্যের ওপর নতুন করে আরোপিত শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে।

রবিবার (১২ জানুয়ারি) বিকেলে শহরের পৌর টাউন হল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জননেতা সাইফুল হক। 

এসময় তিনি বলেন, “গত ৫ জুলাই ছাত্র-শ্রমিক জনতার গণঅভ্যুন্থানের চেতনায় সকল বৈষম্যের বিলোপ, অধিকার, ইনসাফ ও মুক্তির যে প্রত্যাশা ও সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল, গত ৬ মাসেই অন্তর্বর্তীকালীণ সরকারের কর্মকাণ্ডে অনেকটা পথ হারাবার উপক্রম হয়েছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ে এমনিতেই বাজারে নাভিশ্বাস উঠেছে। তারওপর বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের পেসক্রিপশনে পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিস্ট সরকারের মতো অর্থবছরের মাঝপথে এসে শতাধিক পণ্যে নতুন করে শুল্ক ও ভ্যাট আরোপ করায় মরার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে উঠেছে। এতে জণমনে বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।”

এসময় তিনি অবিলম্বে নতুন করে শতাধিক পণ্যে আরোপিত শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহারের দারি জানান। সেইসাথে অন্তবর্তী সরকারের প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে মতৈক্যের ভিত্তিতে দ্রুত নির্বাচন আয়োজনেরও দাবি জানান।

শেরপুর জেলা প্রতিনিধি সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মো.

ফিরোজ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি কেন্দ্রিয় নেতা বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, সজিব সরকার রতন প্রমুখ।

এছাড়াও জেলা সিপিবি নেতা আবু আহমেদ খান বাবুল, গোলাম রব্বানী সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

ঢাকা/তারিকুল/এস

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

ইসলামী ব্যাংকের এমডিকে অপসারণ, জালিয়াতির নথি দুদকে

বিভিন্ন জালিয়াতিতে সম্পৃক্ততার দায়ে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের বিতর্কিত এমডি মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে অপসারণ করা হয়েছে। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক মঙ্গলবার এতে অনাপত্তি দিয়েছে। আগামী এক মাস পর তথা ২০ জুন এ অপসারণাদেশ কার্যকর হবে। এর আগে গত ৬ এপ্রিল তাকে বাধ্যতামূলকভাবে তিন মাসের ছুটিতে পাঠিয়েছিল ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ।

জানা গেছে, মুনিরুল মওলাকে অপসারণের পাশাপাশি পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তার অনিয়ম–জালিয়াতির নথি পাঠানো হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। এখন বিধি অনুযায়ী সংস্থাটি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান সমকালকে বলেন, ইসলামী ব্যাংকের সাম্প্রতিক অডিটে বিভিন্ন জালিয়াতির সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। সে আলোকে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠিয়েছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাতে অনাপত্তি দিয়েছে।

ইসলামী ব্যাংকের একজন পরিচালক সমকালকে বলেন, অপসারণের মানে তিনি দায়মুক্তি পাবে তেমন না। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে দুদকসহ সরকারের অন্য সংস্থা। এ জন্য যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা নিয়েছে। 

সার্বিক বিষয়ে বক্তব্যের জন্য মনিরুল মওলাকে ফোন করে বন্ধ পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি ইসলামী ব্যাংক দখল করে এস আলম গ্রুপ। বিভিন্ন উপায়ে শুধু এই ব্যাংক থেকে ৯১ হাজার কোটি টাকা বের করে নেওয়ার তথ্য পেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এস আলম ইসলামী ব্যাংক দখলে নেওয়ার পর ব্যাংকটিতে প্রভাবশালী হয়ে উঠেন মনিরুল মওলা। দ্রুততার সঙ্গে তাকে পদোন্নতি দিয়ে প্রথমে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এমডি নিয়োগ দেওয়া হয়। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ব্যাংকটির পর্ষদের বেশিরভাগ সদস্য ও অধিকাংশ ডিএমডি আত্মগোপনে চলে যান। অদৃশ্য কারণে মনিরুল মওলা বহাল তবিয়তে ছিলেন।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের প্রকৃত খেলাপি ঋণ ঠেকেছে ৬৫ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা। মোট ঋণের যা ৪২ দশমিক ২২ শতাংশ। এতে করে নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬৯ হাজার ৮১৬ কোটি টাকা। প্রভিশন সংরক্ষণের জন্য ব্যাংকটি এখন ২০ বছর সময় চেয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আবেদন করেছে। অবশ্য ইসলামী ব্যাংক ডিসেম্বর ভিত্তিক যে তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দিয়েছিল সেখানে খেলাপি ঋণ দেখানো হয় ৩২ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা। ওই সময় পর্যন্ত বিতরণ করা এক লাখ ৫৫ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা ঋণের যা ছিল ২১ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ