আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে আজ থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করেছে। আজ দেওয়া হচ্ছে আগামী ৩১ মের টিকিট। এবার যাত্রীরা অগ্রিম টিকিট কেবল অনলাইনেই কাটতে পারছেন। স্টেশনের কাউন্টারে কোনো টিকিট বিক্রি হচ্ছে না।

আজ বুধবার সকাল ৮টা থেকে অনলাইনে টিকিট দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

এ সময় পশ্চিমাঞ্চলে চলাচল করা ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কিনতে পারছেন যাত্রীরা। আর পূর্বাঞ্চলে চলাচল করা ট্রেনের টিকিট দুপুর ২টার সময় অনলাইনে দেওয়া হবে।

রেলওয়ের টিকিট বিক্রির ওয়েবসাইট প্রবেশ করে দেখা যায়, উত্তরাঞ্চলের ট্রেনগুলোর টিকিটের চাহিদা যাত্রীদের বেশি। এই অঞ্চলে চলাচল করা বেশির ভাগ ট্রেনের টিকিট সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে শেষ হয়ে গেছে। তবে উত্তর অঞ্চলের কিছু ট্রেনের টিকিট এখনো আছে।

কমলাপুরের স্টেশন ম্যানেজার মো.

শাহাদাত হোসেন বলেন, আজ থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। আগামী ৩১ মে থেকে ট্রেনের আনুষ্ঠানিক ঈদযাত্রা শুরু হবে। ৩১ মের টিকিট আজ দেওয়া হচ্ছে অনলাইনে। আমরা ধারণা করছি, আগামী ৪ এবং ৫ জুনের অগ্রিম টিকিটের চাহিদা যাত্রীদের সবচেয়ে বেশি থাকবে। তবে ট্রেনের আসনসংখ্যা সীমিত, ফলে সবাই টিকিট পাবেন না সেটাও বাস্তবতা।

রেলওয়ে জানিয়েছে, এবার ঈদে পাঁচ রুটে ১০টি স্পেশাল ট্রেন চলবে। এসব ট্রেনের মধ্যে কিছু ট্রেন আগামী ৪ থেকে ৬ জুন এবং ঈদের পরে ৯ থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত চলাচল করবে। এ ছাড়া ঈদের দিনও কিছু ট্রেন চলবে। স্পেশাল ট্রেনের টিকিট স্টেশনের কাউন্টার থেকে পাওয়া যাবে, অনলাইনে বিক্রি হবে না।

এ ছাড়া এবার ঈদে ৪৩টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে সারাদেশে। এসব ট্রেনের মোট আসন সংখ্যা প্রায় ৩৩ হাজার ৩১৫। এর বাইরে প্রতিটি ট্রেনের ২৫ শতাংশ স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি করা হবে স্টেশনের কাউন্টার থেকে।

এদিকে, আগামীকাল বৃহস্পতিবার দেওয়া হবে ১ জুনের টিকিট, ২৩ মে দেওয়া হবে ২ জুনের টিকিট, ২৪ মে দেওয়া হবে ৩ জুনের টিকিট, ২৫ মে দেওয়া হবে ৪ জুনের টিকিট, ২৬ মে দেওয়া হবে ৫ জুনের টিকিট, ২৭ মে দেওয়া হবে ৬ জুনের অগ্রিম টিকিট। ঈদের ফিরতি যাত্রার টিকিট বিক্রি শুরু হবে ৩০ মে। এদিন দেওয়া হবে আগামী ৯ জুনের অগ্রিম টিকিট।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ল দ শ র লওয়

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতে মাওবাদী সাধারণ সম্পাদকসহ ২৭ জনকে হত্যা

ভারতে নিষিদ্ধ ও সশস্ত্র বামপন্থী সংগঠন কমিউনিস্ট পার্টি-মাওবাদীর (সিপিআই-এম) সাধারণ সম্পাদক নাম্বালা কেশভা রাও ওরফে বাসভরাজসহ ২৭ জন নকশালকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্বয়ং এই সংবাদ নিশ্চিত করেছেন।

এই অভিযানকে যুগান্তকারী সাফল্য হিসেবে চিহ্নিত করে অমিত শাহ বলেছেন, তিন দশকের মধ্যে এই প্রথম সিপিআইএমের একজন সাধারণ সম্পাদককে নিরাপত্তা বাহিনী হত্যা করতে পেরেছে। তিনি অভিযানে জড়িত নিরাপত্তাকর্মীদের সাহসিকতা ও নিষ্ঠার প্রশংসা করেন।

মধ্য ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যের দক্ষিণ ছত্তিশগড়ের নারায়ণপুর জেলার অবুজমাড়ের ঘন জঙ্গলে এই অভিযান চালানো হয়। এই অভিযানেই আদতে বাসভরাজের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। মাওবাদী নেতা বাসভরাজ তেলেঙ্গানা রাজ্যের মানুষ। তিনি ২০১৮ সালে তাঁর পূর্বসূরি মুপ্পালা লক্ষ্মণ রাওয়ের কাছ থেকে ভারতের বৃহত্তম সশস্ত্র এই বামপন্থী সংগঠনের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। অতীতে তিনি মাওবাদীদের সামরিক কমিশনের দায়িত্বে ছিলেন।

বাসভরাজ দীর্ঘ সময় দলের সামরিক কাজকর্মের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি একাধিক সামরিক অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছেন, যেসব অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনীর অনেক সদস্য নিহত হয়েছেন। ২০১৮ সালে তাঁকে দল সর্বোচ্চ পদে নিয়োগ দেয়।

বাসভরাজের মৃত্যুর পরে এখন নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, ভারতে নিষিদ্ধ এই সংগঠনের পক্ষে আর সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করা সম্ভব নয়। এই অভিযানে ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা ও মহারাষ্ট্রজুড়ে ৫৪ জন নকশাল সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নকশালের ৮৪ জন সদস্য আত্মসমর্পণ করেছেন বলেও পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে।

এর ফলে নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, ছত্তিশগড় রাজ্যের যেখানে মাওবাদীরা প্রায় ৫০ বছর ধরে গ্রামের মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে থেকে তাঁদের সদর দপ্তর ধরে রাখতে পেরেছিলেন, সেখান থেকে তাঁরা পুরোপুরি উৎখাত হতে চলেছেন।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আগেই বলেছিলেন, ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে সিপিআইয়ের (মাওবাদী) অস্তিত্ব বিলুপ্ত হবে। আজ বুধবারও তাঁর সেই বক্তব্য মনে করিয়ে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

সাম্প্রতিক অভিযানের ঠিক আগে ‘অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্ট’ নামের আরেকটি অভিযান মাওবাদীদের প্রবলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। গত ২১ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ১১ মে পর্যন্ত ওই অভিযান চলে। ২১ দিনের অভিযানে ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা এবং মহারাষ্ট্রের নিরাপত্তা বাহিনী, সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স, স্পেশাল টাস্কফোর্স, বিভিন্ন জেলাস্তরের স্থানীয় বাহিনী এবং অঞ্চল নিরাপত্তা বাহিনী অংশ নেয়।

মাওবাদীদের যেসব সামরিক অবকাঠামো ছিল, ২১ দিনের অভিযানে সেগুলো অনেকটাই ধ্বংস হয়ে যায়। এরপর আজ বুধবার তাদের সাধারণ সম্পাদকের মৃত্যুর সংবাদের সঙ্গে সঙ্গে মাওবাদীদের ছত্তিশগড়ে বিলুপ্তি এখন সময়ের অপেক্ষা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ