মহাসড়কে আবারও বাসে ডাকাতি-নারীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ
Published: 21st, May 2025 GMT
ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে মঙ্গলবার রাতে ‘আল ইমরান’ নামের পরিবহনের একটি বাসে ডাকাতি হয়েছে। বাসটি আজ বুধবার (২১ মে) সকালে টাঙ্গাইল সদর থানায় নেওয়া হয়।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে আজ বুধবার ভোর ৫টা পর্যন্ত যাত্রীবাহী বাসটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডাকাত দল যাত্রীদের সবকিছু লুটে নেয়। লুটপাটের সময় নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনাও ঘটে বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা।
বাসের চালক, সুপারভাইজার ও যাত্রীরা জানান, মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে ঢাকার আবদুল্লাহপুর থেকে আল ইমরান পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস রংপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
বাসের সহকারী আতিকুর রহমান জানান, পথে সাভারের নরসিংহপুর, বাইপাইল, আশুলিয়া থেকে কিছু যাত্রী ওঠেন। ১০ জন নারীসহ ৪৫ জন যাত্রী নিয়ে বাসটি রাত সাড়ে ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা অতিক্রম করে।
যমুনা সেতুর পূর্ব প্রান্তের সংযোগ সড়কের কয়েক কিলোমিটার যাওয়ার পর যাত্রীবেশী ৮-১০ জন ডাকাত ছুরি, চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্রের মুখে চালকের কাছ থেকে বাসটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরে তারা যাত্রী, বাসের চালকসহ সবার চোখ–মুখ বেঁধে ফেলে।
যমুনা সেতুর পূর্ব প্রান্তের গোলচত্বর এলাকায় গিয়ে বাসটি ঘুরিয়ে আবার ঢাকার দিকে চলতে থাকে। চলাচলের সময় প্রত্যেক যাত্রীকে তল্লাশি করে মুঠোফোন, নগদ টাকা, সোনা ও অন্য মালামাল লুটে নেয়। তারা বাসটি নিয়ে সাভারের চন্দ্রা-আশুলিয়া পর্যন্ত যায়। পরে রাতভর কয়েকবার বাসটি নিয়ে ওই এলাকা থেকে টাঙ্গাইল পর্যন্ত চক্কর দেয়।
বাসের চালক আবেদ আলী জানান, সারা রাতে বাসটি নিয়ে ডাকাতেরা চার–পাঁচবার টাঙ্গাইল ও চন্দ্রা-আশুলিয়া যাওয়া-আসা করে। ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে টাঙ্গাইল শহরের বাইপাস সড়কের শিবপুর এলাকায় বাসটি রেখে ডাকাত দল চলে যায়। সকালে যাত্রীদের নিয়ে বাসটি টাঙ্গাইল সদর থানায় যায়।
বুধবার সকালে সদর থানায় গিয়ে দেখা যায়, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা বাসের স্টাফ ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলছেন।
বাসযাত্রী বগুড়ার আদমদীঘির জুয়েল মিয়া জানান, টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য নারী যাত্রীদের তল্লাশির সময় শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। তার চোখ–মুখ বাঁধা ছিল। তবে তিনি নারী যাত্রীদের কান্নাকাটি ও কাকুতি-মিনতি শুনতে পান।
অপর যাত্রী রংপুরের কাউনিয়া এলাকার আকাশ মিয়া জানান, হাত-পা, চোখ-মুখ বেঁধে ডাকাতেরা প্রত্যেক যাত্রীর দেহ কয়েকবার তল্লাশি করে। যার যা কিছু ছিল সব নিয়ে গেছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানবীর আহমদ বলেন, “মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে। ডাকাত দলকে চিহ্নিত করতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।”
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এই মহাসড়কে ইউনিক রয়েলসের একটি বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। ২০২২ সালের ২ আগস্ট একই কায়দায় কুষ্টিয়াগামী একটি বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
ঢাকা/কাওছার/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সদর থ ন র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
চিত্র, শব্দ ও সংলাপ একসঙ্গে তৈরি করছে বাইদুর এআই মডেল মিউজস্টিমার
লিখিত প্রম্পট থেকে বাস্তবধর্মী ভিডিও তৈরিতে গুগল ও ওপেনএআইয়ের সঙ্গে দৌড়ে শামিল হয়েছে চীনের প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলোও। এরই মধ্যে চীনা সার্চ ইঞ্জিন বাইদু চালু করেছে তাদের প্রথম এআই ভিডিও তৈরির মডেল ‘মিউজস্টিমার’।
চিত্র, সাউন্ড ইফেক্ট ও চীনা ভাষায় সংলাপ তিনটি উপাদান একসঙ্গে তৈরি করার ক্ষমতা রয়েছে মিউজস্টিমার মডেলের। সব উপাদান একে অপরের সঙ্গে সিঙ্ক করে তৈরি হওয়ায় ভিডিওর গুণগত মান হয় উচ্চমাত্রার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিজ্ঞাপন, বিপণন বা কনটেন্ট নির্মাণের মতো খাতে এ প্রযুক্তি সময় ও খরচ বাঁচিয়ে দিতে পারে। মূলত ব্যবসায়িক ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে তৈরি এই এআই মডেল স্থিরচিত্র থেকে স্বল্পদৈর্ঘ্য ভিডিও তৈরি করতে সক্ষম। এ ছাড়া বাইদু তাদের সার্চ প্রযুক্তিতেও এনেছে পরিবর্তন। নতুন সংস্করণে সার্চ হয়েছে আরও স্মার্ট, মাল্টিমোডাল ও ব্যবহারকারীভেদে পারসোনালাইজড।
মিউজস্টিমার একটি ‘ভিশন ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল’ বা ভিএলএম। এ ধরনের মডেল কম্পিউটার ভিশন ও প্রাকৃতিক ভাষা প্রক্রিয়াকরণের সক্ষমতা একসঙ্গে কাজে লাগায়। ফলে ছবি ও লেখার সমন্বিত বিশ্লেষণ করে এমন কাজগুলোতে এই মডেল ব্যবহার করা যায়, যেগুলোতে মাল্টিমোডাল বোঝাপড়ার প্রয়োজন পড়ে। ১০ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের ফুল এইচডি (১০৮০পি) ভিডিও তৈরি করতে পারে মিউজস্টিমার, যেখানে দৃশ্য, সংলাপ ও শব্দ একসঙ্গে এবং সঠিকভাবে সমন্বিত থাকে। প্রাথমিকভাবে যাঁরা এই মডেল ব্যবহার করেছেন, তাঁরা বলছেন, আউটপুট দেখে বিস্মিত না হয়ে উপায় নেই।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) মিউজস্টিমার দিয়ে তৈরি কয়েকটি ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে। সেখানে মডেলটির চিত্রনির্মাণ ও সাউন্ড ডিজাইনের সক্ষমতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বাইদু তিনটি স্তরে মিউজস্টিমার চালু করেছে। এগুলো হলো টার্বো, প্রো ও লাইট। প্রতিটি স্তরই মূলত এন্টারপ্রাইজ বা করপোরেট ব্যবহারকারীদের জন্য তৈরি। গুগলের ভিও থ্রি কিংবা ওপেনএআইয়ের সোরা সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য তৈরি হলেও বাইদুর মিউজস্টিমার সেখানে পরিপূর্ণভাবে ব্যবসায়িক চাহিদা পূরণের কথা মাথায় রেখে ডিজাইন করা হয়েছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, মিউজস্টিমারের মাধ্যমে চীনের জেনারেটিভ এআই খাতে প্রতিযোগিতা আরও জোরালো হলো। এরই মধ্যে বাইটড্যান্স, টেনসেন্ট ও আলিবাবার মতো প্রতিষ্ঠান এই খাতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। এদিকে গত মে মাসে গুগলের বার্ষিক ডেভেলপার সম্মেলন ‘গুগল আই/ও’তে ‘ভিও থ্রি’ মডেল উন্মোচন করা হয়, যা এর হাইপাররিয়ালিস্টিক ভিডিও তৈরির দক্ষতার জন্য প্রশংসিত হয়।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস