সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পেট্রোলিয়াম ও খনি প্রকৌশল (পিএমই) বিভাগে প্রভাষক তাজবিউল ইসলামের নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে টানা চার দিন ধরে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করছেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বিভাগের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। ফলে সব ধরনের একাডেমিক ও গবেষণাগারের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

গত শনিবার থেকে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের মধ্য দিয়ে তাজবিউল ইসলামের নিয়োগ বাতিলের দাবি করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ সিন্ডিকেটে নেওয়া সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি তুলেছেন তাঁরা।

আরও পড়ুনশাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে সিন্ডিকেট বৈঠক, বাইরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ১৭ মে ২০২৫

শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে শিক্ষকেরাও একমত বলে জানিয়েছেন পিএমই বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘শনিবার সিন্ডিকেটের ২৩৬তম সভার পর থেকে বিভাগে ক্লাস, পরীক্ষা ও ল্যাব কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ আছে। শিক্ষার্থীরা অফিসে তালা দিয়েছেন। বিভাগের শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একমত। কারণ, যোগ্যতা ছাড়া কোনো নিয়োগ বিভাগ মেনে নেবে না।’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের জুনে তাজবিউল ইসলামকে পিএমই বিভাগে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দেয় তৎকালীন প্রশাসন। অভিযোগ ওঠে, প্রভাষক পদের জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও অনিয়মের মাধ্যমে তিনি নিয়োগ পেয়েছেন। ৯ জুন বিভাগটিতে যোগদানের পর থেকেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এ নিয়োগের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর নতুন প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়ে লিখিতভাবে অভিযোগ দেয় বিভাগ। এর পরিপ্রেক্ষিতে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। কমিটির প্রতিবেদনে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেলে সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত নেয়, তাজবিউল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে, বেতনসহ সব আর্থিক সুবিধা বন্ধ থাকবে এবং লিখিত জবাব পাওয়ার পর আইন উপদেষ্টার মতামত নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পিএমই বিভাগের শিক্ষার্থী সাঈদুল ইসলাম বলেন, ‘তদন্ত কমিটির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরও গত দুই সিন্ডিকেটে এই শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল ও নিয়োগে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় আমরা পিএমই বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছি এবং বিভাগের অফিসকক্ষে তালা দিয়েছি। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলমান থাকবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সৈয়দ ছলিম মোহাম্মদ আবদুল কাদির বলেন, সিন্ডিকেটের ২৩৫তম সভার সিদ্ধান্তই কার্যকর আছে। ওই শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে প্রভাষক তাজবিউল ইসলামকে গত দুই দিনে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি ফোন ধরেননি। এ কারণে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ওই প্রভাষকের বিষয়ে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলছে জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ আমরা বুঝি। আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই ব্যবস্থা নিতে হবে। মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের প্রভাষকের বিষয়টি নিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। আমরা সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত জানিয়েছি। প্রভাষককেও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা দ্রুত বিষয়টির নিষ্পত্তির চেষ্টা করছি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প এমই ব ভ গ ল ইসল ম পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

সব দলের সম্মতিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে এবি পার্টি

জুলাই সনদকে আইনি বৈধতা দেওয়া ও বাস্তবায়নে বাস্তবসম্মত পদ্ধতি কী হতে পারে সেই বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যে পৌঁছানোর পক্ষে এবি পার্টি।

রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন এবি পার্টির নেতৃবৃন্দ। 

বৈঠক পরবর্তী সময়ে সাংবাদিকদের সামনে এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূস নির্বাচন কেন্দ্রীক সংশয় ও সন্দেহ প্রকাশ করলেও ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়ার ব্যাপারে যে দৃঢ়তা দেখিয়েছেন তার সাথে এবি পার্টি একমত। জুলাই সনদের বৈধতা ও বাস্তবায়নের পদ্ধতিতে সকল দল এখনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি তাবে অনেক বিষয়ে সকল রাজনৈতিক দল একমত বলে মনে করি। যে বিষয়ে দলগুলো ঐকমত্যে আসতে পারছে না সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত নিজেদের মধ্যে আলোচনা করা, পাশাপাশি ঐক‍্যমত‍্য কমিশনে বসে সমাধানে আসা সম্ভব।”

এসময় তিনি জুলাই সনদের বৈধতা তৈরি ও বাস্তবায়নের জন‍্য ব‍্যক্তি ও দলের আকাঙ্ক্ষার ঊর্ধ্বে থেকে জাতীয় আকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দেওয়ার আহ্ববান করেন। একইসঙ্গে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যে সংবিধানের বাইরে বা ভিতরে থেকে বাস্তবায়নের মাধ্যমে জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করার পক্ষে মতামত দেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ ব্যারিস্টার সানী আবদুল হক।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাংবিধানিক আদেশ ও গণভোটের সুপারিশ, একমত নয় দলগুলো
  • সব দলের সম্মতিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে এবি পার্টি