শিশুর কান্না শুনে ঘরে পাওয়া গেল মায়ের মরদেহ, বাবা পলাতক
Published: 21st, May 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুরে ভাড়া বাড়ির একটি কক্ষ থেকে অনবরত ভেসে আসছিল শিশুর কান্না। কৌতূহল নিয়ে এগিয়ে যান এক প্রতিবেশী। দেখেন, ঘরের দরজা খোলা। বিছানার একপাশে আট মাস বয়সী শিশুটি থেকে থেকে কাঁপছে আর কান্না করছে। পাশেই পড়ে আছে তার মায়ের মরদেহ।
আজ বুধবার সকালে পৌনে আটটার দিকে শ্রীপুরের আবদার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ওই নারীর নাম আকলিমা আক্তার (৩০)। তিনি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার নিমুরিয়া গ্রামের আদনান ইসলামের স্ত্রী ও একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক ছিলেন। ঘটনার পর থেকেই পলাতক আছেন তাঁর স্বামী।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই বাড়িতে স্বামী ও আট মাসের কন্যাশিশুটিকে নিয়ে ভাড়ায় থাকতেন আকলিমা। ওই গৃহবধূ ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার জামিরদিয়া এলাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। সকাল থেকে তাঁর স্বামী আদনানের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
ঘটনা প্রসঙ্গে প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, আজ সকালে নুরুন্নাহার নামের এক ভাড়াটে কাজ থেকে সকালে বাসায় ফেরেন। পাশের কক্ষ থেকে তিনি বারবার শিশুর কান্না শুনতে পান। কৌতূহলবশত এগিয়ে গিয়ে দেখতে পান, ঘরটির দরজা খোলা। ধাক্কা দিতেই ভেতরে দেখেন, বিছানার ওপর শুয়ে শিশুটি ভয়ে কাঁপছে। পাশেই নিথর পড়ে আছে তার মা আকলিমার মরদেহ। এ সময় আকলিমার নাকের কাছে কিছুটা রক্ত ছিল। পরে নুরুন্নাহারের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন সেখানে জড়ো হন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করেছে।
আকলিমার ভাই শামীম মুঠোফোনে জানিয়েছেন, খবর পেয়ে তিনি গ্রামের বাড়ি থেকে ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। আকলিমার তিনটি সন্তান। দুজন তাঁদের সঙ্গে বাড়িতেই থাকে। আর আট মাস বয়সী ছোট সন্তানকে নিয়ে শ্রীপুরে স্বামীর সঙ্গে থাকতেন আকলিমা। বিয়ের পর থেকে আদনান প্রায়ই তাঁর বোনকে নির্যাতন করতেন।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহম্মদ আবদুল বারিক বলেন, ‘ওই দম্পতির মধ্যে কলহ-বিবাদের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। আকলিমার স্বামী ঘটনার পর থেকেই পলাতক। মরদেহের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আমরা এটিকে হত্যাকাণ্ড ধরে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চোখে আলো ফেলা নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার জেরে কৃষককে হত্যা
ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলায় চোখে টর্চলাইটের আলো পড়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার জেরে ছুরিকাঘাতে এরশাদ আলী (৩৫) নামের এক কৃষক নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোহাগীপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত এরশাদ আলী উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোহাগীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। খবর পেয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পশ্চিম সোহাগীপাড়া গ্রামে মানিক মিয়ার মুদিদোকানে যান এরশাদ আলী। এ সময় এরশাদ আলীর চোখে টর্চলাইটের আলো ফেলে বিরক্ত করেন একই গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে সাকিব মিয়া। এ নিয়ে দুজন বাগ্বিতণ্ডায় জড়ালে স্থানীয় লোকজন মিটমাট করে দেন। পরে এরশাদ আলীসহ সবাই যে যার মতো বাড়িতে চলে যান।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ শুক্রবার সকাল ছয়টার দিকে এরশাদ আলীকে ডেকে নিয়ে আবার কথা-কাটাকাটি ও মারামারিতে জড়ান সাকিব ও তাঁর সঙ্গে আসা কয়েকজন। একপর্যায়ে এরশাদ আলীকে ছুরিকাঘাত করা হয়। স্থানীয় লোকজন আহত এরশাদ আলীকে উদ্ধার করে ধোবাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে অভিযুক্ত সাকিব মিয়াসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ।
ধোবাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন সরকার বলেন, পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে। নিহত এরশাদ আলীর শরীরে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন আছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।