মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, “সরকার তামাকজাত পণ্য থেকে যে পরিমাণ রাজস্ব পায়, তার চেয়ে তামাকজনিত রোগের চিকিৎসাব্যয় বেশি।”

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক কর নীতি বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। 

প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, “তামাক উৎপাদনের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। নদীর পাড়ে, বিশেষ করে হালদা ও তিস্তার পাড়ে তামাক চাষ হয়ে থাকে। তামাক চাষে কীটনাশক ও সার ব্যবহারের ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকায় মাছ নষ্ট হচ্ছে।” 

তিনি বলেন, “তামাক কোম্পানিগুলো জুজুর ভয় দেখিয়ে বলে থাকে, ১৫ লাখ তামাক বিক্রেতা এ পেশার সাথে জড়িত। কিন্তু, এদের বেশিরভাগই শিশু। প্রকৃতপক্ষে, তামাক বিক্রির সাথে এত সংখ্যক লোক আছে কি না, তা দেখা দরকার।”

বক্তারা দেশে তামাক কর কাঠামো বিশ্লেষণ, তামাক কোম্পানির কৌশল উদঘাটন এবং কর আরোপের সুযোগ ও চ্যালেঞ্জের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। 

তারা বলেন, “তামাকজাত দ্রব্য থেকে যে রাজস্ব আহরিত হয়, তার চেয়ে বেশি টাকা তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যয় হয়ে থাকে। তাই, এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে।”

বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসির (বিএনটিটিপি) টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য মো.

শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চ ও বিএনটিটিপির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন—রেলপথ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মীর আলমগীর হোসেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব অপূর্ব কুমার মন্ডল, বিএনটিটিপির টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের দ্বিতীয় সচিব মো. বদরুজ্জামান মুন্সী, টোব্যাকো ফ্রি কিডসের লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মুস্তাফিজুর রহমান, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের মহাপরিচালক মো. আখতারউজ-জামান প্রমুখ।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনটিটিপির টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য সাংবাদিক ও গবেষক সুশান্ত সিনহা। স্বাগত বক্তব্য দেন বিএনটিটিপির সচিবালয় ব্যবস্থাপক হামিদুল ইসলাম হিল্লোল। 

ঢাকা/এএএম/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

মুছাপুরে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া ও শীতবস্ত্র বিতরণ করলেন মাসুদুজ্জামান

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার বিএনপির উদ্যোগে বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনায় এবং এলাকার অসহায়, শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ ও দোয়া মাহফিল  অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের বিএনপি মনোনীত এমপি প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদ। দোয়া মাহফিলে বক্তারা বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক সুস্থতা, দীর্ঘায়ু এবং দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাসুদুজ্জামান বলেন,"দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনায় এই দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করেছি। তিনি বর্তমানে হাসপাতালে অত্যন্ত সংকটময় সময় কাটাচ্ছেন। আমরা আপনাদের কাছে বিনীত অনুরোধ জানাই, আপনারা যে ধর্মেরই হোন না কেন, দেশনেত্রীর সুস্থতার জন্য দোয়া করবেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান মায়ের সেবায় প্রতিনিয়ত আছেন এবং প্রতিটি মুহূর্ত তাঁকে উৎকন্ঠায় কাটাতে হচ্ছে। আমরা আপনাদের কাছে তাঁর জন্যও দোয়া চাই, যাতে সকল ষড়যন্ত্রের অবসান ঘটে এবং তিনি নিরাপদে মায়ের পাশে ফিরে যেতে পারেন। একই সঙ্গে আমরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।"

তিনি আরও বলেন, "বন্দর ও মুছাপুর ইউনিয়নের প্রধান সমস্যা হলো গ্যাসের অভাব। প্রায় ৫০ বছর ধরে নারায়ণগঞ্জের মানুষ এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ইনশা আল্লাহ, ভবিষ্যতে যদি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ক্ষমতায় আসে, আমরা এই সমস্যার সমাধান নিশ্চিত করব। এখানে মাদক একটি গুরুতর সমস্যা, যা সমাজকে অনেকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এছাড়া ইটভাটার কারণে জমির মূল্য অনেক কমে যাচ্ছে, যা এখানকার কৃষি জমি এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে। এই সমস্যাগুলোর সমাধান করা হবে ৩১ দফার ভিত্তিতে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামত ও সংস্কার করে। আমি রাজনীতিতে কোনো সুবিধা নিতে আসিনি। আমি আপনাদের পাশে থাকতে এসেছি, আমার বাকি জীবন আপনার কল্যাণে উৎসর্গ করতে চাই। আমি জনাব তারেক রহমানের সঙ্গে অনেকবার আলোচনা করেছি এবং বুঝতে পেরেছি, তাঁর স্বপ্নের বাংলাদেশ গঠনের পরিকল্পনা ৩১ দফায় প্রতিফলিত হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য হলো জনগণের সমস্যা দূর করা এবং একটি উন্নত ও সুরক্ষিত ভবিষ্যত নিশ্চিত করা।"

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, মহানগর বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক ফতেহ মো. রেজা রিপন, মহানগর বিএনপির সদস্য হাজী ফারুক হোসেন, যুবদল সভাপতি মনিরুল ইসলাম সজল, বন্দর থানা বিএনপির; সভাপতি শাহেন শাহ্। আজকের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বন্দর উপজেলা বিএনপি সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ, এবং সঞ্চালনায় ছিলেন বন্দর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ লিটন। এছাড়াও ওয়ার্ড বিএনপি, বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের স্থানীয় জনগণ এই সময় উপস্থিত ছিলেন।

এমন উদ্যোগ স্থানীয় জনগণের মধ্যে ঐক্য, সহমর্মিতা ও মানবিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দোয়া ও শীতবস্ত্র বিতরণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়। শীতবস্ত্র হাতে পাওয়া অনেকেই স্বস্তি ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। আয়োজকরা জানান, শীতের তীব্রতা অনুযায়ী ভবিষ্যতে আরও কিছু স্থানে এই ধরনের সহায়তা কর্মসূচি নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ