গত ১২ থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত হওয়া কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের দুই শতাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীর বদলি আদেশ বাতিল করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ। মন্ত্রণালয়ের গঠন করা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তদন্তে গণবদলির প্রমাণ মেলায় মঙ্গলবার কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি দিয়ে সব বদলি আদেশ বাতিলের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
দায়িত্ব ছাড়ার আগে গত ১২ থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্তত দুই শতাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীকে বদলি করেন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজি) অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মো.
প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ওই সাত দিনে সাবেক মহাপরিচালকের করা বদলিগুলো স্থগিত করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ। একইসঙ্গে এ ঘটনা তদন্তে একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তিন সদস্যের এ তদন্ত কমিটির প্রধান কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম। বাকি দুজন হলেন একই বিভাগের যুগ্ম–সচিব আনিসুল ইসলাম এবং উপ–সচিব মোহাম্মদ মিকাইল।
তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম আজ বুধবার সমকালকে জানান, তারা প্রতিবেদন সচিব বরাবরে জমা দিয়েছেন।
কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ সূত্র জানায়, তদন্ত প্রতিবেদনে ওই সাতদিনে দুই শতাধিক শিক্ষক কর্মকর্তা–কর্মচারী বদলির প্রমাণ মিলেছে। দায়িত্ব ছাড়ার আগে একসঙ্গে এতোগুলো বদলি করা সাবেক মহাপরিচালকের জন্য ‘সময়োচিত কাজ হয়নি’ বলেও কমিটির প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে।
কমিটির সুপারিশে বলা হয়, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের ওই সাতদিনে আদেশ দেওয়া প্রতিটি বদলির আদেশ বাতিল করে দেওয়া যেতে পারে। এসময়কালে দু’একটি বদলির আদেশ দেওয়া যৌক্তিক ছিল। যেমন একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির গুরুতর অভিযোগে তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়। সব বদলি আদেশ বাতিল করে যে দু–একটি যৌক্তিক ছিল, সেগুলোর কেইস টু কেইস বিচার করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বর্তমান মহাপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া যেতে পারে।
জানা গেছে, কমিটির সুপারিশ অনুসারে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের বর্তমান মহাপরিচালককে চিঠি দিয়ে সব বদলি বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে। একইসঙ্গে কোনো বদলির প্রশাসনিক যুক্তি থাকলে সেগুলো কেইস টু কেইস বিবেচনা করার জন্যও ডিজিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাতদিনে বিভিন্ন সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের (টিএসসি) ইনস্ট্রাক্টর, জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর, ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর, হিসাবরক্ষক, ক্যাশ সরকার, কেয়ারটেকার, অফিস সহকারী ও পিয়ন (এমএলএসএস) পদে অন্তত দুই শতাধিক বদলি করেন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মো. আজিজ তাহের খান। তিনি ২২ ডিসেম্বর দায়িত্ব ছাড়েন। দায়িত্ব ছাড়ার আগে সাবেকে ডিজির করা এ গণবদলি নিয়ে জোরালো বিতর্ক ওঠে।
গণবদলির এই বিষয়টি যেন জানাজানি না হয়, সেজন্য বদলির বেশিরভাগ বদলি আদেশেই সে সময়ে অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়নি। বিশেষ করে সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটউটের কোনো বদলি আদেশই ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়নি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বদল ইনস ট সরক র বদল র
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় কঙ্গো ও রুয়ান্ডার নেতাদের মধ্যে শান্তিচুক্তি সই
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আয়োজনে ওয়াশিংটনে এক শীর্ষ সম্মেলনে শান্তিচুক্তিতে সই করেছেন গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো (ডিআর কঙ্গো) ও রুয়ান্ডার নেতারা। এ অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে চলা সংঘাতের অবসানে দুই দেশ এ চুক্তি করল।
সম্মেলনের আগে ডিআর কঙ্গোর খনিজসমৃদ্ধ পূর্বাঞ্চলে সরকারি বাহিনী ও রুয়ান্ডার সমর্থনপুষ্ট বলে ধারণা করা বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াই বেড়ে যায়। এ লড়াই নিয়ে কঙ্গোর সেনাবাহিনী প্রতিপক্ষকে শান্তি প্রক্রিয়া বিনষ্টের চেষ্টা করার অভিযোগ তোলে। তবে এম২৩ বিদ্রোহীরা বলেছে, সেনাবাহিনীই যুদ্ধবিরতি ভেঙে তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
বছরের শুরুতে এম২৩ কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলের এক বড় অংশ দখল করে নেয়। এ সময় দুপক্ষের সংঘর্ষে হাজার হাজার মানুষ নিহত হন। ঘরছাড়া হন অনেকে।
‘ডোনাল্ড জে ট্রাম্প ইনস্টিটিউট অব পিস’-এ আয়োজিত সম্মেলনের শুরুতে ট্রাম্প বলেন, এটি আফ্রিকা ও বিশ্বের জন্য ‘একটি মহান দিন’। তিনি আরও বলেন, ‘আমি দুই নেতার ওপর অনেক আস্থা রাখি। আমরা এই অঙ্গীকার রাখব। আমি জানি, তাঁরাও তা রাখবেন এবং চুক্তি বাস্তবায়ন করে নিজেদের জনগণের জন্য আরও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলবেন।’
এর আগে ট্রাম্প কঙ্গো ও রুয়ান্ডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের দিয়ে গত জুন মাসে একটি শান্তিচুক্তি সই করান এবং এটিকে তিনি ‘গৌরবের বিজয়’ বলে আখ্যা দেন।এর আগে ট্রাম্প কঙ্গো ও রুয়ান্ডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের দিয়ে গত জুন মাসে একটি শান্তিচুক্তি সই করান এবং এটিকে তিনি ‘গৌরবের বিজয়’ বলে আখ্যা দেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স শিসেকেদি ও রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামে পরস্পরকে সংঘাতের জন্য দায়ী করে বারবার তিরস্কার করেছেন।
এবার সেই চুক্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে সই করলেন শিসেকেদি ও কাগামে। অনুষ্ঠানে কেনিয়া, অ্যাঙ্গোলা, বুরুন্ডি ও টোগোর নেতারা এবং উগান্ডার ভাইস প্রেসিডেন্টও সমর্থন জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন।
শান্তিচুক্তি সই অনুষ্ঠানে ডিআর কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স শিসেকেদি। ওয়াশিংটন, যুক্তরাষ্ট্র, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫