Samakal:
2025-12-01@17:44:52 GMT

সেই দুই শতাধিক গণবদলি বাতিল

Published: 15th, January 2025 GMT

সেই দুই শতাধিক গণবদলি বাতিল

গত ১২ থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত হওয়া কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের দুই শতাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীর বদলি আদেশ বাতিল করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ। মন্ত্রণালয়ের গঠন করা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তদন্তে গণবদলির প্রমাণ মেলায় মঙ্গলবার কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি দিয়ে সব বদলি আদেশ বাতিলের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

দায়িত্ব ছাড়ার আগে গত ১২ থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্তত দুই শতাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীকে বদলি করেন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজি) অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মো.

আজিজ তাহের খান। এ নিয়ে গত ২৩ ডিসেম্বর সমকালে ‘দায়িত্ব ছাড়ার আগে বদলি বাণিজ্যে মহাপরিচালক’ শীর্ষক এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। 

প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ওই সাত দিনে সাবেক মহাপরিচালকের করা বদলিগুলো স্থগিত করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ। একইসঙ্গে এ ঘটনা তদন্তে একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তিন সদস্যের এ তদন্ত কমিটির প্রধান কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম। বাকি দুজন হলেন একই বিভাগের যুগ্ম–সচিব আনিসুল ইসলাম এবং উপ–সচিব মোহাম্মদ মিকাইল। 

তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম আজ বুধবার সমকালকে জানান, তারা প্রতিবেদন সচিব বরাবরে জমা দিয়েছেন। 

কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ সূত্র জানায়, তদন্ত প্রতিবেদনে ওই সাতদিনে দুই শতাধিক শিক্ষক কর্মকর্তা–কর্মচারী বদলির প্রমাণ মিলেছে। দায়িত্ব ছাড়ার আগে একসঙ্গে এতোগুলো বদলি করা সাবেক মহাপরিচালকের জন্য ‘সময়োচিত কাজ হয়নি’ বলেও কমিটির প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে। 

কমিটির সুপারিশে বলা হয়, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের ওই সাতদিনে আদেশ দেওয়া প্রতিটি বদলির আদেশ বাতিল করে দেওয়া যেতে পারে। এসময়কালে দু’একটি বদলির আদেশ দেওয়া যৌক্তিক ছিল। যেমন একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির গুরুতর অভিযোগে তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়। সব বদলি আদেশ বাতিল করে যে দু–একটি যৌক্তিক ছিল, সেগুলোর কেইস টু কেইস বিচার করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বর্তমান মহাপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া যেতে পারে।

জানা গেছে, কমিটির সুপারিশ অনুসারে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের বর্তমান মহাপরিচালককে চিঠি দিয়ে সব বদলি বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে। একইসঙ্গে কোনো বদলির প্রশাসনিক যুক্তি থাকলে সেগুলো কেইস টু কেইস বিবেচনা করার জন্যও ডিজিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১২ থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাতদিনে বিভিন্ন সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের (টিএসসি) ইনস্ট্রাক্টর, জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর, ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর, হিসাবরক্ষক, ক্যাশ সরকার, কেয়ারটেকার, অফিস সহকারী ও পিয়ন (এমএলএসএস) পদে অন্তত দুই শতাধিক বদলি করেন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মো. আজিজ তাহের খান। তিনি ২২ ডিসেম্বর দায়িত্ব ছাড়েন। দায়িত্ব ছাড়ার আগে সাবেকে ডিজির করা এ গণবদলি নিয়ে জোরালো বিতর্ক ওঠে। 

গণবদলির এই বিষয়টি যেন জানাজানি না হয়, সেজন্য বদলির বেশিরভাগ বদলি আদেশেই সে সময়ে অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়নি। বিশেষ করে সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটউটের কোনো বদলি আদেশই ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়নি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বদল ইনস ট সরক র বদল র

এছাড়াও পড়ুন:

চামড়া ও পোশাক পণ্যে আগ্রহ বেশি

দেশের রপ্তানির নতুন বাজার খুঁজতে ও রপ্তানিতে পণ্য বৈচিত্র্য আনতে আট খাতের পণ্য নিয়ে প্রথমবারের মতো গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো বা প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। প্রথম দিনেই দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীদের কাছে এসব খাতের বিভিন্ন পণ্য প্রদর্শন করেন ব্যবসায়ীরা। তিন দিনের এই প্রদর্শনীর প্রথম দিনে চামড়া ও পোশাক পণ্যের স্টলেই ছিল দর্শনার্থীদের বেশি ভিড়।

ঢাকার পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে আয়োজিত তিন দিনের এ প্রদর্শনী চলবে আগামীকাল বুধবার পর্যন্ত। এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যৌথভাবে। আজ সোমবার সকালে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী ও এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ।

প্রদর্শনীস্থল ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন স্টলে দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীরা পণ্যের মান ও দাম দেখছেন। চামড়া পণ্যের অ্যানেক্স লেদারের স্টলে বিদেশি ক্রেতাদের ভিড় ছিল বেশি। ১০ বছর ধরে চামড়াজাত পণ্যের ব্যবসা করছে হাজারীবাগের প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী মো. মোস্তফা দিপু জানান, বিদেশি ক্রেতারা পণ্যের মান ও দাম দেখছেন। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় পণ্য রপ্তানি করে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রথমবারের এ প্রদর্শনীতে তৈরি পোশাক; চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য; পাট ও পাটজাত পণ্য; কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য; প্লাস্টিক ও কিচেনওয়্যার; হোম ডেকর ও ফার্নিচার; ফার্মাসিউটিক্যাল এবং আইসিটি খাতের ১২৫টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। তিন দিনের এই আয়োজনে ১৪টি দেশের ৬১ জন বিদেশি প্রতিনিধির অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছে ইপিবি। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান, চীন, ইরান, জাপান, মিয়ানমার, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা।

পোশাক খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও তাদের পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছে প্রদর্শনীতে। তাদের একটি ফকির ফ্যাশন। প্রতিষ্ঠানটির স্টলে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা বিদেশি ক্রেতারা পণ্য দেখছিলেন। প্রতিষ্ঠানটির ডিজাইন বিভাগে কর্মরত আহসান হাবীব বলেন, ‘রাশিয়ান ক্রেতারা অনেকটা সময় নিয়ে আমাদের পোশাক দেখছেন। তাঁরা আমাদের কারখানায় যাওয়ারও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’ এ স্টলে স্যুট, জ্যাকেটসহ বিভিন্ন ধরনের পোশাকের কাপড় প্রদর্শন করা হচ্ছে। আশির দশকে যাত্রা শুরু করা এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান রপ্তানি বাজার ইউরোপের বিভিন্ন দেশ।

তিন দিনব্যাপী এই আয়োজনে রয়েছে পণ্য প্রদর্শনীর পাশাপাশি খাতভিত্তিক ১০টি বিশেষ সেমিনার, আগ্রহী ক্রেতাদের অনলাইন ও অফলাইন সভা।

প্রদর্শনীতে আসা দেশি–বিদেশি দর্শনার্থীরা পাট ও পাটজাতের পণ্যের প্রতিও বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন আনা ফ্যাশনের বিক্রয় নির্বাহী আয়েশা আক্তার। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, দেশের ক্রেতারা টেবিলে সাজিয়ে রাখার বিভিন্ন পণ্যের প্রতি বেশি আগ্রহী। যার মধ্যে রয়েছে ফাইল, কলম ও চশমার হোল্ডার। এসব পণ্যের দাম ২০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত। আর বিদেশিরা বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন পাটের ব্যাগ ও বস্তার প্রতি। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির এসব পণ্য জার্মানি, বেলজিয়াম ও অস্ট্রেলিয়ায় রপ্তানি হচ্ছে বলেও জানান আয়েশা আক্তার।

প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের পর কিছু আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের পণ্য প্রবেশে শুল্ক সুবিধা থাকবে না। তাই নতুন নতুন বাজারে আমাদের প্রবেশ করতে হবে। সে জন্য এ আয়োজন শুধু সময় উপযোগী নয়, বরং কৌশলগতভাবেও গুরুত্বপূর্ণ।’

কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের একাধিক স্টল ঘুরে দেখা যায়, অনেকে কামরান মধুর স্টলে মধুর মান পরীক্ষা করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য সংস্থার অনুমোদন নিয়ে দেশটিতে মধু রপ্তানি করছে প্রতিষ্ঠানটি। অবশ্য এসব মধু ভিয়েতনাম থেকে পরীক্ষা করে তবেই রপ্তানির অনুমোদন পায়। দেশের পাঁচ শতাধিক খামারি থেকে মধু সংগ্রহের পর প্রক্রিয়াকরণ করে রপ্তানি করা হয় বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মো. আবদুল গফুর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ