পুরনো মামলার নথির জন্য যেতে হবে না দিনাজপুর
Published: 15th, January 2025 GMT
পঞ্চগড় জেলা ঘোষণার আগে এখানে মুনসেফ আদালত ছিল। এই আদালতে নিষ্পত্তি হওয়া মামলার নথি জমা পড়তো দিনাজপুরের আদালতের মহাফেজখানায়। জেলা ভাগের পর সব কিছুই পৃথক হলেও নথিগুলো রয়ে যায় সেখানেই। এসব নথির প্রয়োজন হলে পঞ্চগড়ের মানুষকে ছুটতে হয় দিনাজপুরে, পোহাতে হয় দুর্ভোগ। তবে, এখন থেকে এসব নথি মিলবে পঞ্চগড়েই।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে পঞ্চগড় আদালত চত্বরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক গোলাম ফারুক আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সম্প্রতি পঞ্চগড় মুনসেফ আদালতে বিভিন্ন সময়ে নিষ্পত্তি হওয়া প্রথম শ্রেণির মামলার ১৭৯৭টি নথি দিনাজপুর আদালতের মহাফেজ খানা থেকে পঞ্চগড়ে আনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরো পড়ুন:
ফরিদপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা: ১ জনের যাবজ্জীবন
শিশু নাবিলা ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামির মৃত্যুদণ্ড
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) বিএম তারিকুল কবির, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রেজাউল বারী, নুরুজ্জামান, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মার্জিয়া খাতুন, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ হাসান, সহকারি জজ মাহমুদা খাতুন, আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আদম সুফি, আদালতের গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি) আব্দুল বারী, সাবেক পিপি আমিনুর রহমান প্রমুখ।
জানা গেছে, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর থেকেই পুরো পঞ্চগড় ছিল বৃহত্তর দিনাজপুর জেলার অংশ। ১৯৮৪ সালে জেলা ভাগের আগে পর্যন্ত সব কিছুই ছিল দিনাজপুরের অধীনে। ফলে দেশ ভাগ থেকে জেলা ভাগ পর্যন্ত- এই দীর্ঘ সময়ের আদালত কেন্দ্রিক সব নথি রয়ে যায় দিনাজপুরেই। এসব নথির প্রয়োজন হলে বিরম্বনা বাড়ে সেবাগ্রহীতাদের। ছুটতে হয় দিনাজপুরে। এতে যেমন ভোগান্তি পোহাতে হয়, তেমনি হতে হয় হয়রানি। তবে, এখন থেকে ভোগান্তি লাঘবের পাশাপাশি সেবাগ্রহীতাদের অর্থ ও সময় বাঁচবে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
পঞ্চগড় জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আদম সুফি বলেন, “বিভিন্ন সময় এই নথিগুলোর প্রয়োজন হয়। সাধারণ মানুষ এসব নথি উত্তোলনের জন্য এতদিন দিনাজপুর যেতেন। এতে তাদের হয়রানি হতে হতো। অনেক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকাও গুনতে হতো। এখন থেকে ভোগান্তি কমবে। সময় ও অর্থ- দুটাই বাঁচবে। এসব নথি পঞ্চগড়ের মহাফেজ খানায় সংরক্ষিত আছে- বিষয়টি সাধারণ মানুষকে জানাতে হবে।”
গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি) আব্দুল বারী বলেন, “১৯৮৪ সালে জেলা ভাগ হলে পঞ্চগড়ে স্বতন্ত্রভাবে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। তাই এতদিন এখানকার মহাফেজ খানায় ১৯৮৪ সালের পরবর্তী সময়কার নিষ্পত্তি হওয়া মামলার নথি সংরক্ষিত ছিল। এখন দিনাজপুর থেকে আগের নথিগুলো নিয়ে আসায় ১৯৪৮ সাল থেকে বর্তমান সময়ের তথা গত ৭৭ বছরের সব নথিই পাওয়া যাবে।”
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক গোলাম ফারুক বলেন, “মামলা পরিচালনার সময় তৎকালীন সময়কার রায় এবং ডিক্রির নকল প্রয়োজন হয়। এজন্য সাধারণ মানুষ আদালতের কাছে সময় চায় এবং দিনাজপুরে গিয়ে নকলের আবেদন করে। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতার কারণে দীর্ঘ সময়েও নকল আনতে পারে না। এতে সাধারণ মানুষ যেমন ভোগান্তি পোহান, তেমনি মামলা নিরসনে আদালতেরও সময় ক্ষেপণ হয়। এই পরিস্থিতিতে আমরা উদ্যোগ নিয়ে নথিগুলো এখানে নিয়ে এসেছি।”
ঢাকা/নাঈম/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
এক দিনে দুই দলের হয়ে দুই দেশে দুই ম্যাচ, গল্প নয় সত্যি
সর্বোচ্চ পর্যায়ের ফুটবলে এক দিনে দুই দলের হয়ে দুটি ম্যাচ খেলা, সেটিও ভিন্ন দুই দেশে!
আজগুবি মনে হলেও সত্যি। ১৯৮৪ সালে ডেনমার্কের মিডফিল্ডার সোরেন লারবি অবিশ্বাস্য সেই কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন।
১৯৮৪ সালের ১৩ নভেম্বর বিকেলে আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ডেনমার্কের হয়ে খেলেন লারবি। সেদিনই রাতে তাঁর ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের জার্মান কাপের শেষ ষোলোর ম্যাচটি ছিল বোখুমে।
১৯৮৬ বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে আইরিশদের বিপক্ষে ড্র করলেই চলত ডেনমার্কের।
তাই বায়ার্নের তখনকার জেনারেল ম্যানেজার (পরে সভাপতি) উলি হোয়েনেস এক অভিনব প্রস্তাব দেন, ‘তুমি কি পিওনতেককে (ডেনমার্ক কোচ) বলতে পারবে, “আমি ৪৫ মিনিট বা এর চেয়ে কম খেলব।” তারপর আমি তোমাকে প্রাইভেট জেটে নিয়ে যাব, রাতে বায়ার্নের হয়ে খেলবে।’
ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে থাকা লারবি রাজি হয়ে যান হোয়েনেসের কথায়। জাতীয় দলের কোচ পিওনতেক অবশ্য প্রথমার্ধ শেষেই ছাড়তে পারেননি লারবিকে। ম্যাচের স্কোর যে তখন ১-১, এমন সময় কে ঝুঁকি নেয়।
দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হওয়ার আগে লারবিরা যখন ড্রেসিংরুম থেকে ফিরছিলেন, তখন মাঠের পাশে দাঁড়ানো হোয়েনেস লারবিকে বলেন, ‘কী হচ্ছে? প্লেন তো অপেক্ষা করছে!’
আরও পড়ুন৩৫-০ গোলে জিতে বিশ্ব রেকর্ড, আধঘণ্টা পরই হাতছাড়া০৭ নভেম্বর ২০২৫৫৭ মিনিটের মধ্যে মাইকেল লাউড্রপ ও জন সিভেব্যাকের গোলে ডেনমার্ক ৩-১–এ এগিয়ে যায়, এক মিনিট পরই লারবিকে তুলে নেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় সময়ের সঙ্গে যুদ্ধ।
হোয়েনেসের আপত্তি গায়ে না মেখে লারবি গোসল করে নেন, তারপর পুলিশি পাহারায় বিমানবন্দরে। সময়মতো ডুসেলডর্ফ বিমানবন্দরে পৌঁছালেও বোখুম স্টেডিয়ামের পথে কয়েক কিলোমিটার লম্বা যানজটে পড়ে লারবিদের গাড়ি। লারবি জানালেন, গাড়ি থেকে নেমে দৌড়াতে শুরু করেন তিনি, ‘আমি গাড়ি থেকে নেমে চার কিলোমিটার দৌড়ে স্টেডিয়ামে ঢুকেছিলাম। ভালোই ওয়ার্মআপ হয়ে গিয়েছিল।’
তবে বায়ার্নের শুরুর একাদশে সুযোগ পাননি লারবি। বায়ার্ন কোচ উডো লাটেক লারবি মাঠে পৌঁছানোর আগেই প্রথম একাদশ ঠিক করে ফেলেছিলেন। লারবি দ্বিতীয়ার্ধে নামেন, ম্যাচ যায় অতিরিক্ত সময়ে, শেষ পর্যন্ত ২-২।
রিপ্লে ম্যাচে গোল করেন লারবি, বায়ার্ন জেতে ২-০ ব্যবধানে এবং পরে ফাইনালে স্টুটগার্টকে হারিয়ে কাপও জিতে নেয়।
দুই বছর পর একই কীর্তি করেন মার্ক হিউজ—ওয়েলসের হয়ে খেলেন চেকোস্লোভাকিয়ায়, আর সেদিনই বায়ার্নের হয়ে কাপ ম্যাচে নামেন। হিউজকেও রাজি করিয়েছিলেন হোয়েনেস।
আরও পড়ুনএনএফএলের দলের নাম কীভাবে বেঙ্গলস হলো৩১ অক্টোবর ২০২৫