গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে কারখানায় চুরির অপবাদ দিয়ে হৃদয় (১৯) নামের এক শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির আরও দুই নিরাপত্তাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার কোনাবাড়ী ও সেলিমনগর এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন রাজশাহীর বাগমারা এলাকার হাটমাদনগর গ্রামের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম (৩০) ও কোনাবাড়ী কুদ্দুসনগর এলাকার বেলাল হোসেন (৪৫)। তারা দুজনই গ্রিনল্যান্ড লিমিটেড নামের কারখানার নিরাপত্তাকর্মী।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কোনাবাড়ী এলাকায় গ্রিনল্যান্ড লিমিটেড নামের কারখানার ভেতরে গত শনিবার ভোরে শ্রমিক হৃদয়কে চুরির অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তাঁকে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই লিটন মিয়া বাদী হয়ে কোনাবাড়ী থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশ সিসিটিভির ফুটেজ থেকে হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে।

মামলায় গত রোববার হাসান মাহমুদ নামের এক নিরাপত্তাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তাঁকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেছে পুলিশ। এ ছাড়া গতকাল সোমবার মধ্যরাতে কোনাবাড়ী এলাকার একটি বাসা থেকে শফিকুলকে ও মঙ্গলবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে বেলাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

আরও পড়ুনগাজীপুরে চুরির অপবাদ দিয়ে কারখানায় শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা, অনির্দিষ্টকালের ছুটি ঘোষণা৩০ জুন ২০২৫

কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন বলেন, এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় হৃদয়ের বড় ভাই লিটন মিয়া কোনাবাড়ী থানায় গত শনিবার রাতে হত্যা মামলা করেন। তবে মামলায় কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।

আরও পড়ুনগাজীপুরে কারখানায় শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আরও একজন গ্রেপ্তার৮ ঘণ্টা আগে

এদিকে বিকেলে গ্রিনল্যান্ড লিমিটেড কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, দুই দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলেও এখনো কারখানা খুলে দেওয়া হয়নি। কারখানার মালিকপক্ষ ও নিরাপত্তাকর্মীরা পালিয়ে যাওয়ায় ফটকে কাউকে পাওয়া যায়নি। ফটকে দায়িত্ব পালন করছিলেন ডাইং সেকশনের শ্রমিক মোন্তাসির। তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর থেকে কোনো কর্মকর্তা কারখানায় আসেনি। নিরাপত্তাকর্মীরা পালিয়ে যাওয়ায় তিনি দায়িত্ব পালন করছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর হত য র ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী

রাজধানীর আদাবরে আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে রিপন সরদার (৪২) খুনের ঘটনায় তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, রিপন হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইমন ওরফে ভাইগ্না ইমন ওরফে দাঁতভাঙা ইমনকে তাঁর দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সেনাবাহিনী জানায়, গতকাল ভোরের দিকে রাজধানীর আদাবর থানার বালুর মাঠ এলাকায় বাসায় ঢুকে রিপন নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। কিশোর গ্যাং এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে অভিযোগ। পরে আহত অবস্থায় রিপনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে তিনি মারা যান।

৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গতকাল সকালে বালুমাঠ এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায় এলেক্স সবুজ, মনির ও ইমন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নির্ণয় করে অভিযান চালিয়ে ইমন ও তাঁর দুই সহযোগীকে দুটি সামুরাইসহ গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান চালানোর কিছুক্ষণ আগে সবুজ ও মনির সেই জায়গা থেকে পালিয়ে যান। তাই তাঁদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। বাকিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে আদাবরের ১০ নম্বরের বালুর মাঠ এলাকায় ‘বেলচা মনির’ ও ‘রাজু গ্রুপে’র মধ্যে এ মারামারি হয়। ‘বেলচা মনিরের’ লোকজন ‘রাজু গ্রুপের’ রিপনকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের মৃত্যু হয়।

আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও বিরোধকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটির বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।

আরও পড়ুনআদাবরে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মারামারিতে নিহত ১১৮ ঘণ্টা আগে

তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের ছেলে ইমন সরদার গতকাল দাবি করেন, রিপন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন না। রিপন পেশায় চা–দোকানি। বেলচা মনিরের লোকজনের সঙ্গে দুই দিন আগে তাঁর বাবার কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে তাঁর বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর মা আরজু বেগমও আহত হয়েছেন। তাঁদের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়।

পুলিশের ভাষ্য, নিহত রিপন সরদার মাদক কারবারি রাজুর চাচাতো ভাই। ‘রাজু গ্রুপ’ ও ‘বেলচা মনিরের’ নেতৃত্বে আদাবরের ১০ ও ১৭ নম্বর এলাকায় মাদক ব্যবসা হয়। ওই বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। নিহত রিপনের বিরুদ্ধে ভোলায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী