রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা কিছুটা কমছে
Published: 27th, March 2025 GMT
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য খাদ্য সহায়তা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। তবে তহবিলের ঘাটতির কারণে রেশন কিছুটা কমানো হয়েছে। কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
সংশোধিত ব্যবস্থার অধীনে, দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তবর্তী জেলা কক্সবাজারে অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী বসতিতে প্রত্যেক শরণার্থী প্রতি মাসে ১২ ডলার পাবেন। আগে তাদের বরাদ্দ ছিল ১২ দশমিক ৫০ ডলার।
চলতি মাসের শুরুতে ডব্লিউএফপি সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছিল, জরুরি আর্থিক সহায়তার ঘাটতির কারণে এপ্রিল মাসে খাদ্য রেশন অর্ধেক করে জনপ্রতি মাত্র ৬ ডলার করতে তারা বাধ্য হতে পারে। ২০২৩ সালেও একই রকম হ্রাস করা হয়েছিল। ওই সময় খাদ্য রেশন জনপ্রতি ৮ ডলারে নামিয়ে আনা হয়েছিল। অপুষ্টির তীব্র বৃদ্ধি ঘটায় পরে তা আবার বাড়িয়ে ১২ দশমিক ৫০ ডলারে ফিরিয়ে আনা হয়।
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী জয়নুল মোস্তফা রয়টার্সকে বলেন, “আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। আমরা এখন অন্তত বেঁচে থাকতে পারব। অন্যথায়, আমরা কেবল অনাহারে থাকতাম।”
ডব্লিউএফপির একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা ‘দাতাদের কাছ থেকে সময়োপযোগী অনুদানের মাধ্যমে’ তহবিলের ঘাটতি পূরণ করেছে। তবে তিনি এর বিশদ জানাননি।
পৃথকভাবে, বৃহস্পতিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা ডব্লিউএফপির মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলারের নতুন আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে।
বাংলাদেশ প্রতিবেশী মিয়ানমারের সামরিক অভিযানের মুখে পালিয়ে আসা ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে কক্সবাজার জেলার শিবিরে আশ্রয় দিচ্ছে। গত বছর মিয়ানমার থেকে প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছিল।
শরণার্থী শিবিরগুলোর তত্ত্বাবধানকারী বাংলাদেশের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় জানিয়েছে, খাদ্য রেশন শরণার্থীদের মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টি বজায় রাখতে সহায়তা করবে।
এক বিবৃতিতে কার্যলয় বলেছে, “আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রয়োজনীয় তহবিল সরবরাহের জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি যাতে এই জীবন রক্ষাকারী কর্মসূচিগুলো দীর্ঘমেয়াদে টিকিয়ে রাখা যায়।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শরণ র থ সহ য ত
এছাড়াও পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় ব্যবসায়ীর বাড়িতে ভাঙচুর-লুটপাট, মাইক্রোবাসে আগুন
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চক দৌলতপুর এলাকায় এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলা করে একটি মাইক্রোবাস পুড়িয়ে দেয়া, তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর এবং লুটপাট করা হয়েছে। ব্যবসায়ী সানজিদ অভিযোগ করেন, চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় একই এলাকার আকবর আলীর ছেলে আব্দুল জব্বার ও তার লোকজন হামলা করে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছেন। যদিও আব্দুল জব্বার চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুক্রবার (১১ জুলাই) রাত ৯টার দিকে চক দৌলতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন তিন রাস্তার মোড়ে আব্দুল জব্বার ও তার লোকজন সানজিদের কাছ থেকে টাকা দাবি করেন। সানজিদ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার উপর হামলা করে জব্বার ও তার লোকজন। এর কিছুক্ষণ পর জব্বার তার লোকজন নিয়ে সানজিদের বাড়িতে হামলা করে। সেখান আগুন লাগিয়ে দেয়। আগুনে সানজিদের একটি মাইক্রোবাস পুড়ে যায়। তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে দৌলতপুর থানা পুলিশ উপস্থিত হয়ে আগুন নেভাতে ভেড়ামারা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আসে। বর্তমানে ওই এলাকায় পুলিশ ও সেনা সদস্যরা টহলরত রয়েছেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সানজিদ বলেন, ‘‘আমি ব্যবসা ও চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করি। ৫ আগস্টের পর থেকে বিএনপি নেতা আব্দুল জব্বার আমার নামে আওয়ামী লীগ ট্যাগ লাগিয়ে বিভিন্ন সময়ে চাঁদা দাবি করে আসছেন। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি আমাকে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (১১ জুলাই) রাত ৮টার কিছু পরে চক দৌলতপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে রাস্তার মোড়ে আমার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে জব্বার মারধর করেন। পরে আমার ব্যবসায়িক পার্টনার ও আমার চাচাত ভাই এগিয়ে আসলে তাকেও মারধর করেন ও আমাদের তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। আমরা সেখান থেকে আত্মরক্ষার্থে মোটরসাইকেল ফেলে দৌড়ে পালিয়ে আসলে জব্বার তার লোকজন নিয়ে আমার বাড়িতে হামলা করে নগদ টাকা, গহনাসহ মূল্যবান সম্পদ লুট করে এবং আমার বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন। আগুনে আমার ৪২ লাখ টাকা দামের এক্স নোহা মাইক্রোবাস পুড়ে যায়।’’
আরো পড়ুন:
পাথর মেরে হত্যা, আইয়ামে জাহেলিয়াতকেও হার মানিয়েছে: জামায়াত
পাবনায় দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির ১০ নেতাকর্মী বহিষ্কার
এমন ঘটনায় তিনি ও তার পরিবার হুমকির মুখে পড়েছেন বলে বলে জানান সানজিদ।
এ ব্যাপারে আব্দুল জব্বারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আমার এক কাছের লোকের কাছে থেকে সানজিদ চাকরি দেয়ার নাম করে টাকা নিয়েছিলেন। সানজিদ চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়া বা টাকা ফেরত দিচ্ছেলেন না। এই কারণে তার কাছে টাকা দারি করা হচ্ছিল।’’ তবে আব্দুল জব্বার চাকরি প্রার্থীর নাম ও টাকার পরিমাণ বলতে পারেননি।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা জানান, টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে। এ সময় একটি বাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে। একটি মাইক্রোবাস পুড়ে গেছে ও কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনার সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।
ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল