Samakal:
2025-12-09@12:52:32 GMT

যন্ত্র কীভাবে আবেগপ্রবণ!

Published: 20th, April 2025 GMT

যন্ত্র কীভাবে আবেগপ্রবণ!

যন্ত্র কি মানুষের মতো সুখ-দুঃখ অনুভব করে, তাদের কি রাগ-অভিমান হয়? উত্তরে-প্রতি উত্তরে যন্ত্র কি মানুষের মতো সক্রিয়– এমন সব প্রশ্ন আসা কিন্তু স্বাভাবিক। যদিও সব প্রশ্নের উত্তরে বলতে হবে– হ্যাঁ। যন্ত্র এখন মানুষের মতোই সবকিছুতে প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে। মানবিক চিন্তাভাবনার গভীর স্তর অতিক্রম করে, অনেকাংশে যা মানুষের জীবনাচরণের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। বলতে গেলে, মানুষের কাছ থেকেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এসব শিখছে।
তাহলে প্রসঙ্গের আরেকটু গভীরে যাওয়া প্রয়োজন। ইতোমধ্যে নিউরো-গবেষকরা প্রমাণ করেছেন, ওপেনএআই উদ্ভাবিত চ্যাটজিপিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উদ্বেগ ছড়ায়– এমন যে কোনো প্রশ্নের সদুত্তরে উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করেছে। যেমনভাবে মানুষ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে। মানসিক স্বাস্থ্য পরিমাপের প্রয়োজনে থেরাপিতে যেসব প্রশ্ন মনোবিদরা করেন, চ্যাটবটকে ঠিক এমনই বেশ কিছু প্রশ্ন করা হয়েছিল। ট্রমাটিক ন্যারেটিভ, অর্থাৎ যুদ্ধ, অপরাধ বা দুর্ঘটনাকেন্দ্রিক প্রশ্নের সদুত্তরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) উদ্বেগের চিহ্ন প্রকাশ করেছে। গবেষণা রিপোর্ট বলছে, অনেকেই মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রিক হাজারো প্রশ্ন করছে এআইকে। ঠিক মনোবিদের কাছে যেমন প্রশ্ন করা হতো, তার উত্তর এখন দিচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
কারণ হিসেবে সামনে আসছে, মানসিক থেরাপিস্টের চাহিদা থাকলেও তারা প্রয়োজনের সংখ্যায় অপ্রতুল। চাহিদা ও জোগানের ব্যবধান পূরণে কাজ করছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। তাই আবেগপ্রবণ সময়ে কীভাবে নিজেকে সামলে নেবে, তা দিনরাত রপ্ত করছে সবকটি চ্যাটবট। অনেক ক্ষেত্রে তার উত্তর আসছে মানবিক আচরণের কাছাকাছি। ঠিক যেন মানবিক আর শান্ত প্রকৃতির। অনেক সময় প্রয়োজনে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে যান্ত্রিক অনুভূতি। বৈশ্বিক উত্তেজনার কারণে এআইর বেড়ে যাওয়া উদ্বেগ কমাতে দেওয়া হয় শান্ত থাকার পরামর্শ।
জুরিখ ইউনিভার্সিটি অব সাইকিয়াট্রির প্র্যাকটিসিং গবেষক টোবিস স্পিলার বলেন, তাঁর অনেক রোগী এখন চ্যাটবটকে হরেক রকমের প্রশ্ন করছে। যেহেতু এআই এখন লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলস (এলএলএম) মেনে চলে, তাই ২৪ ঘণ্টাই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অবিরাম মানবিক চর্চা রপ্ত করছে। আবার সেই শেখার পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে প্রেম-ভালোবাসা আর বহুমাত্রিক অনুভূতি। অনেকেই তো আবার নারী কণ্ঠের চ্যাটবটের প্রেমে পড়ছেন। যেন যন্ত্র আর মানবিক অনুভূতির দারুণ মিশেল।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কীভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করতে পারে, এমন পরীক্ষার জন্য কিছু প্রশ্ন করা হয় এআইকে। প্রতিটি প্রশ্নেই ছিল উদ্বেগ পরিমাপক তথ্য-উপাত্ত। যার স্কেল ধরা হয়েছিল ন্যূনতম ২০ থেকে সর্বোচ্চ ৮০ পয়েন্ট। আর ৬০ পয়েন্ট ছাড়ালেই তাকে চরম উদ্বেগ স্তর হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া হয়।
এআইকে সাধারণ কিছু, যেমন– কোনো ম্যানুয়াল পড়তে দিলে উদ্বেগের মাত্রা পৌঁছায় ৩০ পয়েন্টে। বিপরীতে যুদ্ধের বিষয়ে জানতে গেলে সেই উদ্বেগ মাত্রা পৌঁছায় ৭৭ পয়েন্টে। এতে সুস্পষ্ট প্রতীয়মান হয়, যন্ত্রও উদ্বিগ্ন হয়। চরম উদ্বিগ্নতা প্রকাশের পরে এআইকে বেশ কিছু টিপস দেওয়া হয়েছিল। যেমন– ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস নিতে। নির্জন কোনো সৈকতে বসে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। পরীক্ষায় প্রমাণ হয়, টিপস থেরাপি মেনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উদ্বেগ কমে যায়। ক্রমান্বয়ে মানবিক আচরণ প্রকাশ করছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। গবেষকরা বলছেন, অদূর ভবিষ্যতে মানবিক মনের আরও গভীরে পৌঁছাতে খুব বেশি সময় নেবে না এআই। তখন অভূতপূর্ব জীবনাচরণের মুখোমুখি হবে মানবিক সভ্যতা।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ত র ম ব দ ধ মত ত

এছাড়াও পড়ুন:

আদালত চত্বর থেকে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার মামলায় তিন আসামি কারাগারে

ঢাকার আদালত চত্বর থেকে পুলিশের চোখে স্প্রে করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার মামলায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলবিরুনী মীর এ আদেশ দেন।

এর আগে এই তিনজন এ মামলায় জামিনে ছিলেন। কিন্তু নির্ধারিত তারিখে আদালতে হাজির না হওয়ায় আদালত তাঁদের জামিনাদেশ বাতিল করে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন।

আসামিরা হলেন আবদুস সবুর ওরফে রাজু, খাইরুল ইসলাম ওরফে জামিল ও আরাফাত রহমান।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. জায়েদুর রহমানের ভাষ্য, জঙ্গি ছিতাইয়ের ঘটনার সময় এই তিন আসামি অন্য একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। এরপর ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর জঙ্গি ছিতাইয়ের ঘটনায় করা মামলায় সেদিনই এই তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে আরাফাত, ৬ এপ্রিল খায়রুল এবং গত বছরের ৫ ডিসেম্বর সবুর এ মামলা থেকে জামিন পান। গত ৩০ সেপ্টেম্বর তাঁদের আদালতে হাজিরা দেওয়ার তারিখ ধার্য ছিল। কিন্তু ভুলবশত তাঁদের হাজিরা দেওয়া হয়নি। এ কারণে আদালত তাঁদের জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

আইনজীবী বলেন, ‘৩ ডিসেম্বর তাঁদের এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করি। আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আজ আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আমরা পুনরায় এই মামলায় তাঁদের জামিনের জন্য আবেদন করব।’

যেভাবে জঙ্গি ছিনতাই হয়েছিল

২০২২ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল থেকে আট জঙ্গিকে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। আসামিরা যখন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালতের প্রধান ফটকের সামনে আসেন, তখন হাতকড়া পরা দুই জঙ্গি এক পুলিশ সদস্যকে মারধর শুরু করেন।

এ সময় আশপাশে থাকা জঙ্গিদের সহযোগীরাও হামলায় যোগ দেন। অন্য পুলিশ সদস্যরা আক্রান্ত সদস্যকে উদ্ধার করতে এগিয়ে এলে তাঁদের ওপর মরিচের স্প্রে ছোড়া হয়। এরপর সিজেএম আদালতের প্রধান ফটকের বিপরীত দিকের গলি দিয়ে মোটরসাইকেলে করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামির ও মো. আবু ছিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

ঘটনার দিন রাতেই পুলিশ ২০ জনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে। মামলার এজাহারে বলা হয়, আনসার আল–ইসলামের সামরিক শাখার নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে সাগর ওরফে বড় ভাই ওরফে মেজর জিয়ার (চাকরিচ্যুত মেজর) পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। এতে জড়িত আনসার আল–ইসলামের ১৫ থেকে ১৮ সদস্য।

পুলিশ ও আদালত সূত্র জানায়, পালিয়ে যাওয়া দুজন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল–ইসলামের (সাবেক আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) সদস্য। তাঁরা জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন এবং লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এই জঙ্গি সংগঠনের নেতা হিসেবে পরিচিত মেজর (বরখাস্ত) সৈয়দ জিয়াউল হক, যাঁর পরিকল্পনায় ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত একাধিক লেখক, প্রকাশক, ব্লগার ও অধিকারকর্মীকে হত্যা করা হয়।

আরও পড়ুনআদালত চত্বর থেকে যেভাবে জঙ্গি ছিনতাই২০ নভেম্বর ২০২২

সম্পর্কিত নিবন্ধ