নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ওষুধের কাঁচামাল তৈরির সুপারিশ স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের
Published: 6th, May 2025 GMT
ওষুধশিল্পে পরনির্ভরতা কমাতে ও সুলভ মূল্যে ওষুধ প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে দেশেই সব ধরনের ওষুধের কাঁচামাল তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন।
গতকাল সোমবার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তাতে এসব বিষয় উল্লেখ করা হয়।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সংস্কার কমিশনের প্রধান জাতীয় অধ্যাপক ডা.
সুপারিশে বলা হয়েছে, ওষুধের ৯৫ শতাংশ কাঁচামাল আমদানিনির্ভর। দেশীয় ব্যবস্থাপনায় কাঁচামাল তৈরি করতে পারলে ওষুধশিল্প আরও সমৃদ্ধ হবে। এজন্য কাঁচামাল উৎপাদনে গ্যাস ও বিদ্যুতে ভর্তুকি ব্যবস্থার পাশাপাশি নিবন্ধন ও অনুমোদন সহজীকরণ করা।
কমিশনের সুপারিশগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে উল্লেখ করে যেসব সুপারিশ এখনই বাস্তবায়নযোগ্য, তা দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সংস্কার প্রতিবেদনে সরকারি হাসপাতালে সেবা বিকেল ৫টা পর্যন্ত করা, বেসরকারি হাসপাতালে সেবামূল্য নির্ধারণ, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করতে না দেওয়া, অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা, নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ওষুধের কাঁচামাল তৈরি, স্বতন্ত্র স্বাস্থ্য সার্ভিস গঠনসহ ৩২টি সুপারিশ করা হয়েছে। এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে দুই বছর সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
ইন্টার-বার্সা সেমিফাইনালে ফিরে আসছে ২০১০ সালের স্মৃতি
চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে মঙ্গলবার (০৬ মে) দিবাগত রাতে মুখোমুখি হচ্ছে ইন্টার মিলান ও বার্সেলোনা। এই ম্যাচটা শুরুর আগে বারবার স্মৃতি থেকে উঁকি দিচ্ছে ২০০৮-০৯ ও ২০০৯-১০ মৌসুম। এই দুই মৌসুমের সাথে বার্সা ও ইন্টারের বেশ কিছু মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে।
২০০৮ সালের জুলাইয়ে জোসে মোরিনহোর আগ্রহকে উপেক্ষা করে ইয়োহাইন ক্রুইফ অখ্যাত পেপ গার্দিওলাকে বার্সার কোচ হিসেবে নিয়োগ দেন। সেই মৌসুমেই বার্সা ট্রেবল জেতে। চলমান মৌসুমে বোর্ডের সবার বিপক্ষে গিয়েই একক সিধান্তে সভাপতি হুয়ান লাপোর্তে জার্মান কোচ হান্সি ফ্লিককে নিয়োগ দেন এবং প্রথম মৌসুমেই কাতালান ক্লাবটির সামনে ট্রেবল জয়ের হাতছানি।
২০০৮-০৯ মৌসুম শেষেই রিয়ালের ম্যানেজার হুয়ান্দো রামোস চাকরিচ্যুত হন। মজার ব্যাপার হচ্ছে চলমান মৌসুমে শেষে লস ব্ল্যাঙ্কসদের ৩টি চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতানো ম্যানেজার কার্লো আনচেলত্তি সরে যাচ্ছেন।
আরো পড়ুন:
স্টেগেনের ফেরার ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও জিতল ‘কামব্যাক কিং’ বার্সা
ইন্টারের বিপক্ষে ম্যাচের আগে বার্সার জন্য সুখবর
অন্যদিকে ২০০৯-১০ মৌসুমে এই বার্সাকে হারিয়েই ইন্টার তাদের ইতিহাসের দ্বিতীয় চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জিতেছিল। নেরাজ্জুরিদের তখন কোচ ছিলেন মোরিনহো। সেমিফাইনালের প্রথম লেগে সান সিরোতে এই পর্তুগিজ ম্যানেজারের রক্ষণের দেয়াল চিড় ধরাতে পারেননি মেসি, ইব্রাহিমোভিচ, থিয়েরে অঁরি ও পেদ্রোরা। সেই ম্যাচে ৩-১ গোলে হারতে হয়েছিল গার্দিওলার দলকে।
মঙ্গলবার আবারও সেই সান সিরোতেই বার্সার বিপক্ষে নামার আগে খানিকটা এগিয়েই আছে ইন্টার মিলান। আগের লেগে কাতালান জায়ান্টদের ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে গিয়ে ৩-৩ গোলে ড্র করে এসেছে নেরাজ্জুরিরা। ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়নস লিগে শেষ ১৫টা ম্যাচে হারেনি সিমিওনে ইনজাগির ইন্টার।
মূল লড়াইটা হবে কৌশলের আর স্নায়ুর। ইন্টারের রক্ষণকে যেখানে লড়তে হবে বার্সার পরাক্রমশালী আক্রমণভাগের বিপক্ষে। তবে সব বাদ দিয়ে অলআউট আক্রমণে যাওয়াও বিপদে ফেলতে পারে বার্সাকে। প্রতিআক্রমণে ইন্টার বিধ্বংসী। আজ তাই ফ্লিককে আক্রমণ ও রক্ষণের মধ্যে সমন্বয় রাখতে হবে। কারণ, ইন্টার যদি আগে গোল করে, তাহলে স্বাগতিকদের রক্ষণপ্রাচীর ভেঙে সেই গোল শোধ করা কঠিনই হবে বার্সার জন্য।
চলতি মৌসুমে ইন্টারের রক্ষণশক্তি বোঝা যাবে একটি পরিসংখ্যানে। চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সার ২০ গোল হজম করার বিপরীতে ইন্টার হজম করেছে মাত্র ৮ গোল। তবে ঘরের মাঠে ইন্টার খেয়েছে ৬ ম্যাচে মাত্র ৩ গোল। রক্ষণের সঙ্গে বাড়েতি পাওয়া প্রায় ৮০ হাজার দর্শকের গর্জন।
প্রথম লেগে বার্সা আক্রমণ সাজিয়েছে ইয়ামালকে কেন্দ্র করে। দ্বিতীয় লেগেও এই উইঙ্গারের ওপরই চোখ থাকবে সবচেয়ে বেশি। মাঠের এক প্রান্ত অনেকটা একাই দখল করে রাখবেন ১৭ বছর বয়সী এই কিশোর। আগের ম্যাচে ডাবল মার্কার লাগিয়েও আটকানো যায়নি ইয়ামালকে। দুজনের বেশি মার্কার রাখারও অবশ্য সুযোগ নেই ইন্টার কোচ সিমোনে ইনজাগির। কারণ, সেই সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য আছেন রাফিনিয়া–ফেরমিন লোপেজসহ অন্যরা।
দারুণ ছন্দে থাকা রাফিনিয়া কখনো কখনো ইয়ামালের চেয়েও বিপজ্জনক। বিশেষ করে রুদ্ধশ্বাস মুহূর্তগুলোতে। বার্সার জন্য সুখবর হচ্ছে এ ম্যাচে বদলি হিসেবে মাঠে নামতে পারেন চোট কাটিয়ে ফেরা রবার্ট লেভানডফস্কিও। এই পোলিশ স্ট্রাইকারের ফেরা বার্সার গোল করার সম্ভাবনা নিশ্চিতভাবে বাড়িয়ে দেবে। পাশাপাশি তার উপস্থিতি ইয়ামাল কিংবা রাফিনিয়ার ওপর থেকে গোল করার চাপও অনেক কমিয়ে দেবে। নিজেদের খেলাটা আরও বেশি স্বাধীনতা নিয়ে খেলতে পারবেন এ দুজন। চলতি মৌসুমে এই তিনজন মিলে ১৫০ ম্যাচে করেছেন ৮৬ গোল।
আক্রমণের পাশাপাশি মাঝমাঠেও বার্সা বেশ শক্তিশালী। বিশেষ করে মাঝমাঠে পেদ্রি এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম সেরা। রক্ষণ থেকে খেলা তৈরিতে রীতিমতো অপরিহার্য হয়ে উঠেছেন এই স্প্যানিশ তরুণ। তবে ফ্লিকের মূল দুশ্চিন্তার নাম রক্ষণ। বিশেষ করে চোটের কারণে জুলস কুন্দের ছিটকে যাওয়া বার্সাকে বেশ ভোগাতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ ছন্দে ছিলেন এই রাইটব্যাক। ইয়ামালের সঙ্গে তার বোঝাপড়াও চমৎকার।
অন্যদিকে ইন্টারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে তাদের দুই সেন্টার ব্যাক ফ্রান্সিসকো অ্যকার্বি ও ইয়ান বিসসেকের মধ্যমাঠের খেলোয়াড়দের সঙ্গে পজিশন বদল করা। তাছাড়া দুই ফুলব্যাক ডিমার্কো ও ডামফ্রিস যেভাবে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে ঢুকে যান সেটা একটা মাথাব্যথার কারণ হবে ফ্লিকের।
তবে আগের লেগে চোটে পড়া স্ট্রাইকার লাউতারো মার্তিনেজের এই ম্যাচে প্রথম একাদশে না খেলার সম্ভাবনা বেশি। খেললেও চোট কাটিয়ে কতটুকু দিতে পারবেন সেটাই চিন্তার বিষয় ইনজাগির জন্য।
ঢাকা/নাভিদ/আমিনুল