Prothomalo:
2025-05-10@17:55:23 GMT

কনটেন্ট নির্মাণে এআই

Published: 10th, May 2025 GMT

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই যখন সারা বিশ্বে চাকরিজীবীদের জন্য একটি ভয়ের কারণ হয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখন এআই একটি বড় ধরনের সাহায্যকারী হিসেবে আধেয় নির্মাতা বা কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এআই দিয়ে আপনি যেমন একটি কনটেন্ট সাজিয়ে ফেলতে পারছেন কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই, ঠিক তেমনি কনটেন্টের স্ক্রিপ্ট কী হবে, কনটেন্টের আকর্ষণীয় পয়েন্টগুলো কী হবে, সেই সবকিছুতে আপনি চাইলে এআইয়ের সাহায্য নিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সুন্দর একটি কনটেন্ট বানিয়ে ফেলতে পারছেন।

ধরুন, আপনি একটি ছবি তুলেছেন, কিন্তু বুঝতে পারছেন না যে কী ক্যাপশন দিলে ভালো হবে। আপনি তখন চাইলে সেই ছবি চ্যাটজিপিটিতে দিতে পারেন এবং তাৎক্ষণিক আপনি সেই ছবির একটি সুন্দর ক্যাপশন পেয়ে যাবেন। সেই সঙ্গে পেয়ে যাবেন কিছু ট্রেন্ডিং হ্যাশট্যাগ, যা কিনা আপনার সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রিচ বাড়াতে সাহায্য করবে। আর যেহেতু এখন কনটেন্ট মনিটাইজেশনের মাধ্যমে ছবি থেকেও ইনকাম করা যাচ্ছে, তাই আপনি চাইলে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে আপনার ছবিতে আকর্ষণীয় ক্যাপশন ও ট্রেন্ডিং হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে যেমন আয়ের সুযোগ তৈরি করতে পারেন, ঠিক তেমনি আপনি চাইলে আপনার সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে আকর্ষণীয় ছবি ও লেখা বানিয়ে ফেলতে পারেন। সেগুলো আপনি ফেসবুক ও এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রকাশ করে আয় করতে পারবেন।

বর্তমান বিশ্বে আরও একটি নতুন এআই হচ্ছে লোরা ফ্লাক্স মডেল এআই। এই এআইয়ের মাধ্যমে আপনি চাইলে আপনার ১০ থেকে ২৪টি ছবি দিয়ে নিজের একটি এআই মডেল তৈরি করতে পারেন। সেই মডেল দিয়ে আপনি আপনাকে বিভিন্ন পোশাক কিংবা বিভিন্ন জায়গায় স্থাপন করে ছবি তৈরি করতে পারবেন শুধু লেখার মাধ্যমে। ছবিগুলো এতই নিখুঁত হয় যে অনেকেই ধরতেও পারে না যে এটি কি আসলেই এআই জেনারেটেড ছবি, নাকি আসল ছবি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আপনি কখনোই বের করতে পারবেন না যে কোনটা আসল ছবি বা কোনটা এআই দিয়ে তৈরি ছবি। আপনি চাইলে এই ওয়েবসাইটে গিয়ে আসল ছবি, নাকি এআই জেনারেটেড ছবি, সেটি বের করে নিতে পারবেন। বিশ্বব্যাপী কনটেন্ট ক্রিয়েটররা এখন আরও সহজেই শুধু এআইকে ব্যবহার করে কনটেন্ট মনিটাইজেশনের মাধ্যমে ছবি ও স্টোরি থেকে প্রতি মাসেই বেশ বড় আকারের ডলার আয় করে যাচ্ছেন।

আগে যেখানে অ্যানিমেশন ভিডিও বানানো বেশ সময় সাপেক্ষ ছিল, এখন কিন্তু তা বেশ সহজেই হয়ে যাচ্ছে এআই ব্যবহার করে। এআইয়ের মাধ্যমে আপনি লেখা থেকে অ্যানিমেশন তৈরি করতে পারবেন পিকলিউমেন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে, আপনি চাইলে বিনা মূল্যেই এই অ্যানিমেশনের ছবিগুলো বানিয়ে ফেলতে পারবেন। তারপর সেই ছবিগুলোকে আপনি চাইলে মিড জার্নি, ওয়েন২.

১–এর মতো এআই ভিডিও জেনারেটরের সাহায্যে সুন্দর অ্যানিমেশন ভিডিও বানিয়ে ফেলতে পারবেন কয়েক মিনিটের মধ্যেই। আর সেই ভিডিওতে আপনি চাইলে খুব সুন্দর কথা (ভয়েস) যোগ করতে পারবেন, সেটিও হবে এআইয়ের মাধ্যমে। এরপর প্রয়োজনীয় আবহ সংগীত আপনি কিন্তু বানিয়ে নিতে পারবেন অনেক ধরনের মিউজিক জেনারেটর এআইয়ের মাধ্যমে। যার মধ্যে অন্যতম সাউন্ড ভার্স, সুনো, উডিও এআই।

বলতে গেলে একজন ব্যক্তির পক্ষেই এখন অ্যানিমেটেড ছবি, ভিডিও, ভয়েস ও আবহ সংগীত বানিয়ে নিজে একটি প্রোডাকশন হাউস তৈরি করে ফেলা যাচ্ছে। তাই এআই যখন সবার জন্য বেশ চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিচ্ছিল, ঠিক তখন এআই কিন্তু একটি আশীর্বাদ হয়ে এসেছে কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য।

রবিন রাফান: কনটেন্ট ক্রিয়েটর

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কনট ন ট ক র র জন য স ন দর প রব ন আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

এআইকে সমস্যা সমাধানে কাজে লাগাতে হবে

বর্তমানে দেশ-বিদেশের কোটি কোটি মানুষ দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)–নির্ভর বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন। অন্য সব প্রযুক্তির তুলনায় এআই বেশ গতিশীল। তাই পুরো বিশ্ব এখন এআই বাস্তবতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানেও এআইকে কাজে লাগাতে হবে। আজ বৃহস্পতিবার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ এআই সামিটে এসব তথ্য জানানো হয়। দেশের বিভিন্ন খাতে এআই প্রযুক্তির ব্যবহার ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে এ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শুধু একটি প্রযুক্তি নয়, এটি সময়ের সবচেয়ে বড় রূপান্তরমূলক শক্তি। আজ আমরা দাঁড়িয়ে আছি এক বৈশ্বিক পরিবর্তনের সন্ধিক্ষণে, যেখানে সিদ্ধান্ত নিতে হবে—আমরা কি কেবল প্রযুক্তির অনুসারী হব, নাকি এর পথপ্রদর্শক।’

বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম এবং বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন শুধু প্রযুক্তির বিষয় নয়, এটি আমাদের জীবনের প্রতিটি খাতকে ছুঁয়ে যাচ্ছে। শিল্পকারখানা থেকে শুরু করে কৃষি, স্বাস্থ্যসেবা থেকে শিক্ষা, প্রশাসন থেকে দৈনন্দিন জীবন—সবখানেই এআই এনে দিচ্ছে দ্রুত সমাধান, নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও অগ্রগতির অশেষ সম্ভাবনা।’

প্যানেল আলোচনায় গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমান বলেন, এআই এখন অনেক শক্তিশালী। এখন এই প্রযুক্তি দিয়ে অনেক কাজ করা যাচ্ছে। ব্যক্তিগত কাজ হোক বা পেশাদার, সব কাজেই এআই উপস্থিত। এআই দিয়ে ভালো কাজ করতে হবে। নৈতিকতার বিষয়গুলোকে মাথায় রাখতে হবে। এআই যেন ভালো ও কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যায় সে বিষয়ে প্রযুক্তিবিদ, ব্যবহারকারী ও সরকারি-বেসরকারি সংস্থার সম্মিলিত ভূমিকা থাকতে হবে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, এখন সবখানেই প্রযুক্তির ছোঁয়া দেখা যাচ্ছে। স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে কৃষি, সব ক্ষেত্রেই এআইয়ের উপস্থিতি রয়েছে। প্রযুক্তি আসলে এমন একটা মাধ্যম, যা মানুষকে শক্তিশালী করে তোলে। এ জন্য বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে এআইকে ব্যবহার করতে হবে।

অন্যান্য প্যানেল আলোচনায় বক্তারা জাতীয় উন্নয়ন এবং আর্থিক সেবার পরিধি বাড়াতে এআইয়ের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। এ ছাড়া শিক্ষা খাতে এআইয়ের মাধ্যমে সহজলভ্য শিক্ষার সুযোগ তৈরিসহ উদ্ভূত নৈতিক চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে গোপনীয়তা ও ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়ে আলোচনা করা হয়।

সম্মেলন চলাকালে গত মার্চে অনুষ্ঠিত এআই হ্যাকাথনের সেরা ৩১টি দল নিজেদের তৈরি উদ্ভাবন প্রদর্শন করে। বিচারকেরা রায়ে এআই হ্যাকাথনে বিজয়ী হয়েছে ছয়টি দল। দলগুলো হলো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেশিন মাইন্ডসেট (উৎপাদন), মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) কিউআরএআরজি (স্বাস্থ্য), ফিনটেকে ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির রানটাইম টেররস (ফিনটেক), ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কোড ফারমার্স (কৃষি), বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) টিম—গ্লাইডার্স (সিটি ম্যানেজমেন্ট) ও রাজশাহী ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির (রুয়েট) বুরাক। বিজয়ী প্রতিটি দল পেয়েছে এক লাখ টাকা পুরস্কার।

ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ এআই সামিট আয়োজনে পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল আকিজ রিসোর্স ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পরীক্ষার প্রস্তুতিতে এআই ব্যবহারের ৬ কৌশল
  • এআইকে সমস্যা সমাধানে কাজে লাগাতে হবে