ভারতের গণমাধ্যমগুলো বিনোদন মাধ্যমে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ভারতীয় গণমাধ্যমে দায়িত্বশীল কোনো সাংবাদিকতা নেই। বাংলাদেশে ফ্যাসিস্টের পতনে ভারতের মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। এ জন্য তারা আমাদের গণমাধ্যমের সম্প্রচার বন্ধ করেছে। জবাবে আমরা তা করতে চাই না।

শনিবার যশোরের কেশবপুরের পাথরা পল্লী উন্নয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পুনর্মিলনীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রেস সচিব। তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের মন্ত্রী ও নেতারা সব চুরি করে বিদেশে নিয়ে গেছে। এখন চলছে ভঙ্গুর অর্থনীতি মেরামতের কাজ।

শফিকুল আলম আরও বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি মো.

আবদুল হামিদ ফ্যাসিস্ট ছিলেন। তার দেশত্যাগের ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে একটা বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র বাসসের বিশেষ প্রতিনিধি এস এম রাশিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম, পুলিশ সুপার রওনক জাহান, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আছাদুজ্জামান, কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন, যশোর প্রেস ক্লাবের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন প্রমুখ।

পুনর্মিলনীতে দূর-দূরান্ত থেকে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে তাদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান পরিণত হয় উৎসবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: যশ র ক শবপ র

এছাড়াও পড়ুন:

খালেদা জিয়ার অবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নতি নেই

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার তেমন উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়নি। কয়েক দফা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরও তাঁর মূল শারীরিক জটিলতাগুলো নিয়ন্ত্রণে আসেনি বলে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।

চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, খালেদা জিয়ার ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদ্‌যন্ত্র ও ফুসফুসের জটিলতা ওঠানামা করছে। এই অনিশ্চিত পরিস্থিতির কারণে তাঁকে কয়েক দিন ধরে পুরোপুরি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

চিকিৎসা ও বিদেশযাত্রা-সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে জড়িত একটি সূত্র গতকাল রোববার রাতে বলেছে, চিকিৎসকেরা খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে বিদেশ পাঠানোর সময় আরও দুই দিন পিছিয়েছেন। দীর্ঘ যাত্রার ঝুঁকি বিবেচনায় নেওয়া এই সিদ্ধান্ত এখন পুরোপুরি নির্ভর করছে আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় তাঁর শারীরিক অবস্থার পরিবর্তনের ওপর। সূত্রের মতে, গতকাল রাত পর্যন্ত প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী তাঁর অবস্থায় নতুন কোনো উন্নতি বা অবনতি—কোনোটিই লক্ষণীয় নয়; সবকিছু অনেকটা অপরিবর্তিত রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত শনিবার রাতে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা খালেদা জিয়ার সামগ্রিক অবস্থা পর্যালোচনার জন্য জরুরি বৈঠকে বসেন। বৈঠকের পর শনিবার ও রোববার তাঁর বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হয়। আজ সোমবার আবারও বোর্ডের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে সর্বশেষ পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে চিকিৎসা-পরিকল্পনায় নতুন কোনো পরিবর্তন আনা হবে কি না, তা নির্ধারণ করা হতে পারে।

চিকিৎসকদের একটি সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার অবস্থার প্রতিটি পরিবর্তন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। চিকিৎসকেরা তাঁর ডায়াবেটিসের ওঠানামা, কিডনির কার্যকারিতা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং হৃদ্‌যন্ত্র-সংক্রান্ত জটিলতার ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। পাশাপাশি ফুসফুসের পরিস্থিতিও নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান চিকিৎসা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। লন্ডন থেকে ঢাকায় আসার পর থেকে তিনি প্রতিদিন হাসপাতালে যাওয়া-আসার মধ্যে রয়েছেন।

চিকিৎসকেরা বলছেন, সামগ্রিকভাবে পরিস্থিতি স্থিতিশীল নয়; আবার খুব অবনতিও হয়নি। তবে নতুন কোনো জটিলতা দেখা না দিলেও মূল সমস্যাগুলো নিয়ন্ত্রণে না আসায় তাঁকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, তাঁর ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদ্‌যন্ত্র ও ফুসফুসের সমস্যা কিছু সময় নিয়ন্ত্রণে থাকলেও হঠাৎ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এ কারণে তাঁর সার্বিক অবস্থা স্থিতিশীল বলা যাচ্ছে না। সর্বশেষ পরীক্ষায় কিডনি এবং ফুসফুসের অবস্থার কিছুটা অগ্রগতি দেখা গেছে। তবে এসব উন্নতি সামগ্রিক ঝুঁকি কমাতে যথেষ্ট নয়; তিনি এখনো আশঙ্কামুক্ত নন বলেই চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।

এই অনিশ্চিত অবস্থার কারণে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর সম্ভাব্য তারিখ বারবার পরিবর্তিত হচ্ছে। শুরুতে বিএনপি জানিয়েছিল, খালেদা জিয়াকে শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) ভোরে লন্ডনে নেওয়া হবে। পরে শুক্রবার সকালে নতুন তারিখ দেওয়া হয় ৭ ডিসেম্বর। রাতে আবার জানানো হয়, সম্ভাব্য যাত্রার তারিখ পিছিয়ে ৯ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সেই তারিখও অনিশ্চিত রয়ে গেছে।

দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর সংকটাপন্ন শারীরিক অবস্থা নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ