নাটকে আমাকে প্রায়ই ‘মা’ ডাকতে হয়। তখন সঙ্গে সঙ্গে আমার মায়ের কথা মনে পড়ে। পৃথিবীর প্রতিটি মা-ই তো রত্নগর্ভা। যেকোনো একজন মাকে জিজ্ঞাসা করেন, আপনার সন্তান কী? তিনি বলবেন, সে তো আমার রত্ন। আন্তর্জাতিক মা দিবসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মা সম্পর্কে বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে এসব কথা বলেন বরেণ্য অভিনেতা আবুল হায়াত। অনুষ্ঠানে রত্নগর্ভা ৩৫ মাকে সম্মাননা দেয় আজাদ প্রোডাক্টস।

আজ রোববার ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘রত্নগর্ভা মা ২০২৩-২৪’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ২০০৩ সাল থেকে আজাদ প্রোডাক্টস এই সম্মাননা দিয়ে আসছে। অনুষ্ঠান শুরু হয় জেমসের বিখ্যাত ‘মা’ গানটি দিয়ে।

এ বছর সাধারণ বিভাগে ২৫ জন আর বিশেষ বিভাগে ১০ জন মা সম্মাননা পেয়েছেন। সাধারণ বিভাগে রত্নগর্ভা সম্মাননা পাওয়া মায়েরা হলেন মারতুজা নুসরাত, ফরিদা বেগম, রাশিদা বেগম, নাসিমা মান্নান চৌধুরী, বিবি মরিয়ম, রোকেয়া খানম, পিয়ারা বেগম, আফরোজা পারুল, রোকসানা আক্তার, হাসিনা আক্তার, বেগম সালেহা করিম, ফাতিমা নার্গিস, আনজুমান আরা বেগম, সালমা আলম, জোবেদা খানম, রাজিয়া বেগম, মোসাম্মৎ মাহমুদা বেগম, কিশোয়ার জাহান, ফাতেমা বেগম, সুরাইয়া চৌধুরী, রাবেয়া পারভীন, আদরিনী সরকার, হাছিনা আক্তার, মনোয়ারা বেগম ও হালিমা আক্তার।

বিশেষ বিভাগে সম্মাননা পেয়েছেন সাহানা সিরাজ, সাহানা আকতার চৌধুরী, মুসলিমা খানম, অলকা ঘোষ, স্মৃতি কণা বড়ুয়া, শামছুন্নাহার হোসেন, খাদিজা খন্দকার, ফরিদা বেগম, ফাতেমা আলম, সৈয়দা দিলরুবা খানম। ‘মাই ড্যাড ওয়ান্ডারফুল’ পুরস্কার পেয়েছেন কথাসাহিত্যিক আরেফিন বাদল।

এবারের রত্নগর্ভা মায়েদের একজন রোকেয়া খানম। হাতিয়া দ্বীপের এই নারী উচ্চমাধ্যমিকের পর আর পড়তে পারেননি। চাকরি করায় সেখানেও দিতে হতো যথেষ্ট সময়। তবে এত ব্যস্ততার মধ্যেও সন্তানের লেখাপড়ায় কোনো ছাড় দেননি এই মা। তাঁর তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে একজন একটি বেসরকারি প্রযুক্তি কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, একজন সরকারি একটি অধিদপ্তরের উপপরিচালক, একজন ব্যবসায়ী আর মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডি করছেন।

রোকেয়া খানম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওরা যখন ছোট ছিল, তখন থেকেই ওদের উচ্চশিক্ষিত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। হাতিয়ায় যতটুকু সম্ভব পড়িয়েছি। এরপর বাইরে পাঠিয়েছি। এখন ওরা প্রতিষ্ঠিত। ভালো লাগে যে আমরা সবাই মিলে ঢাকায় একসঙ্গে থাকি।’

মাকে নিয়ে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের উপপরিচালক শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা হাতিয়ার বাসিন্দা। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত মা যত্ন নিয়ে সবার দেখাশোনা করেছেন। এরপর যে যার মতো সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি। এই পুরো যাত্রাটাই মায়ের অবদানে।’

অনুষ্ঠানে পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ বলেন, ‘আমার স্ত্রী সাহানা সিরাজ আজ তাঁর সন্তানের জন্য রত্নগর্ভা মা পুরস্কার পাচ্ছেন, এটা আমার জন্য আনন্দের সংবাদ।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমান সময়ের এই অস্থির পৃথিবীতে খ্যাতি অর্জন, অর্থ উপার্জনের যে প্রতিযোগিতায় সন্তানদের ধাবিত করছি, তা কখনো সভ্যতার কল্যাণ আনতে পারে না। কতটা খ্যাতিমান সন্তান তৈরি করলাম, তার চেয়ে মানবিক, সামাজিক সচেতনতাবোধ ও ন্যায়পরায়ণ সন্তানকে আমি বেশি প্রাধান্য দিই।’

রত্নগর্ভা মা সম্মাননা পাওয়া মায়েদের একাংশ। রোববার ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী মিলনায়তনে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘আল্লাহু আকবার’ বলে হলের ছাদ থেকে লাফ দিলেন রাবি শিক্ষার্থী

‘আল্লাহু আকবার’ বলে হলের ছাদ থেকে লাফ দিয়েছেন সাদ আহমেদ নামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। 

মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাত ১১টা ২০ মিনিটে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের চার তলার উপর থেকে লাফ দেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে।

সাদ আহমেদের বাড়ি সিরাজগঞ্জ। ছাদ থেকে লাফ দেওয়ার আগে ফেসবুকে তিনি কয়েকটি পোস্ট করেন। সর্বশেষ ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘ভালোবাসি লিসা'।

লিসাকে উদ্দেশ্য করে তিনি লেখেন, “লিসা তুমি জানতা তোমাকে আমি কত্তটা ভালোবাসি, তবুও কেন এমন করলে? সব জায়গায় সেইম ইফোর্ট সেইম ডায়ালগ কীভাবে পারো লিসা? মানুষ এতটা সাইকো কীভাবে হয়? তোমাকে তো বলেই ছিলাম, আমার সাথে চিট করলে কিন্তু আমার বন্ধু ফিরোজের মতো আমাকেও মরা ছাড়া উপায় থাকবে না। এত্ত করে বুঝাইলাম তাও বুঝলে না।”

আরেকটি পোস্টে তিনি লেখেন, “সরি আম্মু পারলে মাফ করে দিও। তুমি আমার আম্মু ছিলা, তুমি আমার আব্বু ছিলা। আর আমার বাপ একটা জানোয়ার।” 

এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “আমি মাত্রই ছাদে উঠেছিলাম, তিন তলায় ওঠার পরে একজন জোরে 'আল্লাহু আকবার' বলে এবং পরক্ষণেই হঠাৎ জোরে শব্দ শুনতে পাই। তারপর ওখান থেকে দৌঁড়ে এসে দেখি একজন মাটিতে পড়ে আছে। পরে অ্যাম্বুলেন্স এসে তাকে রামেকে নিয়ে যায়।

তার এক বন্ধু বলেন, সাদ খুব সহজ সরল। সে হাফেজ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। পারিবারিক কিছু সমস্যাও ছিলো। তবে এভাবে সে লাফ দেবে এটা ভাবতেই পারিনি।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, “আমি বাইরে ছিলাম। ঘটনাটি শোনার পর হলে গিয়ে শুনতে পেলাম তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সে ফার্স্ট ব্লকের চার তলা থেকে লাফ দিয়েছিল। সম্ভবত তার একটা পা ভেঙ্গে গেছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, “আমরা ঘটনাটি শোনামাত্রই সেখানে অ্যাম্বুলেন্স পাঠাইছি। তাকে মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা বিস্তারিত কিছু জানতে পারিনি।”

ঢাকা/ফাহিম/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসরায়েল-ভারত যেভাবে পাকিস্তানের পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস করতে চেয়েছিল
  • কেবল ব্যক্তির বদল নয়, পুলিশের সংস্কারও প্রয়োজন: সামান্তা শারমিন
  • যে পাঁচ ক্লাব হতে পারে রদ্রিগোর নতুন ঠিকানা
  • যে পাঁচ ক্লাব হতে পারে রদ্রিগোর নতুন ঠিকান 
  • জোহরান মামদানির উত্থান: ফিলিস্তিনপন্থি রাজনীতির সুযোগ বাড়ার আভাস
  • অভিনয় নাকি নির্মাণ, কোন পথে হাঁটছেন পলাশ
  • নেতানিয়াহু ‘একজন যোদ্ধা’, তাকে ক্ষমা করে দেওয়া উচিত: ট্রাম্প
  • ‘তোমাকে কতটা ভালোবাসি’ লিখে হলের ছাদ থেকে ছাত্রের লাফ
  • নেতানিয়াহুর মতো ‘মহান নায়ককে’ ক্ষমা করে দেওয়া উচিত: ট্রাম্প
  • ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হলের ছাদ থেকে লাফ দিলেন রাবি শিক্ষার্থী