দিনাজপুরের বিরল উপজেলার কালিয়াগঞ্জ শালবনে মহাবিপন্ন খুদি খেজুরগাছের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে কয়েকটি গাছের গোড়ায় ফলও ধরেছে। খেজুরগাছ ও ফল দেখতে ভিড় করছেন স্থানীয় লোকজন।

আজ রোববার বিকেলে খেজুরগাছগুলো পরিদর্শন করেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা। বিপন্নপ্রায় উদ্ভিদটিকে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শালবনের ধর্মপুর বিটের কর্মকর্তা মহসীন আলী।

আজ বিকেলে উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের কৈকুড়ি পাটাবন এলাকায় খেজুরগাছ পরিদর্শনে যান বাংলাদেশ ন্যাশনাল হাইবেরিয়ামের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুহাম্মদ সাইদুর রহমান, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন সরকার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গাজী মোশারফ হোসেন, সদর উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মান্নান হোসেন প্রমুখ।

দীর্ঘদিন ধরে শালবনে খুদি খেজুরগাছের সন্ধান নিয়ে কাজ করছেন অধ্যাপক গাজী মোশারফ হোসেন। তিনি জানান, খুদি খেজুরগাছের বৈজ্ঞানিক নাম ফনিক্স অ্যাকাউলিস। আগে ঢাকা ও ময়মনসিংহ এলাকায় সন্ধান মিললেও দিনাজপুরে এবার প্রথম। এটি প্রায় কাণ্ডবিহীন বামনাকৃতির গাছ। পাতা সরু ও ধারালো। গাছের গোড়ায় ফল ধরে। আকারে দেশি জাতের খেজুরের মতো চার থেকে পাঁচ সেন্টিমিটার আকৃতির হয়। ফলটি কাঁচা অবস্থায় লাল আকার ধারণ করে; সম্পূর্ণ পাকলে কালো জামের রং ধারণ করে। খেতেও অনেক মিষ্টি। সাধারণত বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে পাকে।

অধ্যাপক মোশারফ হোসেন বলেন, ২০১৩ সালে নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গবেষণাকাজে তিনি বিরলের শালবনে আসেন। তখন খুদি খেজুরগাছ দেখা পান। ২০১৯-২০ অর্থবছরে বন বিভাগের সুফল প্রকল্পের অর্থায়নে বাংলাদেশ ন্যাশনাল হারবেরিয়াম প্রাকৃতিকভাবে জন্মায় এমন এক হাজার উদ্ভিদ নিয়ে মূল্যায়নের উদ্যোগ নেয়। কাজের দায়িত্ব পায় প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক জোট আইইউসিএন। গত বছর আইইউসিএন দুটি গ্রন্থও প্রকাশ করে। যার মধ্যে পাঁচটি উদ্ভিদ মহাবিপন্ন হিসেবে মূল্যায়িত হয়। তারই একটি খুদি খেজুর বা বন খেজুর। সম্প্রতি বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় উদ্ভিদগুলো সংরক্ষণে কাজ শুরু করেছে।

দিনাজপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বিরলের ২১টি মৌজায় ২ হাজার ৮৩৬ একর শালবনে শাল, সেগুন, কড়ইসহ শতাধিক প্রজাতির গাছ আছে। এর মধ্যে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকা কিছু খুদি খেজুরগাছের সন্ধান মিলেছে। কালিয়াগঞ্জ শালবনে ১৫০ থেকে ২০০টি গাছের সন্ধান পাওয়া গেছে। ২০ থেকে ৩০টিতে ফলও ধরেছে। যেহেতু এটি মহাবিপন্ন উদ্ভিদ, তাই গাছগুলোর অবস্থান নিশ্চিত করে সেগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: খ জ রগ ছ র কর মকর ত শ লবন

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে একদিনে রেকর্ড ২৩ জন আক্রান্ত

চট্টগ্রামে একদিনেই ডেঙ্গুতে রেকর্ড ২৩ জন আক্রান্ত হয়েছে, যা চলতি বছরের মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত। আজ শনিবার চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ২৩ জনের শরীরে ডেঙ্গুর অস্তিত্ব শনাক্ত হয়েছে। এটি চলতি মৌসুমে একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ১৩ জন পুরুষ ও ১০ জন নারী। এ নিয়ে জুলাই মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৪১ জনে। এ বছর মোট আক্রান্ত হয়েছে ৫৮৬ জন, মৃত্যু হয়েছে দুইজনের। বর্তমানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ৩৮ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। 

সিভিল সার্জন আরও বলেন, এখন যেহেতু বর্ষা মৌসুম, তাই এই সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের ঝুঁকি বেশি। যে কারণে অবশ্যই মশারি টাঙিয়ে ঘুমাতে হবে। বাসা-বাড়ির চারপাশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কোথাও যাতে পানি জমে না থাকে সেদিকেও সতর্ক থাকতে হবে। ডেঙ্গু প্রকোপের এই সময়ে শারীরিক কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা দিলেই অবশ্যই চিকিৎসক দেখাতে হবে। কোনো অবস্থাতেই অবহেলা করা যাবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ