বাঁচতে হলে পাকিস্তানকে সন্ত্রাস নির্মূল করতে হবে: মোদি
Published: 12th, May 2025 GMT
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের ওপর নৃশংস হামলার পর চার দিনের যুদ্ধ শেষে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আবার কঠোর অবস্থান জানিয়ে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন দেশটি র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
সোমবার (১২ মে) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছেন, “ভারত আর সন্ত্রাসবাদীদের চোখরাঙানি সহ্য করবে না।”
একই সঙ্গে তিনি পাকিস্তানকে সতর্ক করে বলেন, “বাঁচতে হলে সন্ত্রাসের পরিকাঠামো নির্মূল করতে হবে।”
আরো পড়ুন:
নূর খান ঘাঁটিতে ভারতীয় হামলা মার্কিন হস্তক্ষেপের কারণ: এনওয়াইটি
পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করেনি: আইএসপিআর প্রধান
“ভারত এখন আর সন্ত্রাসবাদীদের চোখরাঙানি সহ্য করবে না। নিরপরাধ নাগরিকদের রক্তপাতের জবাব কঠোরভাবে দেওয়া হবে। যারা ভারতের নিরাপত্তা ও নাগরিকদের শান্তি বিঘ্নিত করতে চাইছে, তারা কড়া জবাব পাবে,” বলেন তিনি।
মোদি বলেন, “ভারতের সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পূর্ণ স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করছে এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য যা প্রয়োজন, তাই করা হবে।”
পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি সাফ বলেছেন, “পাকিস্তান যদি বাঁচতে চায়, তাহলে তাদের নিজেদের মাটিতে গজিয়ে ওঠা সন্ত্রাসের পরিকাঠামো ধ্বংস করতে হবে। পাকিস্তানের উচিত, নিজেদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, না হলে প্রতিক্রিয়া অনিবার্য।”
“সন্ত্রাসবাদ ও শান্তি একসঙ্গে চলতে পারে না। পাকিস্তান এক দিকে শান্তির বার্তা দিচ্ছে, অন্যদিকে সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয় দিচ্ছে– এই দ্বিচারিতা আর চলবে না।”
কাশ্মীর নিয়ে ভারতের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে মোদি বলেন, “কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, আছে এবং থাকবে। কোনো তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতার কোনো প্রয়োজন নেই। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সব সমস্যা দ্বিপক্ষীয়ভাবেই সমাধান হওয়া উচিত।”
তিনি বলেন, “এবার পাকিস্তানের সঙ্গে কথা হলে সন্ত্রাসবাদ নিয়েই কথা হবে। পাকিস্তানের সঙ্গে কথা হলে এবার পাক-অধিকৃত কাশ্মীর নিয়েই কথা হবে। আজ বুদ্ধপূর্ণিমা, শান্তির পথও যুদ্ধ দিয়ে হয়।”
তিনি আন্তর্জাতিক মহলকে ভারতীয় অবস্থান স্পষ্ট করে জানানোর জন্য তার দেশের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা আরো সক্রিয় করার নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদি জনগণের প্রতি শান্তি বজায় রাখার নির্দেশনা দিয়ে বলেন, “আমি দেশের নাগরিকদের ধৈর্য রাখার অনুরোধ করছি। আমাদের সেনাবাহিনী ও সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে। দেশ একসাথে থাকলে, কেউ আমাদের বিভক্ত করতে পারবে না।”
বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার বিষয়ে মোদি বলেন, “আমাদের স্কুল-কলেজ, সাধারণ নাগরিকের বাড়িঘর, মন্দিরকে নিশানা করেছে পাকিস্তান। এখানেও তারা ব্যর্থ হয়েছে। বিশ্ব দেখল কীভাবে পাকিস্তানের ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের কাছে ধুলিসাৎ হয়েছে; আকাশেই বিনষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
“তিন দিনে পাকিস্তানকে যা করা হয়েছে, যা তারা ভাবতেই পারেনি। এখন তারা বাঁচার রাস্তা খুঁজছে। দেশে দেশে ঘুরছে। খারাপভাবে হেরে যাওয়ার পরে ১০ মে পাকিস্তানি সেনা আমাদের ডিজিএমওর দ্বারস্থ হয়। তার আগে আমরা পাকিস্তানের মাটিতে থাকা সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছি।”
তিনি বিভ্রান্তিমূলক গুজবে কান না দেওয়ার জন্য এবং গঠনমূলক মনোভাব নিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করার দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের প্রশংসা করেন মোদি। তিনি বলেন, “জাতীয় নিরাপত্তা কোনো রাজনৈতিক বিভাজনের বিষয় নয়।”
“দেশ যখন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, তখন দলমত নির্বিশেষে সবাই একজোট– এটাই ভারতের শক্তি।”
এই ভাষণের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী মোদি একটি শক্ত অবস্থান নিয়েছেন, যা আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের বার্তা পৌঁছে দিতে চায় যে, ভারত শান্তি চায়, কিন্তু সন্ত্রাসবাদের কাছে মাথা নোয়াবে না।
ঢাকা/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবস থ ন আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
খাল রক্ষায় এলাকাবাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার
পরিবেশের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে খাল রক্ষায় এলাকাবাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেছেন, আর কিছু পারি না পারি, আসুন খালগুলো গভীর করে দেই। ড্রেনগুলো পরিষ্কার করি। আশাকরি তাহলে জলাবদ্ধতা এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় কম হবে।
সোমবার সকালে শুভাঢ্যা খাল খননকাজের প্রাক্কালে সরেজমিনে দেখার জন্য দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কালিগঞ্জ এলাকা ও শ্মশানঘাট এলাকা যান পরিবেশ উপদেষ্টা। সেখানে তিনি এসব কথা বলেন।
জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি সব খাল বিল ভরাট করে বাড়িঘর বানিয়ে ফেলবেন। ড্রেন পরিষ্কার করবেন না, তাহলে তো জলাবদ্ধতা হবেই। আগামী অর্থবছরের মধ্যেই একনেকে পাস হওয়া ঐতিহ্যবাহী শুভাঢ্যা খাল খননকাজ সম্পন্ন হবে। কাজ সম্পাদন করবে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। প্রায় ৩১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বুড়িগঙ্গা থেকে ধলেশ্বরী পর্যন্ত আনুমানিক ১৩ কিলোমিটার খাল খনন করবে সরকার। পরিবেশের ভারসাম্যর জন্যে খাল রক্ষায় এলাকাবাসীকেও এগিয়ে আসতে হবে। বিভিন্ন নির্মাণ বর্জ্য খালে বালু, ইট, সিমেন্ট পাথর যত্রতত্র না ফেলার জন্য এলাকাবাসীকে অনুরোধ করেন। খাল খনন করা হলে এই এলাকার মানুষ খালের সুফল ফিরে পাবেন।
তিনি আরও বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই শুভাঢ্যা খালের পানি প্রবাহের মুখগুলো ময়লা আবর্জনা আর দখলের কারণে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে।
সৈয়দ রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, জনগণের টাকায় এই খাল খনন করা হবে। যাতে জনগণের অর্থ অপচয় না হয় এবং অর্থ যেন সাশ্রয় হয় সেই বিষয়ে সরকার দেখভাল করার জন্যই এই পরিদর্শনে আসা হয়েছে। এই খালের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গার্মেন্টস জোটসহ অন্যান্য সমস্ত ময়লা-আবর্জনা খালে না ফেলার জন্য এলাকাবাসীকে সজাগ থেকে কাজ করার জন্য অনুরোধ করেছেন। আগামী বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা দূর করণের জন্য সিটি কর্পোরেশনগুলোতে ড্রেনেজ ব্যবস্থার কার্যক্রম শুরু হয়েছে । যাতে করে আগামী বর্ষা মৌসুমে সিটি কর্পোরেশন গুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না হয়। এ ব্যাপারে কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান পরিবেশ রক্ষায় খাল খননের পর দুই পাশে সবুজায়নের বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, খালের দুই পাশে প্রাকৃতিক নিয়মে পরিবেশ রক্ষায় বনায়ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হবে। ঢাকা জেলা প্রশাসনের কাছে খালের দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়ে আলোচনা করেছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপদেষ্টার একান্ত সচিব আবু নঈম, তথ্য কর্মকর্তা দীপঙ্কর বর, সহকারী একান্ত সচিব আশিকুর রহমান সমীসহ ঢাকা জেলা ও কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা বৃন্দ।