ফিলিপাইনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের ভোট সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয় সময় সকাল ৫টা থেকে শুরু হয়ে ভোট চলে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। ভোট কাউন্টিং মেশিনের কারিগরি জটিলতার কারণে কোথাও কোথাও বিলম্ব ঘটেছে।

দেশটিতে সাধারণত মধ্যবর্তী নির্বাচন উত্তাপ না ছড়ালেও গতকালের ভোটে ছায়াযুদ্ধ চলেছে সহযোগী থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠা প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র ও ভাইস প্রেসিডেন্ট সারা দুতের্তের মধ্যে।

এদিন ১৮ হাজারের বেশি পদে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়, যাতে তারা সরাসরি প্রার্থী না হলেও নিজেদের মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে জোরেশোরে প্রচার চালিয়েছেন। তাদের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা এমন এক প্রতিযোগিতায় রূপান্তরিত হয়েছে, যা ১১ কোটি মানুষের দেশটিতে ভবিষ্যৎ ক্ষমতার গতি-প্রকৃতিকে প্রভাবিত করতে পারে। বিবিসি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ ল প ইন

এছাড়াও পড়ুন:

যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে সম্মত ভারত-পাকিস্তান

পাকিস্তান ও ভারতের ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা সোমবার (১২ মে) হটলাইনের মাধ্যমে তাদের প্রথম দফা আলোচনা করেছেন এবং পাঁচ দিনের যুদ্ধের পর শনিবার সম্মত যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে সম্মত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৩ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

প্রতিবেদনে বলা হয়,  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সম্পাদিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে, গতকাল সোমবার পাকিস্তানের সামরিক অভিযানের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল কাশিফ আবদুল্লাহ এবং তার ভারতীয় প্রতিপক্ষ লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই একে অপরের সঙ্গে কথা বলেছেন।

আরো পড়ুন:

পুনরায় শুরু হচ্ছে আইপিএল, নতুন সূচি ঘোষণা

ভারত যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করছে, পাকিস্তান নয়: নিরাপত্তা সূত্র

ভারতীয় সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “উভয় পক্ষই যেন একটিও গুলি না চালায় বা একে অপরের বিরুদ্ধে কোনো আক্রমণাত্মক ও শত্রুতামূলক পদক্ষেপ না নেয়, সেই প্রতিশ্রুতি অব্যাহত রাখার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, “সীমান্ত এবং সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে সেনা হ্রাস নিশ্চিত করার জন্য উভয় পক্ষই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে একমত হয়েছে।”

অন্যদিকে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আলোচনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কিন্তু কোনো বিবরণ দেয়নি। পাকিস্তানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উভয় পক্ষের দ্বিতীয় দফা আলোচনা হবে।

দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে মার্কিন মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি অটুট রয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও যুদ্ধবিরতির বিস্তারিত ঘোষণা করার সময় বলেছিলেন, উভয় পক্ষই একটি নিরপেক্ষ স্থানে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শুরু করবে।

গতকাল সোমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে বলেছেন আলোচনায় ভারত ‘সন্ত্রাসবাদ’ এবং ‘পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণাধীন কাশ্মীরের অংশ- আজাদ জম্মু কাশ্মীর’- এর উপর জোর দেবে।

এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, মোদি তার বক্তব্যের মাধ্যম বুঝিয়েছেন যে, ভারত আলোচনায় রাজি আছে। অন্যদিকে, সন্ত্রাসবাদ ও আজাদ জম্মু-কাশ্মীরের ওপর মোদির মনোযোগ ভারতে তার ভোটব্যাংক রক্ষা করার প্রচেষ্টা।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, ভারতের সঙ্গে যখনই আলোচনা হবে, তখন কাশ্মীর এবং সিন্ধু পানিচুক্তি ইস্যুটি পাকিস্তানের অগ্রাধিকার তালিকায় থাকবে।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সর্বশেষ উত্তেজনা শুরু হয় ২২ এপ্রিল, যখন ভারতের অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। কোনো প্রমাণ না দিয়েই ভারত তাৎক্ষণিকভাবে এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে।

ভারত ২৩ এপ্রিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পদক্ষপ নেয়। ৬৫ বছরের পুরোনো সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করে, পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে, ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দেয় এবং নয়াদিল্লিতে পাকিস্তান হাই কমিশনের সামরিক কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে।

পাকিস্তান ভারতের অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করে। একই সঙ্গে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটিও ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। যার মধ্যে রয়েছে ভারতের সঙ্গে যেকোনো বাণিজ্য বন্ধ করা, ভারতীয় বিমানের জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ করা এবং অন্যান্য।

৭ মে রাতে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়, যখন পাঞ্জাব এবং আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরের ছয়টি শহরে ভারত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। হামলায় বেশ কয়েকটি মসজিদ ধ্বংস হয়ে যায়। এছাড়া নারী, শিশু এবং বয়স্কসহ কয়েক ডজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন।

পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে ভারতের অন্তত পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করে, যার তিনটি রাফায়েল যুদ্ধবিমান রয়েছে- যা ভারতীয় বিমান বাহিনীর গর্ব। পরের দুই দিন ধরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ড্রোন হামলা ও গোলাবর্ষণ চলে। 

শনিবার ভোরে আরো তীব্র উত্তেজনার মধ্যে, ভারত পাকিস্তানের কয়েকটি বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। কয়েক ঘণ্টা পরে পাকিস্তান অপারেশন বুনিয়ানুম মারসুস শুরু করে, এতে ভারতের ২৬টি সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়।

শনিবার সন্ধ্যায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন, মার্কিন কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পর পাকিস্তান এবং ভারত উভয়ই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। কয়েক মিনিট পরে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার যুদ্ধবিরতির তথ্য নিশ্চিত করেন এবং তারপরে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রিও বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গতকাল সোমবার ট্রাম্প বলেন,  “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ দুই পারমাণবিক-সশস্ত্র প্রতিবেশীর মধ্যে ‘সম্ভাব্য পারমাণবিক যুদ্ধ’ রোধ করেছে। তিনি আরো যোগ করেন, যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ায় উভয় দেশের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধি করবে যুক্তরাষ্ট্র।

ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা একটি পারমাণবিক সংঘাত বন্ধ করে দিয়েছি। আমার মনে হয়, এটি একটি খারাপ পারমাণবিক যুদ্ধ হতে পারত, লাখ লাখ মানুষ মারা যেতে পারত। ভারত ও পাকিস্তানের শক্তিশালী ও অটল নেতৃত্বের জন্য আমি খুবই গর্বিত।”

ট্রাম্প আরো বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বন্ধের হুমকি তাদের যুদ্ধ বন্ধ করার একটি বড় কারণ।” 

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ